কলকাতা: ফের আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ? এবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। মগরাহাটের ঘটনায় ৬ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের।
মগরাহাটের ১ নং ব্লকের উত্তরকুসুম গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১৩-২৩ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বাড়ি বানানোর টাকার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগে সানোয়ার হোসেন লস্কর নামে স্থানীয় ব্যাক্তি জনস্বার্থ মামলা করেন হাইকোর্টে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পঞ্চায়েত প্রধান ভুয়ো নথির মাধ্যমে নয়-ছয় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: ৫ মিনিটে ‘নিষ্ক্রিয়’ করে বিষধর সাপের বিষ…! বলুন তো কোন ‘গাছ’? চমকে দেবে নাম!
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, নিয়ম অনুয়ায়ী আবাস যোজনার অর্থ ব্যায়ের সময় যে নাগরিক ওই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছেন তাঁর ছবি-সহ ওই বাড়ির ছবি দিতে হয়। নথি অনুযায়ী দেখা যায় জাহানারা বিবির বয়স ৭২ বছর। অথচ সেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বাচ্চা মেয়ের ছবি। আর তাতেই স্পষ্ট প্রকল্প নিয়ে স্বজন পোষণের। এমনটাই অভিযোগ তোলা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্যে আরও দেখা যাচ্ছে সেরিনা বিবি নামের এক মহিলার নামে ২৯টি শৌচাগার বানানোর টাকা দেওয়া হয়েছে। মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে তদন্ত করে ৬ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তৈরি হতে চলেছে আরও তিন কোটি বাড়ি! তৃতীয় দফায় নরেন্দ্র মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এমনটাই ঘোষণা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের। অর্থমন্ত্রী মঙ্গলবার জানিয়েছেন আবাস যোজনার অধীনে আরও ৩ কোটি অতিরিক্ত বাড়ি বানানো হবে।
আবাস যোজনায় আরও বেশি বাড়ি বানাতে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ তাঁর ২০২৪ এর বাজেটে জানিয়েছেন যোজনার অধীনে আরও ১ কোটি গরিব ও মধ্যবিত্তদের জন্য বাড়ি বানাতে ১০ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল। ঋণের ক্ষেত্রেও দেওয়া হবে ভর্তুকি।
তবে জানেন কি এই আবাস যোজনার আওতায় কারা আসতে পারবেন? কী যোগ্যতা থাকলে আর কোন কোন নিয়ম পূরণ করলে আবাস যোজনায় বাড়ি বানানোর টাকা পাওয়া যাবে? আবেদন করার নিয়মই বা কী? কী কী নথি প্রয়োজন?
উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আজ এই প্রতিবেদন। দেওয়া হল সেই সমস্ত তথ্য যা আপনার জানা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সমস্ত জরুরি উত্তর যা আবাস যোজনায় বাড়ি পেতে সাহায্য করতে পারে আপনাকেও।
আবেদনের পদ্ধতিঃ- একটি বাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PMAY) লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বহু মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন।
আপনিও চাইলে একটি সরল আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন। তবে যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্র অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে আবেদন করা যাবে।
আবেদন করার যোগ্যতা : প্রথমে দেখে নেওয়া যাক এই প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবেন। নিয়ম অনুযায়ী আবেদনকারীর পরিবারের মোট বার্ষিক আয় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার বেশি হওয়া যাবে না। যিনি আবেদন করবেন, তাঁর বয়স অবশ্যই ১৬ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবাস যোজনার স্কিমের দুটি শাখার একটি হল গ্রামীণ বাসিন্দাদের জন্য PMAY-Grameen এবং অপরটি শহরের বাসিন্দাদের জন্য PMAY-Urban।এই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি ভারতীয় নাগরিকেরা, যাদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ১৮ লক্ষ পর্যন্ত, তাঁরা এই আবেদন করতে পারেন।
খেয়াল রাখতে হবে, আবেদনকারী যেন পরিবারের প্রধান হয়। অন্য কোনও বাসস্থান থাকলে এই প্রকল্পে আবেদন করা যাবে না। আবেদনকারীর পরিবারে কেউ সরকারি চাকরি থাকলে এই প্রকল্পে আবেদন করা যাবে না।
কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ নথি লাগবে? ১: আধার কার্ড ২) প্যান কার্ড ৩) আয় শংসাপত্র ৪) ঠিকানা প্রমাণ ৫) বিপিএল তালিকার জেরক্স ৬) আবেদনকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ৭) মোবাইল নম্বর ৮) ইমেইল আইডি ৯) ভোটার আইডি কার্ড ১০) পাসপোর্ট সাইজ ছবি
অনলাইনে আবেদন পদ্ধতিঃ- ১. প্রথমে অফিসিয়াল PMAY ওয়েবসাইট (https://pmaymis.gov.in/) নেভিগেট করতে হবে। ২.ওয়েবসাইটের হোমপেজে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গিয়ে ক্লিক করুন এবং এগিয়ে যান। ৩.আবেদন করার জন্য নিজের বিশদ বিবরণ দিয়ে পূরণ করতে হবে।
৪. এরপর প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করতে হবে। ৫. সবকিছু তথ্য নির্ভুল ভাবে দিয়ে আবেদন জমা করতে হবে।
অফলাইন আবেদন পদ্ধতিঃ- অফলাইনে আবেদন করতে আপনার নিকটবর্তী কমন সার্ভিস সেন্টার (CSC) গিয়ে সমস্ত তথ্য জমা করতে হবে। সেখান থেকেই আবেদন গ্রহন করা হবে। তাই আর দেরি না করে নিজের স্বপ্নের বাড়ি বানান প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনায়।
কী ভাবে আবেদনকারী নিজেদের নাম দেখবে এই তালিকায়? স্টেপ-১: প্রথমে আপনাকে গুগলে https://pmayg.nic.in/ সার্চ করতে হবে। তারপর home পেজটি খুলে গেলে আপনি নীচে দেওয়া Click Here বিকল্পে ক্লিক করে সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
স্টেপ-২: হোম পেজে যাওয়ার পর আপনাকে স্টেকহোল্ডার অপশন দেখতে হবে। তারপর তাতে ক্লিক করে আপনি IAY/PMAYG সুবিধাভোগীর বিকল্প পাবেন, তাতে ক্লিক করুন।
স্টেপ-৩: আপনি রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখতে পাবেন এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরে প্রবেশ করে নতুন তালিকায় আপনার নামটি চেক করতে পারেন।
স্টেপ- ৪: অ্যাডভান্সড সার্চ অপশনে ক্লিক করার পর, রাজ্য, জেলা, ব্লক, পঞ্চায়েত, আপনার নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর, বিপিএল নম্বর ইত্যাদি বিকল্পগুলি আপনি দেখতে পাবেন। তারপর সার্চ বিকল্পটি দেখতে পাবেন এবং ক্লিক করে আপনি আপনার তথ্য সার্চ করতে পারেন। এরপর আবাস যোজনাতে নয়া তালিকায় নিজের নাম দেখতে পাবেন।
টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। রবিবার শপথ গ্রহণের পর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অতিরিক্ত ৩ কোটি বাড়ি বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালে শুরু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্কিম। এই স্কিমের আওতায় শহর এবং গ্রামের যে সব দরিদ্র মানুষের নিজস্ব বাড়ি নেই, তাঁদের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করে দেয় কেন্দ্র সরকার। গত ১০ বছরে ৪.২১ কোটি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। যদি কারও নিজস্ব বাড়ি না থাকে এবং স্কিমের যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করেন, তাহলে তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আবেদন করতে পারেন।
আবেদন করার আগে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্কিমে বাড়ি পাওয়ার জন্য যোগ্যতা এবং সুবিধাগুলো জানা প্রয়োজন। বর্তমানে দুই ধরনের আবাস যোজনা চালু রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ (PMAY-G) এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা আরবান (PMAY-U)। এই প্রকল্পে শুধু যোগ্য দরিদ্র ব্যক্তিদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া নয়, যাঁদের জমি আছে এবং বাড়ি তৈরি করতে চান, তাঁদের আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্কিমে গৃহঋণে ভর্তুকি দেয় সরকার। ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ির আকার এবং আয়ের উপর নির্ভর করে। ব্যাঙ্কগুলি এই প্রকল্পে কম সুদে গৃহঋণ দেয়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্কিমে হোম লোন ২০ বছরের মধ্যে শোধ করতে হয়।
যোগ্যতা: স্কিমের সুবিধা পেতে হলে আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হতে হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীকে হতে হবে ভারতীয় নাগরিক। ১৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ের পরিবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় আবেদন করতে পারেন। তবে পাকা বাড়ি থাকলে সেই ব্যক্তি এই স্কিমে আবেদন করতে পারবেন না। পাশাপাশি পরিবারের কোনও সদস্য সরকারি চাকরি করলে এই স্কিমের সুবিধা মিলবে না। আবেদনের সময় পরিচয়পত্র, ঠিকানার প্রমাণপত্র, আয়ের অনুপাত এবং সম্পত্তির নথি দিতে হবে।
আবেদনের পদ্ধতি: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অনলাইন এবং অফলাইনে আবেদন করা যায়। অনলাইনে আবেদনের জন্য https://pmaymis.gov.in/-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
-প্রথম ধাপ – প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট- https://pmaymis.gov.in/-এ যেতে হবে। -দ্বিতীয় ধাপ – হোমপেজে গিয়ে ক্লিক করতে হবে ‘পিএম আবাস যোজনা’ অপশনে। -তৃতীয় ধাপ – প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করতে হবে।
-চতুর্থ ধাপ – এবার সমস্ত নথিপত্র ঠিক আছে কি না দেখে নিয়ে ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। -অফলাইনে আবেদন করতে নিকটস্থ কমন সার্ভিস সেন্টারে যেতে হবে আবেদনকারীকে।
Just another WordPress site