R G Kar Student Death: মৃত ছাত্রীর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা মমতার! নিরাপত্তা কোথায়? আর জি কর-কাণ্ডে কর্ম বিরতির ডাক জুনিয়র ডাক্তারদের

কলকাতা: কোনও গ্রামেগঞ্জে নয়, খাস কলকাতার বুকে রাজ্যের অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতালে ভয়াবহ পরিণতি স্নাতকোত্তর ডাক্তারি ছাত্রীর৷ অভিযোগ, সেমিনার রুমের মধ্যে মেঝেতে সংজ্ঞাহীন, অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে৷ সারা শরীরজুড়ে ছিল ক্ষতচিহ্ন৷ ডাক্তারি পড়ুয়ার এহেন মর্মান্তিক পরিণতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি থেকে চিকিৎসক মহল৷ ছাত্রীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা৷ অন্যদিকে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

অল রেসিডেন্ট অব আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃত ছাত্রীর ময়নাতদন্ত হোক৷ ময়নাতদন্তের সময় ভিডিওগ্রাফি করা হোক বলে দাবি তুলেছে তারা৷ চিকিৎসক সংগঠনের দাবি, বোর্ড গঠন করে এই ময়নাতদন্ত তকা হোক৷ উপস্থিত থাকুন একাধিক অটোপসি সার্জেন, তাঁদের আর জি করের দুজন সিনিয়ন অটোপসি বিশেষজ্ঞ থাকুন৷ পাশাপাশি, এই বোর্ডে একজন মহিলা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ রাখার দাবিও জানিয়েছে তারা৷ আজ, শুক্রবার সন্ধের মধ্যে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ফরেন্সিক চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে ওই ছাত্রীর ময়নাতদন্ত করা হোক বলে দাবি তাদের৷

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর! আরজি কর হাসপাতালেই মিলল মহিলা ডাক্তারি পড়ুয়ার ক্ষতবিক্ষত দেহ! উঠল মারাত্মক অভিযোগ

তরুণী চিকিসকের দেহ আপাতত নিয়ে যাওয়া হয়েছে এন আর এস হাসপাতালে৷ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা৷ রয়েছেন অতীন ঘোষ, শান্তনু সেনরাও৷ বিজেপি নেতা সজল ঘোষও পৌঁছেছেন আর জি কর হাসপাতালে৷

আর জি কর হাসপাতালের চেস্ট ডিপার্টমেন্টের পোস্ট গ্রাজুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ডিপার্টমেন্টের সেমিনার রুম থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দেহের পাশে ছিল মোবাইল, ল্যাপটপ, ব্যাগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছোট উঁচু খাটের মতো জিনিসে (মাটি থেকে একটু উঁচুতে) ওই তরুণী চিকিৎসক, গায়ে নীল কাপড়।

আরও পড়ুন: চক্ষু ও দেহদান করেছিলেন সেই কবেই! সামনে এল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই অঙ্গীকার পত্র

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই পড়ুয়ার দেহের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন ছিল। পরনের পোশাকও খুবই অল্প ছিল। বুধবার ৩৬ ঘণ্টার ডিউটি শেষ করে রাত ২টো নাগাদ খেতে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী৷ জুনিয়রদের সঙ্গে বসে খাবারও খেয়েছিলেন৷ তারপর পড়াশোনা করার জন্য এবং বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সেমিনার রুমে যান৷

কলেজের অন্যান্য পড়ুয়াদের দাবি, হাসপাতালে কোনও পরিপূর্ণ রেস্ট রুম নেই চিকিৎসক এবং ইন্টার্নদের জন্য। ফলে টানা ডিউটি শেষ করার পরে তাঁদের সেমিনার রুম বা অন্য কোথাও বিশ্রাম নিতে হয়। কোনও সিস্টার বা নার্স রাত দু’টোর পর ওয়ার্ডে থাকেন না। এমনকি কোনও নিরাপত্তা রক্ষীও গত তিন বছর ধরে নেই।

মৃতার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে তাঁকে। পরিবারের সদস্যরা ইতিমধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছেছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ডিন অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার বুলবুল মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটি।