বরানগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

Sayantika Banerjee: বরানগরে গাছ লাগানো নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে চান সায়ন্তিকা, দেওয়া হবে পুরস্কার

কলকাতা: বিধায়কদের গাছ লাগাতে অনীহা নাকি গাছ না পাওয়া? এই নিয়ে বিধানসভায় বিতর্কের মাঝেই গাছ নিয়ে নতুন উদ্যোগ নিয়ে ফেললেন বরানগরের বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের বিধানসভা এলাকায় শুধু ১০০০ গাছ লাগানোই নয়। সেই গাছ বড় করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছেন নব নির্বাচিত এই বিধায়ক।

কী সেই পরিকল্পনা? সেটা হল বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠনের মধ্যে গাছগুলোকে ভাগ করে দেওয়া হবে। এরপর চলবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নজরদারি। এই প্রতিযোগিতা শেষে তিনটি সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হবে। এর ফলে ভাল ফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

সায়ন্তিকা বলেন, “সুন্দরভাবে একটা গাছ লাগানোর প্রতিযোগিতার বিষয় ভেবেছি। যে হাজারটা চারা গাছ আমাদের কাছে রয়েছে সেগুলো খুবই ভালো মানের গাছ। ম্যানগ্রোভ, ফল গাছ ফুল গাছ আছে। এলাকার প্রত্যেকটি ক্লাবকে আমরা পাঁচটি করে চারা গাছ দেবো। তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে বলবো। বেড়া লাগাতে বলবো। এক বছর পর আমরা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সেটা মনিটরিং করাবো। প্রথম তিনটি ক্লাব যারা ভালো করবে। বিউটিফিকেশন করবে। তাদেরকে আমরা পুরস্কার দেবো। শুধু গাছ লাগিয়ে ফেসবুকে ছবি দিলেই হবে না। প্রত্যেকদিন পরিচর্যা করার সময় রক্ষণাবেক্ষণ যখন হচ্ছে সেই সময় ছবি করে দিতে হবে। এই সচেতনতা আমাদের সবাইকে মিলেই করতে হবে। গাছ সমন্বয়ের উদ্যোগে ব্যবস্থা হচ্ছে। আগামী এক বছর পরে আশা করি ভালো ফল পাওয়া যাবে।”

আরও পড়ুন: ‘এই রাজনীতি আমার জন্য নয়!’ তৃণমূলের সঙ্গে আপোসে নারাজ, অধীরের ফেসবুক পোস্টে জল্পনা

গাছ দেবে বন দফতর, বেড়া লাগাবে কে? এই প্রশ্নে কার্যত উত্তাল হয়েছে বিধানসভা। বুধবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বিধায়ক মধুসূদন বাগ বন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে প্রশ্ন করেন, প্রতিবছরই গাছ লাগানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয় বনদফরের তরফে। কিন্তু সেই গাছের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বড় হতে পারে না। বেড়া না থাকার জন্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে এই ক্ষেত্রে বনদফতরের এর এই উদ্যোগ সফল হতে পারে না। তাই বেড়া লাগানোর জন্য দফতরের কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়।

এরপরে বিজেপির প্রবীণ বিধায়ক অশোক লাহিড়ি মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, “বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে আমি দেখেছি গাছ বড় করার জন্য এলাকারই কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কিছু অর্থের বিনিময়ে। এখানেও যদি সেরকম কাউকে সেই কাজের ভাড় দেওয়া হয় এবং গাছ বড় হওয়ার পরে তাঁকে সেই টাকা দেওয়া হয় তা হলে গরু ছাগলের থেকে গাছ বাঁচানোও সম্ভব হবে।” উত্তরে মন্ত্রী গাছ বাঁচানোর জন্য বিধায়কদের উদ্যোগ নেওয়ার উপর জোর দিতে বলেন। এই বিষয়ে বিধানসভার এক বিধায়ক বিধানসভার বাইরে রসিকতা করে বলেন, “তারমানে কি বিধায়কদের এখন গরু ছাগল পাহাড়া দিতে হবে?” বিধানসভায় শাসকদলের এক বিধায়ক জানান, “এতে অসুবিধার কী আছে। বনদফরের তরফে গাছ দেওয়া হবে। বিধায়কের পর্যবেক্ষণে সেই গাছ রক্ষিত হবে। বড় হবে। গাছ বড় হলে কি আর বেছে বেছে অক্সিজেন দেবে? নাকি রং দেখে ফল, ফুল দেবে। প্রত্যেকেরই উচিত পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের থেকে বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে। সবকিছুই সরকার করবে আর আমি শুধু সমালোচনা করবো আর হাততালি কুড়োবো তা হয় না।”

‘গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান’। প্রশাসনের তরফে প্রায় প্রতিবছরই এমন প্রচার করা হয়ে থাকে। রাজ্য সরকারের বনদফতরের এর পক্ষ থেকে বিলি করা হয় গাছও। কিন্তু সেই গাছকেই শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়ে ওঠেনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। তার কারণ নজরদারি ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। এর ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য যেমন কিছু গাছ নষ্ট হয় তেমনই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গবাদি পশু খেয়ে নেয় গাছগুলো। সেই গাছ কী ভাবে রক্ষা করা যায় তা নিয়েই বিধানসভায় চাপানউতোর