আগরতলা: রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজির গড়েছে ত্রিপুরা। যখনই কোনও সমস্যা আসে তখনই সবাই এক সঙ্গে মিলে মোকাবিলা করার মতো উদাহরণ সারা দেশে তৈরি করেছে ত্রিপুরা। বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সকল অংশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছেন।
আগরতলার জ্যাকশন গেট এলাকার একদন্ত সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড সাহা রাজ্যের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৯ অগাস্ট থেকে রাজ্যে ২৪ অগাস্ট পর্যন্ত যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, এমন বৃষ্টিপাত আমরা আর কখনও দেখিনি। চারিদিকে শুধু বন্যা আর বন্যা। যে কারণে ভূমিধ্বস, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, কৃষি, উদ্যান ক্ষেত্র সবকিছু ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছে। এধরণের ভারী বৃষ্টিপাত ত্রিপুরার ইতিহাসে আর কখনও দেখা যায়নি।
সাব্রুম-সহ দক্ষিণ জেলায় প্রচণ্ড পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। যেটা এরআগে প্রত্যক্ষ হয় নি। ৪৯৩.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, যাতে এই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ করা সম্ভব হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাদের সর্বতোভাবে সহায়তা করেছেন। আমি নিজেও রাজ্যের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মনিটরিং করেছি। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সমস্ত আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করি। পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে রূপরেখা তৈরি করা হয়। পরে আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে গোটা বিষয় সম্পর্কে অবহিত করি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় চারটি হেলিকপ্টার, এনডিআরএফের অতিরিক্ত বাহিনী, রাবার বোট সহ আনুষাঙ্গিক যাবতীয় সাজসরঞ্জাম পাঠিয়েছেন তিনি। এসডিআরএফ থেকে শুরু করে ভলান্টিয়ার, আপদামিত্র সহ সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে বন্যা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কাজ হয়েছে।
এর পাশাপাশি জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষও দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছেন। যেটা আগে আমরা প্রত্যক্ষ করি নি। মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে মানুষ সাধ্যমতো আর্থিক অনুদান প্রদান করছেন। ড সাহা বলেন, যখনই কোনও সমস্যা আসে সবাই এক সঙ্গে মিলে মোকাবিলা করার মতো উদাহরণ তৈরি করেছে ত্রিপুরা। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে স্বেচ্ছা রক্তদানের গুরুত্বও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সুস্থ ও সবল দেহের অধিকারী যারা এখনো রক্তদানে কুণ্ঠিত রয়েছেন তারা যাতে কোন সংশয় ছাড়া রক্তদানে এগিয়ে আসেন। আমরা সবাই জানি রক্তদান মহৎ দান। এই দানের কোন বিকল্প হয় না। ১৮ থেকে ৬০ বছর এবং যারা নিয়মিত রক্তদান করেন তারা ৬৫ বছর পর্যন্ত রক্তদান করতে পারেন। রক্তদান করলে নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও অবগত হতে পারেন মানুষ।