ভারতে রিজার্ভ রয়েছে ৮,৪০,০০০ কিলো সোনা। কিন্তু, এত সোনা মজুত রাখার কারণ অনেকেই জানেন না। জেনে নেওয়া যাক এর আসল কারণ।সোনার মজুত একটি দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা এবং শক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা একটি আর্থিক নিরাপত্তা জাল হিসাবে কাজ করে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং মুদ্রার ওঠানামার বিরুদ্ধে একটি বাফার প্রদান করে। যখন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি যথেষ্ট সোনার মজুত রাখে, তখন এটি অর্থনীতিতে আস্থার ইঙ্গিত দেয়, যা প্রায়ই বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করে এবং মুদ্রার জন্য উচ্চ চাহিদার দিকে পরিচালিত করে। উপরন্তু, সোনা মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে কাজ করে; উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সময়কালে, সোনার মূল্য সাধারণত বৃদ্ধি পায়, সম্পদ সংরক্ষণে সাহায্য করে।-উল্লেখযোগ্য সোনার রিজার্ভের দেশগুলিও শক্তিশালী মুদ্রার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে, যা বাণিজ্য উদ্বৃত্তের দিকে পরিচালিত করতে পারে। সামগ্রিকভাবে, সোনার মজুত আর্থিক স্থিতিশীলতায় অবদান রাখে এবং কৌশলগত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। -প্রায় প্রতিটি দেশের কাছেই নিজেদের গোল্ড রিজার্ভ থাকে। ভারতের কাছেও তা রয়েছে। ভারতের কাছে এখন প্রায় ৮৪০.৭৬ টন সোনা মজুত রয়েছে।-২০২৪ সালের প্রথম কোয়ার্টারে ভারতের কাছে সোনা মজুত ছিল ৮২২.০৯ টন। যা এখন বেড়ে প্রায় ৮৪০.০৯ টন হয়েছে। -এত বিশাল পরিমাণে সোনার কিছুটা ভারতের কয়েকটি জায়গায় রাখা হয়েছে এবং বাকি সোনা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছে। -২০২৪ সালের ৩১ মার্চ অবধি নির্দিষ্ট তথ্য অনুযায়ী ভারতে প্রায় ৪০৮.৩১ টন সোনা মজুত ছিল।-ICICI ডায়রেক্টের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে এই বিপুল পরিমাণে সোনা মজুত রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অধীনে। যা ভারতের মুম্বই এবং নাগপুরে হাই সিকিউরিটির মধ্যে রাখা হয়েছে। -দেশে কিছু পরিমাণ সোনা রিজার্ভ রাখার পরেও বিদেশেও ভারতের সোনা রিজার্ভ করে রাখা হয়েছে। বিদেশে প্রায় ভারতের ৪১৩.৭৯ টন সোনা রিজার্ভ রাখা হয়েছে।-বিদেশে ভারতের ৪১৩.৭৯ টন সোনা ইউনাইটেড কিংডমের ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডে মজুত রাখা হয়েছে। -ইউনাইটেড কিংডমের ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ছাড়াও ভারতের কিছু পরিমাণ সোনা সুইৎজারল্যান্ডের ব্যাঙ্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টে রাখা হয়েছে।-এই বিষয়ে জেনে রাখা প্রয়োজন যে, সম্প্রতি বিদেশে রিজার্ভ রাখা প্রায় ১০০ টন সোনা ভারতে নিয়ে আসা হয় এবং তা ভারতেই রিজার্ভ রাখা হয়েছে।
হলুদ ধাতুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। শুধু গয়না নয়, মুদ্রস্ফীতির বিরুদ্ধেও লড়তে পারে সোনা। হলুদ ধাতু তাই বিনিয়োগকারীদের নয়নের মণি। গত কয়েক বছরে বিশ্বের যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সোনা কিনেছে তাদের মধ্যে ভারত অন্যতম। কিন্তু কোন দেশের কাছে সবচেয়ে বেশি সোনা মজুত রয়েছে? এই তথ্য জানেন না অনেকেই।বিশ্বের মধ্যে ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকার কাছেই সবচেয়ে বেশি সোনা মজুত (USA Gold Reserves) রয়েছে। বাইডেনের দেশের সোনার ভান্ডারে ৮,১৩৩.৪৬ টন সোনা রয়েছে। এই সোনার দাম প্রায় ৫৪৩,৪৯৯.৩৭ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৪৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।গোল্ড রিজার্ভের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জার্মানি। এই দেশে ৩,৩৫২.৬৪ টন সোনার মজুত রয়েছে। এই সোনার মোট মূল্য ২২৪,০৩২.৮১ মিলিয়ন ডলার।সর্বোচ্চ সোনার মজুত রয়েছে এমন শীর্ষ দশটি দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি। এই দেশে ২,৪৫১.৮৪ টন সোনার মজুত রয়েছে। ইতালির কাছে থাকা সোনার মোট মূল্য প্রায় ১৬৩,৮৩৮.১৯ মিলিয়ন ডলার।গোল্ড রিজার্ভের দিক থেকে ফ্রান্সের অবস্থান চতুর্থ। মোট ২,৪৩৬.৮৮ টন সোনা ফরাসি সরকারের কোষাগারে রাখা আছে। ফ্রান্সের মজুত সোনার মূল্য ১৬২,৮৪৪.৭২ মিলিয়ন ডলার বলা হয়।ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর সবচেয়ে বেশি সোনা মজুত করেছে রাশিয়া। এই তালিকায় পুতিনের দেশ রয়েছে পঞ্চম স্থানে। রাশিয়ার মজুত সোনার পরিমাণ ২,৩৩২.৭৪ টন। এর মোট মূল্য ১৫৫,৮৮০.০০ মিলিয়ন ডলার।বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সোনা উৎপাদিত হয় চিনের খনি থেকে। তবে সোনা মজুতের দিক থেকে তারা রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। রয়েছে। চিনের কাছে মোট ২,২৩৫,৩৯ টন সোনা মজুত রয়েছে। এর মূল্য ধরা হয়েছে ১৪৯,৩৭৪.৬১ মিলিয়ন ডলার।সপ্তম স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড। মোট ১,০৪০.০০ টন মজুত রয়েছে এই দেশে। যার মূল্য ৬২,৫৪৩.৯১ মিলিয়ন ডলার।এই তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে জাপান। এশিয়ার এই দেশটিতে ৮৪৫.৯৭ টন সোনা রয়েছে, যার মোট মূল্য প্রায় ৫৬,৫৩০.১৫ মিলিয়ন ডলার।2024 সালের মার্চের শেষ নাগাদ ভারতের সোনার মজুত দাঁড়িয়েছে ৮২২.৯ টন। এই সোনার সঙ্গে ভারত সবচেয়ে বেশি সোনার মজুত রয়েছে এমন দেশের তালিকায় নবম স্থানে উঠে এসেছে। গত আর্থিক বছরে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২৭.৫ টন সোনা কিনেছিল।দশম স্থানে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। নেদারল্যান্ডের কাছে ৬১২.৪৫ টন সোনার রিজার্ভ রয়েছে। এই সোনার মূল্য ৪০,৯২৫.৭৭ মিলিয়ন ডলার।
