গাড়িতে তেল ভরছেন টুম্পা সিংহ

Bankura News: একমাত্র মেয়েকে সফল করে তোলার স্বপ্ন! পেট্রোল পাম্পে দিনরাত খেটে চলেছে মা

বাঁকুড়া: নিজের ন’বছরের মেয়েকে ঝকঝকে একটা ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পেট্রোল পাম্পে কাজ করছেন ২৭ বছরের মা। বাঁকুড়ার তীব্র দাবদাহ, গনগনে আগুন ছুটেছে বেশ কিছুদিন। এবার পালা বৃষ্টির। তবে গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন বাসে করে বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগর পেট্রোল পাম্পে কাজ করতে আসছেন টুম্পা সিংহ। মাঝে মাঝে এই পেট্রোল পাম্পেই মেয়েকে নিয়ে আসেন টুম্পা। এখানেই বসে পড়াশোনা করে টুম্পার কন্যা আয়ুশী সিংহ। কেন এই কাজ করছেন টুম্পা? পেট্রোল পাম্পের চাকরি করছেন বলে কি সমাজের কাছে কোনও কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে? উত্তরে টুম্পা বলেন, “বাড়িতে বাবা মা রয়েছেন, আয়ূষীকে বড় করে তোলাই আমার লক্ষ। কষ্ট হলেও আমাকে কাজ করতে হবে। সবাই মোটামুটি মুখ চেনা হয়ে গিয়েছে। মানুষ আমার কাজকে ছোট না করে বরঞ্চ উৎসাহ যোগায়।”

পেট্রোল পাম্প এর মালিক নিবেদিতা বিশ্বাস জানান, টুম্পার বাড়িতে তাঁর বাবার দোকান থেকে যা আয় হয়, তাতে খাবার খরচই ভাল ভাবে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করার জন্য টুম্পা কাজের সন্ধানে আসেন এই পেট্রোল পাম্পে। তার পর থেকেই কাজ শুরু করেছেন টুম্পা। নিবেদিতা বলেন , “আমি এই ফাইটিং স্পিরিটটাকে কুর্নিশ জানাই।”

আরও পড়ুন: রাতারাতি বিপদে ১৫২ পরিবার! বেআইনি ভাবে নির্মিত আবাসন ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের

আরও পড়ুন: চতুর্থ দফায় নজর কাড়বে এই জেলার ভোট, বাঙালি-অবাঙালি মিশ্রণে নির্ধারক একাধিক সমীকরণ

একজন মা পেট্রোল পাম্পে কাজ করছেন। সেই ছবি যেন আরও বেশি করে অনুপ্রেরণা যোগায় মহিলাদের। প্রায় নিয়মিত গোবিন্দনগর এলাকার এই পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে আসেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং স্টাফ নিবেদিতা খাঁ। তিনি বলেন, “এত প্রতিকূলতার মধ্যেও জীবন যুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন এই দিদি। এই লড়াই সত্যিই প্রশংসনীয়।”

১২ মে মাতৃ দিবস। মায়ের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয় এবং সেই চেষ্টা করাও বৃথা। একটি বট বৃক্ষের মত মা তাঁর সন্তানকে লালন পালন করে বড় করে তোলেন। বাঁকুড়ার টুম্পা সিংহ যেন সেই সব মেয়েরই জ্বলন্ত উদাহরণ।

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়