বেশি গরম মশলা এবং শুকনো লাল লঙ্কা দেওয়া রান্না খেলে পেটে আলসার বা ঘা হয়৷ বাড়ির গুরুজনেদের মুখে প্রায়ই নিশ্চই এই কথা শুনে থাকবেন৷ কিন্তু, সত্যিই কি হয় তাই? কী বলেন চিকিৎসকেরা? জেনে নিন পেটের আলসারের প্রধান কারণ কী?এবিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানাচ্ছেন, গুরুগ্রামের সি কে ভিডলা হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোলজিস্ট ডাঃ অনুকল্প প্রকাশ৷চিকিৎসক জানাচ্ছেন, মশলাযুক্ত খাবারে থাকা একাধিক যৌগ পেটের জন্য অত্যন্ত উপকারী৷ এখন প্রশ্ন হল লাল মরিচ বা মশলাযুক্ত খাবার খেলে পেটে আলসার হয় কি না। এর উত্তর হল, না। হয় না৷ ডাঃ অনুকল্প জানাচ্ছেন, শুকনো লঙ্কা বা মশলাদার খাবার আগে থাকেই থাকা পেটের আলসারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে৷ তবে, শুধুনাত্র এই খাবারগুলি খেয়ে কারও পেটে আলসার হতে পারে না। তাহলে পেটের আলসারের মূল কারণ কী?একটি গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে যে মশলাযুক্ত খাবার বা শুকনো লঙ্কায় ক্যাপসাইসিন নামক একটি যৌগ থাকে যা পাকস্থলীর ভিতরের আস্তরণের জন্য খুবই উপকারী। গবেষণা অনুসারে, ক্যাপসাইসিন হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে। এতে পেট সুস্থ থাকে এবং পেটের আলসারের ঝুঁকি আরও কমে।ক্যাপসাইসিন অন্ত্রের প্রাচীরে শ্লেষ্মা উৎপাদন ক্ষমতাও বাড়ায়। এতে আলসারের ঝুঁকি কমে। ডাঃ অনুকল্প জানাচ্ছেন, মশলাদার খাবার বা লাল শুকনো লঙ্কা নয়, সেদিক থেকে একটি পরিচিত পুষ্টিকর খাবার বা পানীয়ও আমাদের পাকস্থলীর আলসারের কারণ হতে পারে৷ তা হল দুধ। অনেকেই, ল্যাকটোজ টলারেন্ট হয়৷ যাঁদের শরীরে ল্যাকটোজ হজমকারী উৎসেচক তৈরি হয় না, তাদের পেটে দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য পাকস্থলীর আলসারের কারণ হতে পারে।হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া প্রধানত পাকস্থলীর আলসারের জন্য দায়ী যা অন্ত্রের আস্তরণে ক্ষত সৃষ্টি করতে শুরু করে। এ ছাড়া, যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিনের মতো নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, তাঁদেরও পেটে আলসার হতে পারে।এছাড়া, শুধু ওষুধও নয় এবং ব্যাকটেরিয়া উভয় অবস্থাতেই ঘটে এবং এটিই পেটের আলসারের প্রধান কারণ। তাই যারা এই ওষুধগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার করেন এবং তাদের পেটের ব্যথা বেড়ে গেলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। কিছু সংক্রমণ, কেমোথেরাপি এবং দুর্ঘটনার কারণেও পেটে আলসার হতে পারে।
