পঞ্চ অঙ্গের সমাহার, তাই জ্যোতিষশাস্ত্রের ভাষায় একে বলা হচ্ছে পঞ্চাঙ্গ বা পঞ্চিকা, সেখান থেকে অপভ্রংশে পঞ্জিকা। আদতে এটি গ্রহ-নক্ষত্র, বিশেষ করে চান্দ্র-সৌর অবস্থানের উপরে ভিত্তি করে রচিত প্রাচীন দিনপঞ্জি। যেখানে উল্লেখ মুহূর্তের। প্রচলিত বিশ্বাস- এই মুহূর্তগুলিতে যে কাজ করা হচ্ছে, সেই অনুসারে শুভাশুভ ফললাভ হয়ে থাকে।
এই সংক্রান্ত আলোচনায় আসার আগে আরেকটি কথা একটু ব্যাখ্যা না করলেই নয়। বলা তো হচ্ছে পাঁচটি অঙ্গ, কিন্তু এগুলো আসলে কী?
ভারতীয় দিনপঞ্জির এই পাঁচটি অঙ্গ হল তিথি, বার, নক্ষত্র, যোগ এবং করণ। সেই অনুসারে ১৫ জানুয়ারির কিছুটা পড়েছে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে, বঙ্গাব্দের তারিখ ২৯ পৌষ। এই বঙ্গাব্দ গণনা করা শুরু হয়েছিল পঞ্জিকা নির্ণয়ের প্রথম এবং প্রাচীন পদ্ধতি সূর্যসিদ্ধান্ত অনুসারে, পরবর্তীকালে যাকে সংস্কার করে প্রতিষ্ঠিত হয় দৃকসিদ্ধান্ত বা বিশুদ্ধসিদ্ধান্ত মত। বাংলার জনমানসে বহুল জনপ্রিয়তার কারণে এখানে সূর্যসিদ্ধান্তসম্মত ফলাফল উল্লেখ করা হল। বার হল সোম এবং এই চতুর্থী তিথি থাকবে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টা ৩৯ মিনিট পর্যন্ত। এর পরে শুরু হয়ে যাবে শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথি।
এই ১৪৩০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে উদযাপিত হবে মকর সংক্রান্তি।
সূর্যসিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৫ জানুয়ারি সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে, সূর্যাস্ত হবে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে। অন্য দিকে, চন্দ্রোদয় হবে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে। চন্দ্র অস্ত যাবে ১৫ জানুয়ারি রাত ৯টা ৩৬ মিনিটে।
এই ১৪৩০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথির নক্ষত্র হল শতভিষা। ১৫ জানুয়ারি, দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত শতভিষা নক্ষত্রের অবস্থান থাকবে। এর পরে তিথিতে অবস্থান করবে পূর্ব ভদ্রপদা নক্ষত্র।
সূর্য অবস্থান করবেন মকর রাশিতে। চন্দ্র অবস্থান করবেন কুম্ভ রাশিতে।
শুভ মুহূর্ত- সূর্যসিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৫ জানুয়ারি মাহেন্দ্রযোগ পড়েনি। অমৃতযোগ ১৫ জানুয়ারি পড়েছে সকাল ৬টা ৩৪ মিনিট – সকাল ৮টা ০০ মিনিট, সকাল ৯টা ০৭ মিনিট – সকাল ১১টা ৩৬ মিনিট, সন্ধ্যা ৭টা ৫৯ মিনিট – রাত ১১টা ৩১ মিনিট তিন সময়ে। এই মাহেন্দ্রযোগ এবং অমৃতযোগকে বাংলা পঞ্জিকার অন্যতম পুণ্যলগ্ন বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। যে কোনও নতুন কাজ, শুভ কাজ শুরু করার এটি প্রকৃষ্ট সময়।
অশুভ মুহূর্ত- সূর্যসিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ১৫ জানুয়ারি রাহুকাল বা কালবেলা পড়েছে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিট – সকাল ৯টা ১৬ মিনিট কালীন সময়ে। এই সময়ে নতুন কোনও কাজ শুরু করাটা ঠিক হবে না।