দুর্ঘটনা শূন্য উড়ালপুল

Record: অনন্য নজির! ৪ বছরে কলকাতার এই উড়ালপুলে দুর্ঘটনার সংখ্যা 0 ! কোন যাদুমন্ত্রে সম্ভব হল?

কলকাতা: এ এক অনন্য নজির। ৪ বছরে দুর্ঘটনা শূন্য উড়ালপথের নাম জানেন? কোলকাতা শহর লাগোয়া। খুব কাছেই। ব্যস্ত এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রয়েছে এই উড়ালপুল। শ্যামবাজার ছাড়িয়ে যশোর রোড ধরে এগোতেই পড়ে এই উড়ালপথ। হ্যাঁ, নাগেরবাজার উড়ালপথের কথাই বলছি। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এই পথের দুর্ঘটনার সংখ্যা শূন্য। কীভাবে এমন অসাধ্য সাধন করল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগ? কলকাতা হাই কোর্টে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞনম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে লিখিত আকারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে সেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টাই করেছে ব্যারাকপুর পুলিশ।

নাগেরবাজার থানার মধ্যে পড়ে এই উড়ালপথ। ৮৫০ মিটার দীর্ঘ এই উড়ালপথ ২০২০ থেকে রাতে বন্ধ। অর্থাৎ উড়াল পথ বন্ধ রেখে দুর্ঘটনা সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে এনেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাতে নাগেরবাজার উড়ালপথ খোলা থাকবে জরুরি পরিষেবার জন্য।

আরও পড়ুন: ভোটার তালিকা নিয়ে রাজ্যজুড়ে বড় অভিযানে বঙ্গ বিজেপি, ‘বিরাট’ সিদ্ধান্ত শুভেন্দু অধিকারীর

২০২০- ২০২৪, ৪ বছর দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান ‘শূন্য’। ব্যারাকপুর পুলিশের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়ে হাইকোর্ট মামলাটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছে।
এখানেই আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, দুর্ঘটনা রোধে যান নিয়ন্ত্রণ করে উড়ালপথ ব্যবহার করাতে সায় দিল আদালত। তবে একটা খটকা থেকেই যায়, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে চারচাকা গাড়ির সঙ্গে বাইকের সংঘর্ষের ঘটনা কেন স্থান পেল না পুলিশের পরিসংখ্যানে। দিনের আলোয় ঘটা দুর্ঘটনা আর রাতে উড়ালপথের দুর্ঘটনা কী আলাদা। প্রশ্ন মামলাকারী আইনজীবী রোহন চট্টোপাধ্যায়ের।

আরও পড়ুন: আচমকা ইস্তফা দিলেন দেব, চিঠি জেলাশাসককে! কারণ ঘিরে তৃণমূলের অন্দরেও রহস্য

ফ্লাইওভার রাতে বন্ধ কেন? জনস্বার্থ মামলা করে হাই কোর্টে আবেদন রাখেন আইনজীবী সৌনক সর্বজনা। নাগেরবাজার উড়ালপুল রাতে চালু রাখার আবেদনে হয় জনস্বার্থ মামলা ছিল। মামলাকারীর অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে ওই ফ্লাইওভার রাতে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাতে কোনও মেরামতও করা হয় না। এরফলে অনেক রোগীর গাড়ি হাসপাতালে যেতে অসুবিধায় পড়ে। ওই ফ্লাইওভার রাত বন্ধ হওয়ায় প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়েন, বিশেষ করে রোগীরা। অনেক রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাতে ওই রাস্তা দিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। রাতে অ্যাম্বুল্যান্সও যেতে দেওয়া হয় না।

মামলাকারীর বক্তব্য, রাতে ফ্লাইওভার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। ওই সময় ফ্লাইওভারের নীচ দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। রাতে মালবাহী গাড়ি বেশি চলায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। জট পেরোতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। বিশেষ করে আম্র পল্লি থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত এলাকায় ওই পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

আদালতের কাছে মামলাকারীর আরও আবেদন ছিল, মা এবং উল্টোডাঙা ফ্লাইওভার রাতে খোলা থাকে। তাই নাগেরবাজারের ওই ফ্লাইওভারও খুলে দেওয়া হোক। ওই সময় ছোট গাড়ি যেতে দেওয়া হোক। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য রাতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হোক। আইনজীবী রোহন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘রাতে অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবায় যুক্ত গাড়ি নাগেরবাজার উড়ালপথে চলতে পারবে। পুলিশ সেই নিশ্চয়তা আদালতে দিয়েছে। পরিস্থিতি না বদল হলে ফের আদালতে যাব।’