পঙ্কজ ত্রিপাঠী

বক্স অফিসে ছবির ব্যর্থতা নিয়ে কখনওই মাথা ঘামাননি, একান্ত আলাপচারিতায় সাফ জানালেন অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠী

অ্যামাজন প্রাইমের বহু প্রতীক্ষিত ওয়েব সিরিজ ‘মির্জাপুর’-এর তৃতীয় সিজন এসে গিয়েছে। আবারও ওই সিজনে কালীন ভাইয়া রূপে অনবদ্য অভিনয় করেছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী। কেন এই চরিত্রটি বেছে নিয়েছিলেন তিনি, সেই বিষয়ে News18 Showsha-র সঙ্গে এক বিশেষ আলাপচারিতায় মুখ খুলেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা। ২০১৮ সালে কিংবদন্তি এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম অফার এসেছিল পঙ্কজ ত্রিপাঠীর কাছে। শুধু তা-ই নয়, কেন বক্স অফিসের সাফল্যের অঙ্ক নিয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই, সেটাও জানালেন অভিনেতা।

কালীন ভাইয়া চরিত্রটির বিষয়ে পঙ্কজ ত্রিপাঠী জানান যে, এমনিতে পর্দায় যেরকম ডন দেখানো হয়, সেই চিরাচরিত ডন নন কালীন ভাইয়া চরিত্রটি। অভিনেতার কথায়, “কালীন ভাইয়ার ক্ষমতার খিদে নেই। তিনি আগ্রাসীও নন। আপনারা যদি তাঁর পেশাকে আলাদা করে সরিয়ে রেখে দেখেন, তাহলে বুঝতে পারবেন কালীন ভাইয়া খুবই ভদ্র প্রকৃতির মানুষ। আর দর্শকরা যাতে তাঁর সঙ্গে নিজেদের মেলাতে পারেন, সেটাই শুধু আমি করেছি।”

আসলে কালীন ভাইয়া চরিত্রটিকে অন্যরকম ভাবে ফুটিয়ে তোলার চ্যালেঞ্জই গ্রহণ করেছিলেন তিনি। কারণ বড় পর্দায় যুগের পর যুগ ধরে একই ভাবে দেখানো হয়েছে এই ধরনের চরিত্রগুলিকে। পঙ্কজের বক্তব্য, “যদি আপনারা লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখবেন কালীন ভাইয়া আসলে খুব সুন্দর এক চরিত্র। আসলে আমি এভাবেই চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছি। নিজের স্ত্রী ছাড়া সকলের সঙ্গেই সম্মান দিয়ে কথা বলেন তিনি। এটাই কি সমাজের বাস্তব চিত্র নয়।”

নিজের ব্যক্তিত্ব প্রসঙ্গে পঙ্কজ বলেন, “রুপোলি জগতে আমরা শুধুই অভিনেতা। কিন্তু বাস্তব জীবনে আমরা নিজেরাই অভিনেতা আর নিজেরাই পরিচালক। আর পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা যদি কিছু ভুল করে ফেলি, তাহলে আমরা অন্য কেউ হয়ে যাব। একজন অভিনেতার সঙ্গে দর্শকদের সংযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিষয়টাকে অর্গ্যানিক হতে হবে। কারণ সেখান থেকেই নৈপুণ্য আসে।”

এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দিল্লির হিন্দু কলেজে গিয়েছিলেন পঙ্কজ। সেই কথা মনে করে তিনি বলেন, “ওখানে একটি মেয়ে এসে আমায় বলে যে, ‘আপনাকে আমার কাকার মতো লাগছে’। হেসে আমি বলেছিলাম, ‘তোমার সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ হচ্ছে। তাহলে আমি তোমার কাকা কীভাবে হলাম’? তবে আমি বুঝতে পেরেছি যে, আমার চরিত্রগুলির সঙ্গে মিল পাচ্ছে বলেই এমনটা হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, অটল বিহারী বাজপেয়ীর বায়োপিক ‘ম্যায় অটল হুঁ’ ছবিতে শেষ বার দেখা গিয়েছিল পঙ্কজ ত্রিপাঠীকে। তবে বক্স অফিসে সেই ছবি বিশেষ সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে এ নিয়ে হতাশ কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে অভিনেতা বলেন, “একেবারেই নয়। যদি আমি শ্যুটিংয়ের সময় নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে থাকি এবং নিজের নৈপুণ্যের প্রতি সত্য থাকি, তাহলে কেন আমার এতে খারাপ লাগবে? আমি বক্স অফিসের ব্যবসা বুঝি। সৌভাগ্যজনক ভাবে আমি যেসব ছবি করেছি, তা বক্স অফিসে চলুক কিংবা না চলুক, আমি আমার প্রযোজকদের সেই টাকা ফেরত দিতে পেরেছি। আমি সেই অঙ্কটা জানি।”