স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ঢাক বাজিয়ে বিক্ষোভ৷

Junior doctors movement ‘বেজে উঠল ঢাক, শুরু উলুধ্বনি!’ রাস্তাতেই কাটল দুই রাত, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অনড় চিকিৎসকরা

কলকাতা: লালবাজারের সামেনর রাস্তায় প্রায় বাইশ ঘণ্টা অবস্থানে বসেছিলেন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামা জুনিয়র চিকিৎসকরা৷ স্বাস্থ্য ভবনের সামনে তাঁদের ধর্না অবস্থান বুধবার রাতেই তিরিশ ঘণ্টা পার করে ফেলেছে৷ বরং যত সময় যাচ্ছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই ধর্না অবস্থানে যোগ দিচ্ছেন অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত বহু বিশিষ্ট জন এবং সাধারণ মানুষ৷

সবমিলিয়ে মঙ্গলবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া জুনিয়র চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য ভবনের ধর্না অবস্থানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিড় এবং উদ্দীপনা, দুই বেড়েছে৷ আরও সংগঠিত হয়েছে প্রতিবাদের কর্মসূচি৷ বেজেছে ঢাক, দেওয়া হয়েছে উলুধ্বনি৷ আন্দোলনরত চিকিৎসকদের জন্য সাধারণ মানুষের অনেকেই ব্যক্তিগত অথবা দলবদ্ধ ভাবে খাবার, পানীয় জল থেকে শুরু করে জরুরি প্রয়োজনের বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছেন৷

বুধবার সন্ধে বেলা প্রথমে নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব, ডিজি এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর করা সাংবাদিক বৈঠক এবং তার জবাবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের জবাবের পরই স্পষ্ট হয়ে যায়, জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতিকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া জটিলতা সহজে কাটবার নয়৷ এর পরই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না অভিযান চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা৷ তাতেও আন্দোলনকারীদের মধ্যে উৎসাহের কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি৷ বরং শোনা গিয়েছে নতুন নতুন স্লোগান, সঙ্গে কলকাতা পুলিশের নগরপাল, স্বাস্থ্য সচিবের পদত্যাগের দাবিতে উঠেছে সমবেত আওয়াজ৷

আরও পড়ুন: ‘পিছনে রাজনীতির খেলা’, জুনিয়র চিকিৎসকদের নিশানা করলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা

বুধবার সারাদিন ধরেই স্বাস্থ্য ভবনের সামনের ধর্নাস্থল থেকে একের পর এক স্লোগান দিয়ে গিয়েছেন আন্দোলনকারীরা৷ রাতের দিকে ধর্নাস্থলে শুরু হয় ঢাক বাজানো৷ দেওয়া হয় উলুধ্বনি৷ আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা স্লোগান দিতে থাকেন, এবার পুজোয় অকাল বোধন, আরজিকরে অসুর নিধন৷ আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা অনেকেই বলেন, এটা আমাদের প্রতিবাদের উৎসব৷

বুধবার সকাল থেকেই আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য বহু সাধারণ মানুষ শুকনো খাবার, জল, বিস্কুট, চা, ওআরএস নিয়ে হাজির হয়েছেন৷ এক সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে আন্দোলনকারীরাই নতুন করে আর কাউকে খাবার না আনার জন্য অনুরোধ করেন৷ কারণ প্রয়োজনের তুলনায় ততক্ষণে অতিরিক্ত খাবার মজুত হয়ে গিয়েছে ধর্নাস্থলে৷

রাজ্য সরকারের মতোই জুনিয়র চিকিৎসকরাও দাবি করেছেন, তাঁরা খোলা মনেই আলোচনা চান৷ কিন্তু তার আগে তাঁদের দেওয়া শর্ত রাজ্যকে মানতে হবে৷ এই টানাপোড়েনের শেষ কোথায় হয়, সেদিকেই এখন তাকিয়ে গোটা রাজ্যের মানুষ৷