অভিনেত্রী এবং নতুন সাংসদ কঙ্গনা রানাওয়াত চিরকাল খুব একরোখা, সাহসী৷ তাঁর নির্ভীক চরিত্রের জন্য সবসময় তিনি সকলের কাছে পরিচিত৷ একেবারে নিজের চেষ্টায় তিনি বলিউডে নিজের জায়গা তৈরি করেছেন৷ যথেষ্ট জনপ্রিয় তিনি৷ কিন্তু সেই সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বিতর্কেও৷ মূলত ব্যক্তিগত জীবনে কয়েকটি বিতর্ক নিয়ে খবরের শিরোনামে চলে আসেন কঙ্গনা৷ এমনকি ব্যক্তিগত জীবনের এই টানাপোড়েন পৌঁছেছে আদালত পর্যন্ত৷খ্যাতির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে কঙ্গনার ব্যক্তিগত জীবনে নাম জড়িয়েছে আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে৷ তারপরই ছিলেন শেখর সুমনের ছেলে অধ্যায়ন সুমন এবং পরবর্তীতে সুপারস্টার হৃতিক রোশনের সঙ্গে চলে তাঁর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব৷ এই ৩ অভিনেতার সঙ্গেই নায়িকার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে গুঞ্জন৷ কিন্তু সেই সম্পর্ক শেষে কাঁটার মতো বিঁধতে থাকে৷ এরফলে কঙ্গনার কর্ম খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও এই ৩জনের কেরিয়ার বেশ বেগ পায়৷বিদেশি এক ডাক্তার এবং বিজ্ঞানী নিকোলস লাফারটির সঙ্গে কঙ্গনার সম্পর্ক ছিল বলে জানা গিয়েছে৷ এ কথা নিজেও স্বীকার করেন অভিনেত্রী৷ সিমি গারেওয়ালের শো-তে এই নিয়ে মুখ খোলেন তিনি৷ কঙ্গনা জানান যে তাঁদের মধ্যে লং ডিসট্যান্স রিলেশন ছিল৷ তবে এক সময় তাঁরা দু’জনেই সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন৷ ভৌগলিক দূরত্ব এর জন্য দায়ী বলেও মত কঙ্গনার কাছের মানুষদের৷জীবনের শুরুতে বয়সে অনেকটা বড় আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় কঙ্গনার রানাওয়াতের৷ তাঁদের মধ্যে ২০ বছরের ফারাক ছিল৷ তাঁরা একে অপরের প্রেমে পড়েন৷ সেই সময় আদিত্য বিবাহিত এবং তাঁর সন্তানও ছিল৷ তবে কঙ্গনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও আদিত্য তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করতেন এবং ঘরে আটকে রাখতেন বলে পরে অভিযোগ করেন কঙ্গনা৷যদিও কঙ্গনার সব অভিযোগ মিথ্যে বলে জানান আদিত্য৷ তিনিও আরও বলেন যে কঙ্গনার এ ধরনের অভিযোগের জন্য তাঁর ও পরিবারের মানহানি হয়েছে এবং নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷এরপর রাজ ২ ছবির শ্যুটের সময় ছবির নায়ক অধ্যয়ন সুমনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় কঙ্গনার৷ কেরিয়ারে তখন অনেকটা উন্নতি করেন কঙ্গনা এবং ব্যক্তিগত জীবনেও স্থিতিশীল হতে চাইছিলেন তিনি৷ তবে অধ্যয়নের বাবা শেখর তাঁদের সম্পর্ক পছন্দ করেননি৷ অধ্যয়নও অভিযোগ করেন কঙ্গনা তাঁর উপর কালা জাদু করতেন এবং শারীরিক নির্যাতনও করতেন৷ তবে এসব কথা অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দেন কঙ্গনা৷এরপর সম্ভবত সবথেকে বেশি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কঙ্গনা৷ তাঁর নাম জড়ায় হৃত্বিক রোশনের সঙ্গে৷ কৃষ ৩ ছবির শ্যুটিং-এর সময় এই ঘটনার সূত্রপাত৷ কঙ্গনা দাবি করেন যে হৃত্বিক তাঁর প্রেমে পড়েন৷ নিয়মিত রোম্যান্টিক কথোপকথন হত তাঁদের৷ তবে কঙ্গনা বিয়ের কথা বলতেই হৃত্বিক তা অস্বীকার করেন৷ এরপরই কঙ্গনার দাবি যে তিনি সম্পর্ক আর এগোতে চাননি৷ যদিও পুরো ঘটনাই নাকি কঙ্গনার মনগড়া কথা, তা জানান হৃত্বিক৷ কঙ্গনার এই ধরনের কথায় তাঁর মানহানি হয়েছে বলে মামলাও করেন রোশন পরিবাররে সুপারস্টার৷এর পাল্টা দাবি করে হৃত্বিক বলেন যে কঙ্গনা নিয়মিত তাঁকে ইমেল পাঠিয়েছেন এবং তিনি সাড়া দেননি বলে জনসমক্ষে তাঁকে আপবাদ দিচ্ছেন বলে জানান হৃত্বিক৷ দাবি ও পাল্টা দাবির মধ্যে সরগরম হয় বলিউডের পরিবেশ৷এছাড়াও করণ জোহরের বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগেন কঙ্গনা৷ তিনি বলেন যে করণ শুধুমাত্র স্টারদের ছেলে মেয়েকে কাজের সুযোগ করে দেন৷ এবং এই নিয়ে বহুদূর বিতর্কের জল গড়ায়৷ তারপর থেকে কঙ্গনা কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন৷ তবে তিনি নিজের মতো করে একের পর এক সিনেমা করতে থাকেন৷তবে এবার একেবারে নতুন পথে হাঁটতে চলেছেন কঙ্গনা৷ তিনি এখন মান্ডি লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ৷ জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কাজ করতে চান, এবং মাল্টি টাস্কিং-এ বিশ্বাসী নন তিনি৷ ফলে এক সময় একটি কাজের পক্ষে কঙ্গনা৷ তাহলে কি বলিউডকে এবার বিদায় জানানোর পালা, অন্তত আগামী ৫ বছর সংসদেই দেখা যাবে তাঁকে? এর উত্তর সময়ই দেবে৷
