Movie Review: খামতি থাকলেও রাজকুমারের দুর্ধর্ষ অভিনয়ে জীবন্ত ‘শ্রীকান্ত! সব মিলিয়ে কেমন হল বায়োপিক

বি-টাউনে যেন বায়োপিক তৈরির দৌড় শুরু হয়েছে। সে চলতি বছর ‘স্বতন্ত্র বীর সাভারকর’-ই হোক কিংবা গত বছরের ‘স্যাম বাহাদুর’-ই হোক। অথবা আবার ২০২২ সালের ‘সাবাশ মিঠু’-ই হোক! কিন্তু এই বায়োপিকের ভিড়ে ‘শ্রীকান্ত’ কীভাবে আলাদা? কারণ এই ছবি থেকে দর্শকরা একটা আম-আদমি অনুভূতি পাবেন। যা মনে একটা ভাল লাগা ছড়িয়ে দেয়। রাজকুমার রাও অভিনীত ‘শ্রীকান্ত’ দর্শকদের মুখে হাসি ফোটাবে।

তুষার হিরানন্দানি পরিচালিত ‘শ্রীকান্ত’ ছবিতে ফুটে উঠেছে মছিলিপত্তনমের শ্রীকান্ত বোল্লা নামে এক দৃষ্টিহীন বালকের গল্প। এই মছিলিপত্তমন আসলে তৎকালীন অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের অংশ ছিল। জন্ম থেকেই অন্ধ ছিল শ্রীকান্ত। অথচ তাঁর সেই দৃষ্টিহীন চোখেই ছিল বড় বড় স্বপ্ন! এর মধ্যে একটি ছিল ভারতবর্ষের প্রথম দৃষ্টিহীন প্রেসিডেন্ট হওয়া। ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্তকে দৃষ্টিহীনদের স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। যেখানে তাঁর আলাপ হয় শিক্ষিকার সঙ্গে। আর এই শিক্ষিকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছে জ্যোতিকাকে।

ছবিতে সেই শিক্ষিকাকে যশোদা মায়ের আখ্যা দিতে দেখা যায় শ্রীকান্তকে। আসলে জীবনের চলার পথে যে শিক্ষার প্রয়োজন, সেই শিক্ষাই শ্রীকান্ত পেয়েছিলেন নিজের সেই শিক্ষিকার থেকে। সেই কারণেই তাঁকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পালিকা মাতার আসনে বসিয়েছিলেন তিনি। এরপর সময় বয়ে চলে। ক্লাসের সেরা ছাত্র হয়ে ওঠে শ্রীকান্ত। তবে তার ঔদ্ধত্যের জন্যই তাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর শিক্ষিকা এগিয়ে আসেন এবং তাঁকে বোর্ড পরীক্ষায় সাফল্য পেতে সাহায্য করেন। এবার শুরু হয় আর এক সমস্যা। আসলে ওই সময় ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় দৃষ্টিহীন পড়ুয়ারা বিজ্ঞানকে নিজেদের স্ট্রিম হিসেবে বেছে নিতে পারত না।

এরপর সেই শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে শুরু হয় শ্রীকান্তের লড়াই। এতে তিনি জয়ীও হন। এরপর ধীরে ধীরে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপে আমেরিকায় পাড়ি দেন তিনি। সেখান থেকে দেশে ফেরার কোনও ইচ্ছাই ছিল না তাঁর। কিন্তু তাঁর প্রেমিকা (এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলায়া এফ) তাঁকে বুঝিয়েসুঝিয়ে ফিরিয়ে আনেন। হায়দরাবাদে ফিরে শ্রীকান্ত প্যাকেজিং পেপারের বড় সাম্রাজ্য গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে শর্ত দেন শুধুমাত্র দৃষ্টিহীনদেরই নিয়োগ করা হবে। এভাবেই ব্যবসা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে শ্রীকান্তের দম্ভও। এটাই কি তাঁর ব্যবসার ক্ষতি করে দেবে? না কি এটা তাঁর স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে? এসবের উত্তর পেতে গেলে দেখতে হবে ‘শ্রীকান্ত’!

আরও পড়ুন: বিয়ে ছাড়াই মা হলেন! সিরিয়াল থেকে উত্থান! বলিউডের সবচেয়ে বড় হিট দেন এই নায়িকা

আরও পড়ুন: যেন রূপকথার প্রেম! শ্রেয়া-শিলাদিত্যর বিয়েটা হল কী ভাবে! কী করেন গায়িকার স্বামী

রাজকুমার রাও এবং জ্যোতিকা সত্যিই দুর্দান্ত! ছবির প্রথম ভাগে শ্রীকান্তের জীবনের নানা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে দর্শকদের নিয়ে যাবেন তাঁরা। লেখক জগদীপ সিদ্ধু এবং সুমিত পুরোহিত প্রথম ভাগটা একেবারে টানটান লিখেছেন। তবে দ্বিতীয় ভাগে নাটকীয়তা সেভাবে আনেননি তাঁরা। যেটা অনেক দর্শকই উপভোগ করতে পারবেন। প্রথম ভাগে রয়েছে বেশ কিছু চোখে জল আনা মুহূর্তও।

তবে দ্বিতীয় ভাগে ছবিটিকে অযথা টেনে বাড়ানো হয়েছে যেন! দর্শকরা বিভ্রান্ত হতেই পারেন যে, কোন দিকে চলেছে ছবির অভিমুখ। এই ছোট ছোট খামতি থাকা সত্ত্বেও এই ছবিতে গল্প বলার ধরন সত্যিই প্রশংসনীয়। যার জন্য দর্শকরা শ্রীকান্তকে করুণার চোখে নয়, বরং সম্মানের চোখেই দেখতে পারবেন।