পাঁচমিশালি Knowledge Story: ভারতের কোন রাজ্যে ট্রেন যায় না বলুনতো! সেখানে না আছে কোনও রেললাইন, না স্টেশন…তাহলে যাত্রীরা কোথা থেকে ওঠেন ট্রেনে? Gallery March 24, 2024 Bangla Digital Desk ভারতে রয়েছে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। কিন্তু, তা সত্ত্বেও এই দেশেই এমন এক রাজ্য রয়েছে, যেখানে কিন্তু, এখনও পৌঁছয় না ট্রেন৷ সেখানে কোনও রেললাইন তো নেই-ই, এমনকি, নেই কোনও স্টেশনও৷ এই রাজ্যের মানুষকে ট্রেন ধরার জন্য পৌঁছতে হয় পড়শি রাজ্যে৷ আমেরিকা, চিন এবং রাশিয়ার পরে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক রয়েছে ভারতের। ভারতীয় রেলকে দেশের পরিবহন ব্যবস্থার মেরুদণ্ডও বলা হয়। প্রতিদিন প্রায় ২.৪৫ কোটি যাত্রী তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছনোর জন্য ট্রেনের উপরে ভরসা করেন। প্রতি বছর ৮০০ কোটিরও বেশি যাত্রী রেল সংরক্ষণের সুবিধা ভোগ করে থাকেন। শুধু তাই নয়, ইন্ডিয়ান রেলওয়ে এখনও নিজের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে চলেছে। কিন্তু, দেশে এমন একটি রাজ্য রয়েছে যেখানে এখন পর্যন্ত কোনও ট্রেন চলে না। এখনও অবধি সেখানে কোনও রেলওয়ে ট্র্যাক স্থাপন করা হয়নি বা এই রাজ্যে কোনও রেলস্টেশন নেই। শুধুমাত্র ন্যাশনাল হাইওয়ে-১০ এই রাজ্যটিকে ভারতের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করে রেখেছে। আমরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমের কথা বলছি। স্বাধীনতার এত বছর পরও এখানে ট্রেন পরিষেবা নেই পশ্চিমবঙ্গের পড়শি রাজ্য সিকিমই ভারতের একমাত্র রাজ্য, যে রাজ্যে এখনও পৌঁছয়নি রেল৷ হিমালয়ের কোলে থাকা ছোট্ট এই রাজ্যের পুরোটাই পাহাড়৷ তবে গত কয়েক বছরে এগিয়েছে ট্রেনের কাজ৷ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিকিমের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন রংপোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কৌশলগত দিক থেকেও এই রেলওয়ে স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই রেলস্টেশনের কাজ শেষ হলে গ্যাংটক থেকে নাথুলার সিকিম-চিন সীমান্ত পর্যন্ত রেলওয়ে তৈরি হবে। বর্তমানে, দূরে কোথাও যেতে হলে সিকিমের বাসিন্দারা পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ি পৌঁছে, তবে ট্রেন ধরেন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সিকিমের দূরত্ব ১৮৭ কিলোমিটার এবং শিলিগুড়ি থেকে ১৪৬ কিলোমিটার। সিকিমে রেললাইন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছিল ২০২২ সালে। প্রকল্পের অধীনে, সেবক এবং রংপোর মধ্যে প্রায় ৪৪.৯৬ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হচ্ছে। তার মধ্যে ৩৮.৬৫ কিলোমিটার লাইন টানেলের মধ্য দিয়ে যাবে। এ ছাড়া সেতুর মধ্যে দিয়ে যাবে ২.২৫ কিলোমিটার। ৪.৭৯ কিমি অংশ থাকবে স্টেশন ইয়ার্ডের কাটিং-ফিলিংয়ে। সেবক এবং রংপোর মধ্যে রেললাইনটি ১৪টি টানেলের মধ্যে দিয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘতম টানেলটি হবে ৫.৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সবচেয়ে ছোট টানেলটি হবে ৫৩৮ মিটার। সেবক ও রংপো সহ এই রেলপথে পাঁচটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে চারটি স্টেশন সেবক, রেয়াং, মেলি এবং রংপো খোলা থাকবে। একই সঙ্গে তিস্তা বাজার রেলস্টেশন হবে আন্ডারগ্রাউন্ড। পশ্চিমবঙ্গের সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ট্রেন হয়ে গেলে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে পৌঁছনো হয়ে যাবে আরও সহজ। মাত্র ২ ঘণ্টাতেই পৌঁছনো যাবে রংপো থেকে গ্যাংটকে।