হেলমেট পরলে চুল ঝরে যায়? আসল সত্যিটা কী? উত্তর দিলেন বিশেষজ্ঞরা

কলকাতা: মোটরসাইকেল-সহ দু’চাকার যান চালানোর ক্ষেত্রে মাথায় হেলমেট পরাটা অত্যন্ত জরুরি। এতে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে চলে সচেতনতামূলক প্রচার।

সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পুণেতেও শুরু হয়েছে এই সচেতনতা। পুণে সিটির কমিশনার অফ পুলিশ অমিতেশ কুমার জানিয়েছেন যে, সেখানে দু’চাকার যান চালানোর ক্ষেত্রে হেলমেট পরা শীঘ্রই বাধ্যতামূলক হতে চলেছে।

আর এই ঘোষণা শুনেই রীতিমতো ঘুম উড়েছে দু’চাকার যান ব্যবহারকারীদের। কারণ বাইক চালকদের দাবি, হেলমেট পরলে তাঁদের চুলের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।

আরও পড়ুন- আইপিএল এবার জিতবে কারা? রিকি পন্টিং-এর বড় ভবিষ্যদ্বাণী, নামটা অবাক করবে

বাইক আরোহীদের এহেন উদ্বেগের কথা শুনে সংবাদমাধ্যমের তরফে পুণের কেশ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। হেলমেট এবং চুল ঝরার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল।

সেই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা যা যা বললেন, সেটাই তুলে ধরা যাক। চুল ঝরার সমস্যার পিছনে একাধিক কারণ থাকে। আসলে জিনগত, হরমোনজনিত এবং খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত কারণেই মূলত হেয়ার ফল হয়।

এছাড়াও লাইফস্টাইল এবং পরিবেশজনিত কারণ তো রয়েছেই। তবে চুল ঝরার সঙ্গে হেলমেট পরার কোনও যোগ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা এমনিতেই চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যায় জেরবার, তাঁদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। যাতে হেলমেট ব্যবহার করার সময় তাঁদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন চুলের স্বাস্থ্যের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।

ডার্মাটোলজিস্ট এবং হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ডা. নীতিন জৈন বলেন, চুল ঝরা অথবা চুলের ক্ষতির সঙ্গে হেলমেটের সরাসরি কোনও যোগ নেই। যদি হেলমেট খুব আঁটোসাঁটো অথবা অতিরিক্ত ভারি হয়, তাহলে তা স্ক্যাল্পের উপর চাপ ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন- ১৩ বছর ধরে ‘এই’ ক্রিকেটার কেকেআরে, গম্ভীরের বাজি! যেদিন খেলেন, সবাই তাকিয়ে দেখে

চুলের গোড়ায় সঠিক ভাবে রক্ত সরবরাহ হয় না। যার ফলে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়। যাঁদের সমস্যা রয়েছে, হেলমেট পরলে তাঁদের চুল ঝরে পড়ার সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

তবে চুলের স্বাস্থ্যের সঙ্গে হেলমেটের যোগ প্রসঙ্গে সাবধান করেছেন ডা. পল্লবী আহিরে-শেলকে। যিনি একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন।

ডা. পল্লবীর বক্তব্য, কেউ যদি ভিজে চুলে হেলমেট পরেন, কিংবা ভিজে-স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় হেলমেট রাখেন অথবা হেলমেট পরে মাথায় অতিরিক্ত ঘাম হয়, তাহলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক জন্মাতে পারে। যা চুলের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথাবার্তায় ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়ার কথাও উঠে এসেছে। নির্দিষ্ট কিছু হেয়ারস্টাইল এবং সঠিক মাপের হেলমেট ব্যবহার না করার কারণে ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আঁটোসাঁটো করে বাঁধা পনিটেল, বিনুনি ইত্যাদির মতো হেয়ারস্টাইলের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে চুলের উপর চাপ পড়ে। যার জেরে ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া হতে পারে।

এটা প্রতিরোধ করার উপায় কী? ডা. পল্লবী বলেন, হেলমেটের সঠিক হাইজিন বজায় রেখে যত্ন নিতে হবে। যাতে এর ভিতরের অংশটা যেন স্যাঁতস্যাঁতে এবং আঠালো না থাকে। সপ্তাহে অন্তত একবার হেলমেটের ভিতরের অংশ পরিষ্কার করা আবশ্যক। তাই শুষ্ক এবং হাওয়া চলাচল করতে পারে, এমন জায়গাতেই হেলমেট রাখা উচিত।