কলকাতা: অগ্নিমূল্য বাজার। সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে সাধারণ শাকসব্জি৷ কেন হচ্ছে এই অবস্থা? এখন তো আলাদা করে ‘বাজার দর’ নিয়ে খোঁজখবর রাখাও ভুলতে বসেছেন মানুষ৷ পকেটে যা থাকছে, তাই দিয়েই যতটুকু হয়, ততটুকু কিনেই কুলিয়ে নিচ্ছেন মানুষ৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টি না হওয়ার ফলে, চাষের ক্ষেত্রে জলের অভাব তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, প্রচণ্ড গরমের জন্য, মাঠে চাষের শ্রমিক অমিল।
অথচ, এই প্রচণ্ড গরমের মরসুমে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চর্বি ও প্রাণীজ প্রোটিন একটু কম খেতে। সে জায়গায় শাক-সব্জি বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিলেও, সেখানেও রয়েছে সমস্যা৷
বাজারে সাধারণ সব্জি থেকে আলু পেঁয়াজ দামে চড়া। উচ্ছে ১২০ টাকা কেজি ঢেঁড়স ৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজির নীচে নেই। পেঁয়াজ ৩২ -৪০ টাকা কেজি। এর মধ্যে বাজারে খুচরো বিক্রেতারা ক্রেতাদের মন ভোলানোর মত করেই, কেজিতে নয়, ১০০ গ্রাম, নাহলে ২৫০ গ্রামের দাম বলছেন বিক্রেতারা।
সাধারণ ক্রেতারাই সেই মতো প্রতিদিনের বাজেট অনুযায়ী সব্জি কিনছেন। পরিসংখ্যান বলছে, আগের থেকে বর্তমানে পরিবার পিছু সব্জি খাওয়ার পরিমাণ কমেছে। এছাড়াও, সবজি চাষের জমি কমেছে। যার ফলে আগের তুলনায় অনেক শতাংশ সবজি উৎপাদন কম হচ্ছে। তারপর অত্যধিক গরমে সবজির ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে। চড়া রোদে মাঠ ফাটছে।
পরিবেশবিদদের বক্তব্য, বছরের পর বছর পুকুর ভরাট এবং নদী খাল ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে, জলস্তর নীচে নেমেছে। যার ফলে চাষের অনুপযোগী হয়ে উঠছে মাটি এবং অভাব হচ্ছে চাষের জলের। যার ফলে সবজি উৎপাদন কমেছে, সঙ্গে দাম বেড়েছে।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ টাস্কফোর্সের সদস্য এবং হর্টি কালচারের ডিরেক্টর কমল দে বলেন, ‘‘অত্যধিক চড়া রোদের তাপ এবং গরমের জন্য সবজির গাছের যেরকম ক্ষতি হচ্ছে। ফুল শুকিয়ে যাওয়ার জন্য ফল আসছে না। বৃষ্টি যদি অতি শীঘ্র না আসে,তাহলে আসছে কয়েকদিন পরেই বেশ কিছু সবজি বাজারে পাওয়া যাবে না। তার সঙ্গে অন্যান্য সবজিগুলির আকাশ ছোঁয়া দাম হবে।’’
আশঙ্কা, এমনটা চলতে থাকলে বাজার দর নাগালের বাইরে যাবে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের খরচও বাড়ছে। সব মিলিয়ে আগে চাষিদের চাষ করতে যে খরচ পড়ত, এখন তার দ্বিগুণ খরচ পড়ছে। যার ফলে বাজারে সবজির দাম নাগালের বাইরে।