জলের বোতল হাতে পড়ুয়ারা 

East Bardhaman News: অভিনব উদ্যোগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের, চালু হল ওয়াটার বেল ব্যবস্থা 

পূর্ব বর্ধমান: তীব্র দাবদাহে পুড়ছে গোটা রাজ্য। তাই পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পূর্ব বর্ধমানের এই স্কুলে শুরু হয়েছে ওয়াটার বেল। গ্রীষ্মের দাবদাহে পড়ুয়াদের সুস্থ রাখতেই স্কুলের এই উদ্যোগ। রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে গ্রীষ্মের মরশুম। তাপপ্রবাহের জেরে নাকাল জেলা তথা রাজ্যের মানুষ। তীব্র এই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কথা মাথায় রেখেই দেশ তথা রাজ্যের একাধিক বিদ্যালয়ে চালু করা হয়েছে ওয়াটার বেল সিস্টেম। পূর্ব বর্ধমান জেলার এক স্কুলেও এবার দেখা গেলো সেই ব্যবস্থা।পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া-২ ব্লকের অন্তর্গত একটি গ্রাম আউড়িয়া। এই গ্রামের আউড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে শুরু করা হয়েছে ওয়াটার বেল। নির্দিষ্ট সময় অন্তর শিক্ষকেরা বললেই ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে জল পান করছে পড়ুয়ারা।

এতে করে প্রবল গরমে তাদের শরীরে বজায় থাকছে জলের পরিমাণ। এই প্রসঙ্গে আউড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রণব কুমার দত্ত বলেন, “বাচ্চাদের জলের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আমার বিদ্যালয়ে ওয়াটার বেল চালু করা হয়েছে। বিদ্যালয় চালু হওয়া থেকে শুরু করে একদম শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর শিক্ষকরা জল খাওয়ার জন্য বলবে এবং পড়ুয়ারা দু ঢোক করে জল খাবে। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে তারপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ওয়াটারবেল ব্যবস্থা চালু হওয়ার কারণে অভিভাবকরাও যথেষ্ট খুশি হয়েছেন।” আউড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ১৪৮। প্রশাসনের নির্দেশে ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে শুরু হয়েছে মর্নিং স্কুল। তবে শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন মর্নিং স্কুল হলেও স্কুল ছুটির সময় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করে পড়ুয়ারা। জলের বোতল সঙ্গে আনলেও, জল পান করে না অনেক পড়ুয়াই।

আরও পড়ুন : প্রতিশ্রুতি মিলেছে তবে কাজ এখনও বাকি, হতাশ পাখিরালয়ের মাঝিরা

এমনকি বাড়ি থেকে নিয়ে আসা জল বাড়িতেই ফিরিয়ে নিয়ে যান অনেকে।সেই অভ্যেস দুর করতেই এই পদক্ষেপ স্কুলের তরফে। জানা গিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী রাজ্য উড়িষ্যার একটি স্কুলে ওয়াটার বেল ব্যবস্থা দেখার পরে, নিজেদের স্কুলেও তা শুরু করার কথা মাথায় আসে প্রণব বাবুর। প্রয়োজনে নিজের হাতে জল পান করিয়েও দিচ্ছেন স্কুলের এক শিক্ষিকা।অন্যদিকে, শিক্ষকদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরাও। এই বিষয়ে আউড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, “এটা খুবই ভাল একটা উদ্যোগ। আমার মেয়েও এই স্কুলে পড়ে। তারও জল খাওয়ার অভ্যেস হয়ে গিয়েছে এই নিয়মের জন্য। জল মানুষের জীবন। তাই শিক্ষকদের এই উদ্যোগে আমাদের বাচ্চাদেরও অনেক উপকার হচ্ছে। “

আরও পড়ুন : গরম পড়তে না পড়তেই কিনে খেতে হচ্ছে জল, দূষণ ভুলে কেউ কেউ ভরসা রাখছেন নদীতে

প্রসঙ্গত, গরমের হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসন তথা বিশেষজ্ঞদের তরফে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু নির্দেশিকা। যার মধ্যে অন্যতম হল পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা। পাশাপাশি বাড়ির বাইরে বেরোনো এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে সবাইকেই। সব বয়সের মানুষদের পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। দিনের একটা বড় অংশ শিশুরা বিদ্যালয়ে থাকে।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

তাই সেই সময় তাদের শরীরে জলের পরিমাণ সঠিক রাখতে। এবং জল পানের অভ্যেস গড়ে তুলতে। এই উদ্যোগ কার্যকরী হবে বলে আশাবাদী আউড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষিকা প্রত্যেকেই।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী