আফগানিস্তানের হয়ে এখনও পর্যন্ত ৪০টি ওয়ানডে ও ৬৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন গুরবাজ। ওয়ানডে ক্রিকেটে তিনি ১৪৬৭ রান করেছেন। তার মধ্যে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ৫টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে।

KKR: সুযোগ পেয়েই ঝোড়ো ব্যাটিং, কেকেআর তারকা গুরবাজের জীবনেও বিরাট ঝড়! জানতেই পারেননি কেউ

আহমেদাবাদ: গতবার আইপিএলে কেকেআর-এর হয়ে ওপেন করতে নেমে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে ভক্তদের মন জিতে নিয়েছিলেন আফগানিস্তানের উইকেটিকিপার ব্যাটসম্যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ৷ কিন্তু এ বছর ফিল সল্টের আগমণে প্রথম একাদশে জায়গা হচ্ছিল না৷ কিন্তু সল্ট দেশে ফিরে যাওয়ায় মঙ্গলবার প্রথম প্লে অফে তাঁর জায়গায় ওপেন করতে নেমেই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে নাইটদের আইপিএল ফাইনালে ওঠার রাস্তা সহজ করে দেন আফগান তারকা৷

কিন্তু অনেকেই জানেন না, আহমেদাবাদের মাঠে মঙ্গলবার ঝোড়ো ব্যাটিং করা গুরবাজের জীবনেও কত বড় ঝড় চলছে৷ আফগান এই ক্রিকেটারের মা এই মুহূর্তে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি৷ মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশেও ফিরে গিয়েছিলেন গুরবাজ৷ কিন্তু তখনই কেকেআর ম্যানেজমেন্ট জানতে পারে, ফিল সল্ট প্লে অফ শুরুর আগেই দেশে ফিরে যাবেন৷ সল্টের অনুপস্থিতিতে গুরবাজই ছিলেন দলের ভরসা৷ কিন্তু তখন তিনি দেশে৷ পরিস্থিতির কথা জানানো হয় গুরবাজকে৷ মা হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও আফগান এই ব্যাটার অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে কেকেআর কর্তাদের জানিয়ে দেন, তিনি ফিরে এসে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন৷

আরও পড়ুন: গাছ নাকি এটিএম? বাড়ির ছাদে চাষ করতে পারলেই ঘরে আসবে লক্ষ লক্ষ টাকা!

মঙ্গলবারের আগে গুরবাজের এই কঠিন পরিস্থিতির খবর সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়নি৷ ম্যাচের পর গুরবাজ নিজেই জানান, ‘আমার মা এখনও অসুস্থ৷ ফিল সল্ট যখন ফিরে গেল, তখন দলের পক্ষ থেকে আমাকে মেসেজে জানানো হয়, গুরবাজ, তোমাকে আমাদের প্রয়োজন৷ তুমি কী করবে? আমি বললাম, আমি ফিরে আসছি৷ আমার মা এখনও হাসপাতালে ভর্তি৷ আমি সবসময় তাঁর সঙ্গে কথা বলছি, যোগাযোগ রাখছি৷ কিন্তু এটাও তো আমার পরিবার৷ আমার মা এবং কেকেআর পরিবারকে একসঙ্গেই সামলাতে হবে৷ এটা করা খুবই কঠিন, কিন্তু আমাকে পারতেই হবে৷’

এ বছর কেকেআর জার্সিতে সবথেকে উজ্জ্বল তারকার নাম ছিল ফিল সল্ট৷ জেসন রয়ের জায়গায় দলে এসে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন এই ইংরেজ ক্রিকেটার৷ এ বার কেকেআর-এর সাফল্যের পিছনে সল্ট-নারিন ওপেনিং জুটির দুর্দান্ত ব্যাটিং অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের৷ প্রায় প্রতি ম্যাচেই কেকেআর ইনিংসের শুরুতে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সল্ট এবং নারিন বিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে৷ সল্টের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৮৫৷ এতদিন তাই রিজার্ভ বেঞ্চেই বসতে হচ্ছিল গুরবাজকে৷ একের পর এক ম্যাচে প্রথম একাদশে জায়গা না পেয়েও অবশ্য হতাশ হয়ে পড়েননি তিনি৷ প্লে অফের মতো চাপের ম্যাচে প্রথমবার সুযোগ পেয়েই ১৪ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলের জয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিলেন গুরবাজ৷

আফগান এই ক্রিকেটারের কথায়, কেকেআর ম্যানেজমেন্টের মতো পরিবার পাশে থাকলে আপনাকে অন্য কিছু নিয়েই ভাবতে হবে না৷ কারণ গৌতম স্যর, শাহরুখ স্যর আছেন, তার উপরে হেড কোচ রয়েছেন৷ আমি অনেকদিন প্রথম একাদশে সুযোগ না পেলেও আইপিএল প্লে অফের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং চাপের ম্যাচে এবার প্রথম সুযোগ পেলাম৷ কিন্তু আমি যাতে চাপে না পড়ি, সেই জন্য আমাকে সবাই বলেছিল খেলাটা শুধু উপভোগ করতে৷’ আত্মবিশ্বাসী গুরবাজ আরও বলেন, ‘নেটে আমি ভাল ভাবে অনুশীলন করেছি৷ আশা করি ফিল সল্টের জায়গায় নেমে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারব৷’