লোকসভা প্রচারে তপসিলির সংলাপ

TMC Lok Sabha Election: ৩ সপ্তাহের মধ্যে ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ! লোকসভা প্রচারে তপসিলির সংলাপে জোর তৃণমূলের

কলকাতা: ৩ সপ্তাহ, ৪২টি লোকসভা কেন্দ্র, ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ যুগান্তকারী তপশিলির সংলাপ দ্বারা যুক্ত হয়েছে বলে দাবি করল তৃণমূল কংগ্রেস। শুরু হওয়ার ৩ সপ্তাহের মধ্যে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তপশিলির সংলাপ রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যজুড়ে ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষের কাছে গিয়ে পৌঁছেছে এবং ১৫,০০০-এরও বেশি সভার আয়োজন করেছে।

তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যের তপশিলি জাতি এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের চাহিদা এবং সমস্যার সমাধানই মূল লক্ষ্য এই প্রচার অভিযানের। তাঁদের কথা শুনতে এলাকায় যাচ্ছেন নেতারা। বিজেপি সরকার তাঁদের ওপর সারা ভারতবর্ষ জুড়ে কী ভাবে অত্যাচার করছে, তাঁরা কী ভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন, সেই বিষয়েই আলোকপাত করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | Lok Sabha Election 2024 West Bengal

গত ১২ মার্চ কলকাতার নজরুল মঞ্চ থেকে নতুন প্রচার অভিযানের ঘোষণা করেছিল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রচার অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘তপশিলির সংলাপ’।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি ইতিমধ্যে রাজ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক অঞ্চলগুলিতে মানুষ এই প্রচার অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।

“গ্রামের এক বৃদ্ধ রাজেশ মুর্মুর কথায় সমাজের কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ আমাদেরকে অস্পৃশ্য রূপে দেখত, সেই জায়গায় একটি রাজনৈতিক দল আমাদের জন্য কর্মসূচি করছে এটা সম্পূর্ণ জাতির জন্য গর্বের বিষয়”।

ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র তার বক্তব্যে বলেছেন, “আমাদের দলের কর্মীরা তপশিলি সম্প্রদায়ের লোকেদের বাড়িতে যাচ্ছেন, সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি আছে সেইগুলো ঠিক মতো পাচ্ছে কিনা দেখছেন। আমাদের রাজ্যের জনদরদি মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই পিছিয়ে পড়া তপশিলি সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

অন্যদিকে বিজেপি শাসিত রাজ্যে উত্তরপ্রদেশের দলিত কন্যাকে ধর্ষণ করা হয়। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। শেষ সময়ে তাঁর মা-বাবা একবারও তাঁর মুখটা দেখতে পায়নি। কয়েক হাজার পুলিশের ঘেরাটোপে তার অন্তিমকার্য সম্পন্ন করা হয়। এই তো বিজেপির উন্নয়ন। অন্যদিকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সর্বদা চেষ্টা করছেন কী ভাবে পিছিয়ে পড়া তপশিলিদের জন্য আরও প্রকল্পের সূচনা করবেন। পাশাপাশি কেন্দ্রের জমিদাররা বাংলার করের টাকা তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছেন অথচ বঞ্চনা করে ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে শুরু করে আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। এর জবাব আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষকে একত্রিত ভাবে ব্যালট বাক্সে দিতে হবে।”

তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী তপশিলির সংলাপ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে পুরুলিয়া জেলার মানবাজার বিধানসভা অন্তর্গত পুঞ্চা ব্লকের বাগদা অঞ্চলে পৌঁছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথোপকথনের সময় বলেন, “রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার আসার পর থেকে সমগ্র জঙ্গলমহল জুড়ে আমাদের তপশিলি ভাই বোনদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানা উন্নয়নমুখী প্রকল্প চালু করেছে। তাই আমরা চাই আগামী দিনেও এই প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষ পেতে থাকুক। সেই উদ্দেশ্যেই দিদির হাত শক্ত করার জন্য পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে শান্তিরাম মাহাতোকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন। যাতে এই রাজ্যের মানুষের বঞ্চনার কথা শান্তিরাম মাহাতো দিল্লিতে গিয়ে তুলে ধরতে পারে।”

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে প্রচার অভিযান শুরু করেছে তাতে তপশিলি সমাজকে তৃণমূল কংগ্রেসের বার্তা, বিজেপি দেশজুড়ে তাঁদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে। তপশিলি জাতির প্রতি বিজেপির নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। কিন্তু বাংলায় তপশিলি জাতি-উপজাতি রক্ষা করছে শাসক শিবির এবং এটা করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর।