চশমার বদলে আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত? যা বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা…

Eye Drop Vs Reading Glasses: চশমার বদলে আই ড্রপ ব্যবহার করা উচিত? যা বলছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা…

কলকাতা: চলতি সপ্তাহে আই ড্রপ লঞ্চ করল Entod Pharmaceutical। যাদের হেডকোয়ার্টার রয়েছে মুম্বইয়ে। বলা হচ্ছে, এই আই ড্রপ ব্য়বহার করলে আর রিডিং গ্লাসের প্রয়োজন হবে না। প্রায় ২ বছর ধরে পরীক্ষানিরীক্ষার পরে ড্রাগ রেগুলেটরি সংস্থার কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ভারতের প্রথম এই ধরনের আইড্রপ PresVu।

প্রায় ২৭০ জনেরও বেশি রোগীর উপর ৩ পর্যায়ে চলেছিল ক্লিনিক্যাল স্টাডি। সেই তথ্য পেশ করা হয়েছিল সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনে। সেখানকার বিশেষজ্ঞ দলই বাণিজ্যিক ছাড়পত্র দিয়েছে ওষুধটিকে।

আরও পড়ুন- স্বামীর সঙ্গে ঘর করা হল না, হাল ধরতে টোটোই ভরসা সাখিনার!
Entod Pharmaceutical-এর সিইও নিখিল কে মসুরকর এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে News18-এর কাছে বলেছিলেন যে, অক্টোবর থেকেই মিলবে এই ওষুধ এবং এটা চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনের ভিত্তিতেই পাওয়া যাবে।

যদিও বলা হচ্ছে, এই ওষুধটি ব্যবহার করলে রিডিং গ্লাস বা চশমা লাগবে না। তবে বিষয়টার কিছু খারাপ দিক তুলে ধরেছেন একাধিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ। News18-এর তাঁরা দাবি করেছেন যে, চশমার বদলে রিইউজেবল আই ড্রপ ব্যবহার করলে দীর্ঘমেয়াদে তা ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। আসলে এটা চমকপ্রদ ওষুধ নয়, ফলে তা সারা জীবনের সমস্যার সমাধান হতে পারে না।
এই ওষুধটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে পাইলোকার্পিন।

আরও পড়ুন- সুস্বাদু এই মশলা মহৌষধ! ব্রণ, ফোঁড়ার থেকে নিংড়ে নেয় পুঁজ! হাঁপানি,বদহজমের যম…

যা গত ৭৫ ধরে গ্লকোমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মূলত চোখের মণির আকার কমিয়ে প্রেসবায়োপিয়ার চিকিৎসা করে এই ওষুধটা। ফলে বিষয়বস্তুকে নিকটে দেখতে সুবিধা হয়। আবার সুস্থ চোখের ক্ষেত্রে আইরিসের পিছন দিকে থাকা স্বচ্ছ লেন্স নিজের আকার কমিয়ে অথবা বাড়িয়ে নেয়। ফলে কাছের জিনিস দেখার ক্ষেত্রে দৃষ্টি পরিষ্কার থাকে। কম বয়সে এটা জোরালো থাকে, কিন্তু বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই ক্ষমতা কমতে শুরু করে। যার ফলে চশমার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

এ দিকে PresVu আইড্রপের একটি সিঙ্গেল ড্রপ মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে কাজ করতে শুরু করে দেয়। আর তার প্রভাব থাকে পরবর্তী ৬ ঘন্টা পর্যন্ত। এবার তারপরে যদি ওই ওষুধটির দ্বিতীয় ড্রপ দেওয়া হয়, তাহলে তা আরও বেশি সময় অর্থাৎ প্রায় ৯ ঘণ্টা স্থায়ী হয়।

নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসের ডা. রাজেন্দ্র প্রসাদ সেন্টার ফর অপথ্যালমিক সায়েন্সেসের ডা. রোহিত সাক্সেনা বলেন যে, “এই ওষুধটা স্বল্প মেয়াদের জন্য ভাল। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদের জন্য তা সমাধান হতে পারে না।”

আবার গুরুগ্রাম নারায়ণা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের অপথ্যালমোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. দিগ্বিজয় সিং বলেন যে, “একটা ঘোড়া যা-ও অল্পবিস্তর দৌড়চ্ছে, সেটা ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়ে যাবে। ঠিক এভাবেই এই ড্রপগুলিও একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাহায্য করবে। কিন্তু ধীরে ধীরে তা পেশি দুর্বল করে দেবে। ফলে চশমা পরতেই হবে।”

শার্প সাইট আই হসপিটালসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ডিরেক্টর ডা. সমীর সুদ বলেন যে, “এই ধরনের ড্রপের ব্যবহার একটু অবাস্তব। আর ক্লিনিক্যাল ট্রাইলে এই ওষুধের সাফল্যকে অর্ধেক যুদ্ধ জয় বলে ধরা যাবে। যখন সকলে এটা ব্যবহার করবেন, তখন সেই ওষুধ কীভাবে কাজ করবে, সেটা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।”