ভবিষ্যতে স্ত্রীকে যাতে টাকার জন্য অন্য কারও উপর নির্ভর না করতে হয়, এমটা চাইলে তাঁর জন্য নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এর জন্য স্ত্রীর নামে ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম, সংক্ষেপে NPS অ্যাকাউন্ট খোলা যেতে পারে। NPS অ্যাকাউন্ট ৬০ বছর বয়সে স্ত্রীকে মোটা টাকা দিতে পারে।এছাড়াও প্রতি মাসে পেনশনের সুবিধা পাওয়া যাবে, এতেই স্ত্রীর নিয়মিত আয় হবে। এনপিএস অ্যাকাউন্টের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে কেউ নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে, প্রতি মাসে কে কত টাকা পেনশন চায়। এর মাধ্যমে ৬০ বছর বয়সে স্ত্রীর টাকার অভাব হবে না।স্ত্রীর নামে এনপিএস অ্যাকাউন্ট – স্ত্রীর নামে একটি ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম অ্যাকাউন্ট ওপেন করা যেতে পারে। সুবিধা অনুযায়ী, প্রতি মাসে বা বার্ষিক টাকা জমা করার বিকল্প পাওয়া যাবে। এমনকি ১০০০ টাকা দিয়েও স্ত্রীর নামে NPS অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। NPS অ্যাকাউন্ট ৬০ বছর বয়সে ম্যাচিওর হয়। নতুন নিয়মের অধীনে, কেউ চাইলে, স্ত্রীর বয়স ৬৫ বছর না হওয়া পর্যন্ত সেই NPS অ্যাকাউন্ট চালিয়ে যেতে পারে।৫০০০ টাকার মাসিক বিনিয়োগের সঙ্গে ১.১৪ কোটি টাকার একটি তহবিল – ধরা যাক, কারও স্ত্রীর বয়স ৩০ বছর এবং তার NPS অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে। যদি সে বিনিয়োগের ১০ শতাংশ বার্ষিক রিটার্ন পায়, তাহলে ৬০ বছর বয়সে তার অ্যাকাউন্টে মোট ১.১২ কোটি টাকা থাকবে। এর থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৪৫,০০০ টাকার পেনশন পেতে শুরু করবে দম্পতি। তারা আজীবন এই পেনশন পেতে থাকবে।এককালীন কত টাকা এবং কত টাকা পেনশন পাওয়া যাবে – -বয়স- ৩০ বছর -মোট বিনিয়োগের সময়কাল – ৩০ বছর -মাসিক অবদান- ৫০০০ টাকা -বিনিয়োগের আনুমানিক রিটার্ন – ১০ শতাংশ -মোট পেনশন তহবিল- মেয়াদপূর্তিতে ১,১১,৯৮,৪৭১ টাকা তোলা যাবে -বার্ষিক প্ল্যান কেনার পরিমাণ – ৪৪,৭৯,৩৮৮ টাকা -৬৭,১৯,০৮৩ টাকার আনুমানিক বার্ষিক সুদের হার ৮ শতাংশ -মাসিক পেনশন – ৪৪,৭৯৩ টাকাফান্ড ম্যানেজাররা অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন – NPS হল কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প। এই স্কিমে যে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, তা পেশাদার তহবিল পরিচালকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকার পেশাদার ফান্ড ম্যানেজারদের এই দায়িত্ব দেয়।এমন পরিস্থিতিতে, NPS-এ বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকে। যাই হোক, এই স্কিমের অধীনে যে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, তার উপর রিটার্ন নিশ্চিত করা হয় না। আর্থিক পরিকল্পনাবিদদের মতে, NPS তার শুরু থেকে ১০ থেকে ১১ শতাংশের গড় বার্ষিক রিটার্ন দিয়েছে।
অবসর জীবনে পেনশন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কোথায় বিনিয়োগ করলে সর্বোচ্চ লাভ বা সবচেয়ে বেশি পেনশন পাওয়া যাবে? এর একটাই উত্তর, এনপিএস বা ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম। দীর্ঘমেয়াদে এই পেনশন স্কিমের জুড়ি নেই।সরকারি তো বটেই, বেসরকারি কর্মচারীরাও এই স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারেন। নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে কিস্তিতে টাকা দিতে হয়। মেয়াদ শেষে বিনিয়োগের একটা অংশ হাতে আসে। বাকিটা ব্যবহার করা হয় পেনশন হিসেবে।আর্থিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, অবসরকালীন বিনিয়োগের জন্য সেরা স্কিম এনপিএস। যত কম বয়সে শুরু করা যায় তত ভাল। তাহলে ৬০ বছর বয়সে সর্বাধিক পেনশন হাতে আসবে। সেটা কত? ঠিকঠাক বিনিয়োগ করলে এনপিএস থেকে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পেনশন পাওয়া যায়।কীভাবে মাসে ১ লাখ টাকা পেনশন: একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে যাবে। ধরা যাক একজন বিনিয়োগকারী ৪০ বছর বয়সে এনপিএস স্কিমে বিনিয়োগ শুরু করলেন। তাহলে তাঁর বিনিয়োগের মেয়াদ (অবসরের বয়স ৬০ বছর ধরে) ২০ বছর।১ লাখ টাকা মাসিক পেনশনের জন্য প্রতি মাসে ৬৬ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এতে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়াবে ১.৫৮ কোটি টাকা। বার্ষিক ১০ শতাংশ রিটার্ন ধরলে লাভ হবে ৩.৪৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০ বছর পর এনপিএস ফান্ডের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫.০৫ কোটি টাকা।মেয়াদপূর্তির পর মোট টাকার ৬০ শতাংশ তুলে নেওয়া যায়। অর্থাৎ ৩.০৩ কোটি টাকা একলপ্তে হাতে আসবে। বাকি পড়ে থাকবে ৪০ শতাংশ বা ২.০২ কোটি টাকা। এই টাকা থেকে ৬ শতাংশ বার্ষিক সুদ পেলে প্রতি মাসে ১.০১ লক্ষ টাকা পেনশন হাতে আসবে।এনপিএসে বেশ কিছু সুবিধা আছে। যে কোনও সময় বিনিয়োগ শুরু করা যায়। চাইলে বিনিয়োগের পরিমাণ পরিবর্তনও করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। অন্যান্য স্কিমের তুলনায় এনপিএসে রিটার্নও অনেক বেশি। এখনও পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা বার্ষিক ৯ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পেয়েছেন। ধারা ৮০সিসিডি(১), ৮০সিসিডি(২) এবং ৮০সিসিডি(১বি)-র আওতায় বার্ষিক ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করছাড় পাওয়া যায়।