পাঁচমিশালি Knowledge Story: পাকিস্তানের থেকে এই একটা গ্রাম পাওয়ার জন্য নিজের ১২টা গ্রাম দিয়ে দিয়েছিল ভারত! কেন জানেন? কারণ এখনও লুকিয়ে সেই গ্রামের মাটিতে Gallery March 25, 2024 Bangla Digital Desk গ্রামের নাম হুসেইনিওয়ালা৷ পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার ফিরোজপুর শহর থেকে একটু দূরেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এই গ্রাম৷ শতদ্রু নদীর এপাশে হুসেইনাওয়ালা আর ওপাশে গন্ডা সিং ওয়ালা৷ দুই তীরে দুই গ্রাম৷ হুসেইনিওয়ালা পড়ে ভারতে আর গন্ডা সিং ওয়ালা পাকিস্তানে৷ আর এর মাঝের মাটিতেই লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস৷ শোনা যায়, স্বাধীনতার আগে যখন দেশভাগের প্রস্তুতি চলছে, তখন শতদ্রু তীরের এই হুসেইনিওয়ালা গ্রাম পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তানে৷ কিন্তু, ভারত তা চায়নি৷ অনেক দর-দস্তুর করে এই একটা গ্রামের বদলে পাকিস্তানকে পঞ্জাবের ১২টা আরও গ্রাম ছেড়ে দিয়েছিল ভারত৷ কেন জানেন? শতদ্রু নদীর তীরে এই গ্রামের নামকরণ হয়েছিল এখানকার স্বনামধন্য পীর গুলাম হুসেইনিওয়ালার নাম৷ তাঁর সমাধি এখনও এখানকার বিএসএফ কম্পাউন্ডে গেলে দেখতে পাওয়া যায়৷ এই গ্রামের ঠিক পাশেই রয়েছে পাকিস্তানের গ্রাম গন্ডা সিং ওয়ালা৷ শোনা যায় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বীর ভারতীয় শিখ সৈনিক গন্ডা সিং দত্তের নামে নামকরণ হয়েছিল ওই গ্রামের৷ কিন্তু, আরও একটি গুরুতর কারণে এই হুসেইনিওয়ালা গ্রাম ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ৷ জানা যায়, ভগৎ সিং, সুখদেব এবং রাজগুরুকে লাহৌর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি দেওয়ার পরের দিন, ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় হুসেইনিওয়ালা গ্রামে শতদ্রু নদীর তীরে, লুকিয়ে তাঁদের দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনী৷ কিন্তু, ঘটনার খবর পৌঁছে যায় হুসেইনিওয়ালা গ্রামের মানুষের কাছে৷ তাঁরা সদলবলে এসে জড়ো হন শতদ্রুর তীরের হুসেইনিওয়ালার শ্মশানে৷ এতজন গ্রামবাসীকে একসঙ্গে আসতে দেখে ভয়ে তিন বিপ্লবীর দেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ব্রিটিশ বাহিনী৷ এরপরে, গ্রামবাসীরাই সসম্মানে তিন দেশপ্রেমিকের সৎকার করেন সেখানে৷ আজও প্রতি বছর ২৩ মার্চ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের তিন নায়ক – ভগত সিং, সুখদেব এবং রাজগুরুর উত্তরাধিকারকে সম্মান জানাতে পঞ্জাবের ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের এই গ্রামে মানুষ জড়ো হন। এখানেই তৈরি করা হয়েছে ‘Hussainiwala National Martyrs Memorial’ও৷