আশুতোষের মেধাতালিকায় সানি লিওন! নেপথ্যের ‘কীর্তিমান’কে খুঁজতে আসরে নামল সাইবার থানা

#কলকাতা: কলকাতার অন্যতম সেরা কলেজে ভর্তির আবেদনের মেধাতালিকায় প্রথমেই নাম উঠেছিল পর্নস্টার সানি লিওনের নাম। বিষয়টি কলেজের পক্ষে মর্যাদাহানিকর বলে মনে করে শনিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে আশুতোষ কলেজ কর্তৃপক্ষ। তার ভিত্তিতেই এবার মামলা রুজু করল কলকাতা পুলিশ। রবিবার সাইবার থানায় এই ঘটনার ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। কে বা কারা এ ধরনের ‘লজ্জাজনক’ কাজ করেছে তার তদন্ত শুরু হয়েছে।

শুধু আশুতোষ কলেজ নয়, ইতিমধ্যেই বজবজ কলেজ, বারাসাত গভর্নমেন্ট কলেজ-সহ একাধিক কলেজের ভর্তির আবেদনের মেধাতালিকায় উঠেছে একাধিক পর্নস্টারের নাম। জনপ্রিয় এক গায়িকার নামও উঠেছে মালদহের মানিকচক কলেজের মেধাতালিকায়। নিছকই মজা করে কেউ এই কাজ করেছে বলে প্রথমে মনে করছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু একাধিক কলেজের মেধাতালিকায় পর্নস্টারদের নাম ওঠায় বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। এর পেছনে কোনও চক্র রয়েছে কিনা তার তদন্ত করতে অনুরোধ করা হয়েছে পুলিশকে।

আশুতোষ কলেজের মেধাতালিকায় সানি লিওনের নাম উঠে আসার বিষয়টি সোশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই রসিকতা করে ট্যুইট করেন অভিনেত্রী। তিনি লেখেন, “পরের সেমিস্টারে ক্লাসে তোমাদের সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।” তার এই ট্যুইট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। নিন্দার ঝড়ও ওঠে।

কলেজ কর্তৃপক্ষ ও এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা বিষয়টিকে মোটেই ভালভাবে নেয়নি। শুক্রবারই কলেজ কর্তৃপক্ষ এই নিন্দনীয় ঘটনার তদন্ত চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়। তারপরই তৎপর হয়ে মামলা রুজু করল লালবাজার। সূত্রের খবর, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে এই ঘটনায়।

কিন্তু কেন এমনটা হল?

কলেজ সূত্রে খবর, কোভিড পরিস্থিতিতে স্নাতক স্তরে ভর্তির অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি রয়েছে সেখানে চাইলে যে কোনও নাম বসিয়ে আবেদন করা যেতে পারে। প্রাথমিক এই ধাপে নাম বা রেজাল্ট যাচাইয়ের কোনও উপায় নেই। সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে তালিকা বেরিয়েছে তাকে মেধাতালিকা বলতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের ভাষায় এটি ‘ভ্যালিড অ্যাপ্লিকেশন লিস্ট’। তাই সানি লিওনের নাম কেউ যে নিছক মজা করেই বসিয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কেন এরকমটা করা হল তারই তদন্ত চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এরকম মজা একদমই পছন্দ নয় পড়ুয়াদের। কলেজের জুলজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সঞ্জয় দাস বলেন, “কেউ মজার ছলেই এটা করেছে বলে মনে হয়। তবে আমাদের কলেজকে নিয়ে যে ট্রোল হচ্ছে সেটা খুবই লজ্জাজনক। এটা ঐতিহ্যশালী কলেজ। খুব খারাপ লাগছে। ছাত্র হিসেবে আমি দুঃখিত। যে এটা করেছে পুলিশ তাকে খুঁজে বের করুক।” পুলিশের আশ্বাস দ্রুতই খুঁজে বের করা হবে কীর্তিমানকে।

SUJOY PAL