Ind vs Eng: ব্রিটিশ সিংহের কাছে অসহায় আত্মসমপর্ণ, চেন্নাইতে হার দিয়ে শুরু সিরিজ

#চেন্নাই:  হারল ভারত৷ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের পঞ্চমদিনে ২২৭ রানে হার৷  দলের হার ঠেকাতে অধিনায়ক বিরাট কোহলি চেষ্টা করেছিলেন, সঙ্গী অশ্বিন৷ এই অবস্থায় লাঞ্চের পর দায়িত্বশীল অর্ধশতরান করে ফেলেলন ক্যাপ্টেন কোহলি৷ এদিন ৭৪ বলে ৫০ রান করেন তিনি৷ রয়েছে ৬ টি চার৷ কিন্তু অশ্বিন আউট হতেই  দলের ১৭৯ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন কোহলিও৷ ১০৪ বলে ৭২ রানে আউট হয়ে যান৷ এরপরেই পরের পর আউট৷ পুরো দল দ্বিতীয় ইনিংসে প্যাকআপ হল ১৯২ রানে৷

চতুর্থ দিনে ভারত শেষ করেছিল ১ উইকেটে ৩৯ রানে৷ জয়ের জন্য দরকার ছিল শেষদিনে বিশাল ৩৮১ রান৷ হাতে উইকেট ছিল ৯ টি৷ রোহিত ছাড়া পুরো দল তখনও ছিল লড়াই করার জন্য৷ কিন্তু মঙ্গলবারে শুরুটা আদৌ ভারতের জন্য মঙ্গলদায়ক হল না৷

প্রথমেই ১৫ রানে প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরেন উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার বড় ভরসা চেতেশ্বর পূজারা৷ এরপর শুভমান গিল টেস্টে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করে ফেললেও ৮৩ বলে ৫০ রান করে ফিরে যান৷ তিনি অ্যান্ডারসনের শিকার৷ এদিন বুড়ো হাড়ে ইংলিশ এই পেসার যেন আগুন ঝরাচ্ছিলেন৷

এরপর শুধু আয়ারাম আর গয়ারাম৷ অধিনায়ক বিরাট কোহলি একদিক ধরে থাকলেও প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অজিঙ্ক রাহানে, ঋষভ পন্থ, ওয়াশিংটন সুন্দর৷ তাঁদের স্কোর যথাক্রমে ০, ১১.০৷

বল হাতে দুরন্ত ইংলিশ বোলাররা৷ প্রথম ইনিংসে বেস নিয়েছিলেন ৪ উইকেট ও  দ্বিতীয় ইনিংসে  জ্যাক লিচ নিলেন ৪ উইকেট৷

এর আগে ভারত বনাম ইংল্যান্ড চতুর্থ দিনের সকালটা শুরু হয়েছিল তরুণ ওয়াশিংটন সুন্দরের দুর্দান্ত ব্যাটিং দিয়ে। পার্টনারের অভাবে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম শতরান পাওয়া হয়নি সুন্দরের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৭৮ রান যোগ করতে পেরেছিল ইংল্যান্ড। ভারতের সামনে টার্গেট ছিল ৪২০। ব্যাট হাতে সুন্দর সুন্দর ইনিংস খেলার পর ঘরের মাঠে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়ার কাজটা করলেন
রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দুই তামিল ক্রিকেটারের লড়াইয়ে বড় টার্গেট হলেও শেষদিন পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকবে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট (৪০) এবং কিছুটা পোপ (২৮), বেস (২৫) ছাড়া কেউ রান পাননি।

সুযোগ থাকলেও অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতকে ফলো অন করানোর সাহস দেখাল না ইংরেজরা। চতুর্থ ইনিংসে পিচ ভাঙলে, বল ঘুরবে। তাই অশ্বিন এবং নাদিমকে চতুর্থ ইনিংসে এড়িয়ে যাওয়া লক্ষ্য ছিল ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু সেই লক্ষ্যে আংশিক সফল তাঁরা। অশ্বিন ছয় উইকেট তুলে নিলেন। তাঁর ঘূর্ণির ঘেরাটোপে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা চাপে পড়লেন। বার্নস, সিবলি, স্টোকস, আর্চার, বেস এবং অ্যান্ডারসনকে আউট করলেন বুদ্ধি করে। ফ্লাইট এবং লুপ দিয়ে বোকা বানালেন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের। বিদেশের পাশাপাশি উপমহাদেশের উইকেটে অশ্বিন এখনও একটা ফ্যাক্টর সেটা প্রমাণ করলেন।

নাদিম পেলেন দুটি উইকেট। একটি করে পেলেন ইশান্ত, বুমরাহ। এদিন টেস্টে তিনশো উইকেট পেলেন ইশান্ত। কপিল দেব এবং জাহির খানের পর তিনি তৃতীয় ভারতীয় পেসার যিনি এই কীর্তি স্থাপন করলেন। ভারতীয়দের মধ্যে সব মিলিয়ে ষষ্ঠ স্থানে তিনি। ব্যাট করতে নেমে ভারত রোহিত শর্মার উইকেট হারায়। বারো রান করার পথে একটি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি মারলেন রোহিত। দেখে মনে হচ্ছিল প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা ঢেকে দিতে মরিয়া তিনি। কিন্তু আউট হয়ে ফিরলেন বাঁহাতি স্পিনার লিচের বলে। বলটা মিডল স্টাম্প লাইনে পিচ করে অফ স্টাম্প নাড়িয়ে দিল। এককথায় স্বপ্নের ডেলিভারি।

তবে কেভিন পিটারসেন থেকে শুরু করে সুনীল গাভাসকার সমালোচনা করলেন ইংল্যান্ডের গেমপ্ল্যানের। বিশেষ করে এদিন আরও তিরিশ থেকে চল্লিশ মিনিট আগে ডিক্লেয়ার করা উচিত ছিল মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দিনের শেষে উইকেটে থাকা গিল এবং পূজারাকে চাপে ফেলার জন্য লেগ স্লিপ এবং ফরওয়ার্ড শর্ট লেগ লাগিয়েছিলেন রুট। কিন্তু দু’জনেই দেখে খেলে দিলেন বাকি সময়টা।

পঞ্চম দিন সকালে প্রথম এক ঘন্টা ভারতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম সেশনে একটির বেশি উইকেট না হারালে ভারতের সামনে জেতার সম্ভাবনা থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিল ভারত। শেষপর্যন্ত সফল হয়েছিল। তাই ঘরের মাঠে শেষদিন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ড্র নয়,জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামবে টিম ইন্ডিয়া সন্দেহ নেই। দুটো ইনিংসে ব্যর্থ রোহিত শর্মা। প্রথম ইনিংসে বিরাট কোহলি ও প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছিলেন। চেন্নাই টেস্ট জিততে হলে সামনে থেকে ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিতে হবে বিরাটকে।