পুণের এই ঘটনায় দুই তরুণ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর মৃত্যু হয়৷

Pune Porsche Crash: দেশ জুড়ে ক্ষোভ, বাতিল হল জামিন! অবসাদেই নাকি মদ্যপান, সাফাই পুণের নাবালকের

পুণে: পানশালায় বন্ধুদের নিয়ে ফূর্তি করার পর মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ২৪ বছর বয়সি দুই তরুণ তরুণীকে হত্যার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে৷ তা সত্ত্বেও নাবালক হওয়ার অজুহাতে অভিযুক্ত চালককে মুক্তি দিয়েছিল জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড৷ এই ঘটনা সামনে আসার পরই দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়৷ জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের নির্দেশকে ঘিরেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল৷ শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে পুণের অভিযুক্ত সেই নাবালকের জামিনের নির্দেশ বাতিল করল জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড৷ আপাতত ৫ জুন পর্যন্ত তাঁকে হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ 

গত রবিবার পুণেতে এই ঘটনা ঘটে৷ মত্ত অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে নিজের বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে একটি মোটরবাইকে সজোরে ধাক্কা মারে ওই নাবালক৷ এই ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত দুই তরুণ-তরুণীরই মৃত্যু হয়৷ অনীশ আওয়াধিয়া এবং অশ্বিনী কোস্তা নামে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা মৃত দুজনেরই বয়স মাত্র ২৪ বছর, তাঁরা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পুণেতে কর্মরত ছিলেন৷ অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময় ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলছিল ওই পোর্সে গাড়িটি৷ কিন্তু নাবালক হওয়ায় আদালত থেকে জামিন পেয়ে যায় ওই অভিযুক্ত৷

এমন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটানো সত্ত্বেও শুধুমাত্র নাবালক বলে ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতারির দিনই জামিন দিয়ে দেয় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড৷ শাস্তি হিসেবে তাকে পথ দুর্ঘটনা নিয়ে রচনা লিখতে নির্দেশ দেন বিচারক৷ জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের এই অবাক করা সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও এই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে ওই নাবালককে সাধারণ অভিযুক্তের মতোই গণ্য করা হয়, তার হয়ে সওয়াল করতে শুরু করেন৷ এর পরই পুণে পুলিশের পক্ষ থেকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে ওই নাবালককে প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীর মতোই বিচার প্রক্রিয়ায় ফেলার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়৷

আরও পড়ুন: এক ঘণ্টার কম ঘুম কতদিনে পূরণ হয়? কোন বয়সে কত ঘণ্টা ঘুমনো উচিত, ভাইরাল চিকিৎসকের পোস্ট

ওই নাবালকের বিচার প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীর মতোই হবে কি না, সেই আর্জি শুনলেও এ দিন অবশ্য সে বিষয়ে কিছু জানায়নি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড৷ তবে এ দিন ওই নাবালককে হেফাজতে চেয়ে আর্জি জানিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জামিনে মুক্ত থাকলে যে কোনও মুহূর্তে জনরোষের শিকার হতে পারে ওই অভিযুক্ত৷ আবার সে যদি বাইরে থাকে, তাহলে তার দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য অন্যদেরও বিপদ হতে পারে৷

উল্টো দিকে ওই নাবালকের আইনজীবী যুক্তি দেন, মানসিক অবসাদ থেকেই নাকি ওই অভিযুক্ত মদ্যপান করত৷ অভিযুক্ত নাবালক নিজেও জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে আর্জি জানিয়ে বলে, বাড়িতে মায়ের কাছে থাকলে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে সে৷ হোমে পাঠালেই বরং তাকে অবসাদ আরও গ্রাস করবে৷ শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই নাবালক অথবা তার আইনজীবীর আর্জিতে কান দেয়নি জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড৷

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত নাবালকের বাবা বিশাল আগরওয়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ, ছেলে নাবালক এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তা জানা সত্ত্বেও তাকে নিজের গাড়ি চালাতে দিয়েছিলেন বিশাল৷ এমন কি, এই দুর্ঘটনা ঘটার পর পুলিশকে বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করে নাবালকের বাবা৷ এমন কি, পেশায় রিয়েল এস্টেস ব্যবসায়ী বিশালের সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডেরও যোগসাজশের প্রমাণ পুলিশের হাতে এসেছে৷