Rhea Chakraborty: জঘন্য খাবার, নোংরা বাথরুম, মানসিক যন্ত্রণার কাছে হার মেনেছে সব…! জেলের দিনগুলো কেমন ছিল রিয়ার?

অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তাঁর বান্ধবী তথা বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। এর জন্য ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল। এবার কারাবাসের সেই অধ্যায়ের অভিজ্ঞতা নিয়েই মুখ খুললেন অভিনেত্রী। সীমিত পরিমাণ ভাতায় কীভাবে জীবনধারণ করেছেন আর কোন লড়াইয়ের সম্মুখীন হয়েছিলেন, সেটাই ভাগ করে নিলেন রিয়া।

চেতন ভাগতের চ্যাট শো ‘ডিপটক উইথ চেতন ভাগত’-এ উপস্থিত হয়েছিলেন রিয়া চক্রবর্তী। আলাপচারিতার সময় রিয়া বলেন, “কোভিড বিধিনিষেধের কারণে ১৪ দিনের জন্য একাই আমায় একটি সেলে থাকতে হয়েছিল। ওই ঘরে আমি একাই ছিলাম। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হত, আমি দুপুরের খাবার খাব কি না! আর এত খিদে পেয়েছিল আর ক্লান্তবোধ করছিলাম যে, যা দিয়েছিল সবটাই খেয়ে নিয়েছিলাম।” কিন্তু জেলের মেন্যুতে কী কী ছিল? রিয়া বলেন, “খাবারের তালিকায় ছিল রুটি আর ক্যাপসিকাম। তবে সেই ক্যাপসিকাম ছিল জলের মধ্যে।”

অভিনেত্রী আরও জানান যে, তাঁর ইতিবাচক থাকার যে রসদ, সেটা মিলেছিল তাঁর সহ-বন্দিদের থেকেই। রিয়ার কথায়, “আমি দেখেছিলাম যে বহু বন্দির পাশে তাঁদের পরিবার নেই। আবার এটাও দেখেছি যে, জামিনের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্র ৫০০০ কিংবা ১০০০০ টাকাও তাঁদের কাছে নেই। এমনটা দেখেই আমি কৃতজ্ঞ বোধ করতে শুরু করি। কারণ আমার তো পরিবার এবং বন্ধু রয়েছে। আর আমি নিজেকে বলতাম যে, ‘তুমি বিচার পাবেই। তুমি জামিনও পাবে। কারণ তুমি তো ভুল কিছু করোনি।’ আর যখন ওখানে ছিলাম, তখন ওখানকার মহিলাদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। যা আমার নিয়ন্ত্রণে নেই, তা নিয়ে ভেবে কেন সময় নষ্ট করছি!”

আরও পড়ুন-          ছোটবেলায় গান ছিল অপছন্দ, তিনিই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ‘উস্তাদ’! ফিরে দেখা ‘রাশিদ খান’-এর বর্ণময় জীবন

চেতন ভাগতের ওই চ্যাট শো-এ অভিনেত্রীর কাছে জেলের শৌচাগারের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, জেলে থাকার অন্যতম কঠিন দিক। যন্ত্রণার অধ্যায় স্মরণ করে রিয়া জানান, “জেলের শৌচাগার তো ভাল নয়! কিন্তু মানসিক যন্ত্রণা এতটাই বেশি থাকে যে, শারীরিক কষ্ট সেখানে ফিকে হয়ে যায়। তখন মনে হবে যে, খারাপ শৌচাগারে তা-ও কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে।”

আরও পড়ুন-         শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঘরানা থেকে বলিউড! ছক ভাঙতেন উস্তাদ রাশিদ খান, সুরে সুরেই অমলিন থাকবে তাঁর ম্যাজিক

জেল প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর আরও বক্তব্য, জেলে একটা ক্যান্টিন ছিল। আর সেখানকার বন্দিদের বাড়ি থেকে মানি অর্ডার আনানোরও অনুমতি ছিল। ওই সময় রিয়াও মাসে ৫০০০ টাকা মানি অর্ডার পেয়েছিলেন। রিয়া এ-ও জানান, খাওয়াদাওয়া কিংবা ঘুমোতে যাওয়ার যে নিয়ম ব্রিটিশরা বানিয়েছিল, সেটাই এখনও মেনে চলা হয়।

রিয়ার কথায়, “ওখানে ব্রেকফাস্ট পাওয়া যায় ভোর ৬টায়, আর দুপুরের খাবার সকাল ১১টা নাগাদ। কারণ সেখানে ব্রিটিশ নিয়ম মানা হয়। ভোর ৬টা নাগাদ গেট খুলে দেওয়া হয় আর বিকাল ৫টা নাগাদ আবার কারাগারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এর মাঝে স্নান করা, লাইব্রেরি যাওয়া ইত্যাদির মতো কাজ করা যায়। বেশিরভাগ বন্দিই রাতের খাবারটা বাঁচিয়ে রেখে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে খেয়ে নেন। যদিও আমাকেও এই চক্রটা বদলাতে হয়েছিল। কারণ ওই খাবার এমনিতেও গলা দিয়ে নামে না। গরম হলে তা-ও খেয়ে নেওয়া যায়। ঠান্ডা হয়ে গেলে তো খাওয়াই যায় না। তাই আমি ভোর ৪টেয় উঠে পড়তাম আর দুপুর ২টো নাগাদই রাতের খাবার খেয়ে নিতাম।”