আবীর ঘোষাল, কলকাতা: ট্রাক মালিক সংগঠনের দাবি, রাস্তায় পুলিশি নির্যাতন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের দাপট, রাজ্যের বালি খাদানগুলিতে ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের দ্বারা হয়রানি ছাড়াও একাধিক ওয়ে ব্রিজে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা আদায়ের বিরুদ্ধে ওই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, তাঁদের দিক থেকে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখা হচ্ছে। রাস্তায় নেমে ধর্মঘট করলে বা ট্রাক আটকানোর চেষ্টা হলে সে ক্ষেত্রে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যদিও ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসার ডাক দিয়েছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। কিন্তু আর নতুন করে আলোচনায় আগ্রহী নয় ট্রাক মালিক সংগঠন।
সর্বভারতীয় সংগঠন ‘অল ইন্ডিয়া মোটর ট্রান্সপোর্ট কংগ্রেস’-ও নৈতিক ভাবে রাজ্যের সংগঠনের ওই ধর্মঘট এবং ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি সমর্থন করেছে। বিভিন্ন রাজ্যের সংগঠনের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছে, ধর্মঘট চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গে ট্রাক না পাঠাতে। অন্ধ্রপ্রদেশের দু’টি সংগঠনও পশ্চিমবঙ্গের ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে ট্রাক পাঠাবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষ। এর জেরে রাজ্যে মাছ, ডিম, বিভিন্ন কাঁচা আনাজ এবং ফলের পাইকারি বাজারে জোগানে টান পড়তে পারে। বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর জোগানও ব্যাহত হতে পারে।
পরিবহণ শিল্প বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন। খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে ট্রাক মালিকরা ইএমআই দিতে পারছেন না, বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে, অর্ধেক গাড়ি কাটাইয়ে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। বহু গাড়ির মালিক সবজি বিক্রি করছে। তাদের মতে, ‘‘আমাদের সংসার কীভাবে চলবে। আমাদেরও সংসার রয়েছে, আমাদেরও পুজো রয়েছে। আমাদের দেওয়ালের পিঠ ঠেকে গিয়েছে। এছাড়া আমাদের কোনও উপায় ছিল না। সরকার যদি আগে থেকে ভাবত তাহলে এই পরিস্থিতি হতে না। ধর্মঘট হচ্ছে বুধবার, বৃহস্পতি ও শুক্রবার। ওই ৭২ ঘণ্টা চাক্কা জ্যামের পর আমরা ঠিক করব পরবর্তীতে কী হবে। মোট ৭ লক্ষ ট্রাক ধর্মঘটে যাচ্ছে। মানণীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমাদের সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। একদিকে পুলিশের জুলুম আর অন্যদিকে বিএলআরও-র জুলুম। এর জন্যই এই পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।’’