বিনোদন মাত্র ১৭ বছর বয়সে ইন্ডাস্ট্রিতে হাতেখড়ি, জুটেছিল বিস্তর প্রত্যাখ্যানও; আজ কয়েকশো কোটি টাকার মালিক এই অভিনেত্রী Gallery April 19, 2024 Bangla Digital Desk রুপোলি দুনিয়া যেন এক স্বপ্নের দুনিয়া। তবে এখানে পায়ের তলার জমি শক্ত করা অতটাও সহজ নয়। আজকের বহু তারকাকেই সেই সংগ্রামের পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। যদিও সকলেই যে সাফল্যের স্বাদ পান এমনটা নয়। কেউ কেউ আবার লড়াই করতে না পেরে চিরতরে হারিয়ে যান স্বপ্নের এই দুনিয়া থেকে। তবে আজ এক সফল অভিনেত্রীর বিষয়ে কথা হচ্ছে, যাঁকে বি-টাউনে নিজের জমি শক্ত করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। বর্তমানে অভিনেত্রীর বয়স ৪৮। তবে ছিপছিপে সুতন্বী দেহকাঠামো এবং অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারিণীকে দেখে তাঁর বয়স ঠাহর করা মুশকিল। নাচে-গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন ভক্তদের হৃদয়। আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। অথচ কেরিয়ারের প্রথম দিকে তাঁকেও প্রচুর প্রত্যাখ্যান এবং অপমানের জ্বালা সহ্য করতে হয়েছে। অনেকেই হয়তো বুঝে গিয়েছেন কার কথা এখানে বলা হচ্ছে। কথা হচ্ছে, বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির। আজ শিল্পা সফল অভিনেত্রীর তকমা পেলেও প্রথম দিকে প্রযোজকদের থেকে জুটেছিল শুধুই প্রত্যাখ্যান। কিন্তু এর পিছনে থাকা কারণ সম্পর্কে কখনওই জানতে পারেননি তিনি। প্রাথমিক পর্যায়ে হতাশার সম্মুখীন হয়েও হাল ছাড়েননি। নিজের স্বপ্ন পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর তাতে সফলও হয়েছেন। অবশেষে নিজের অভিনয়ের ছাপ তিনি ফেলতে পেরেছেন ভক্তদের মনে। একবার ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’-র কাছে নিজের কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কথা তুলে ধরেছিলেন অভিনেত্রী। কর্মজীবনের সূচনা প্রসঙ্গে শিল্পা বলেন, “আমি কালো রোগা এবং লম্বা ছিলাম। স্নাতকপাঠ শেষ করে বাবার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলাম। যদিও আমি আমার মন থেকে নতুন এবং বড় কিছু করতে চেয়েছিলাম। ভাবিনি যে, আমি সেই সুযোগ পাব। কিন্তু মজা করে একটি ফ্যাশন শোয়ে যোগ দিতে গিয়েই যেন সবটা বদলে যায়।” শিল্পা বলে চলেন, “এক ফটোগ্রাফার আমায় দেখেছিলেন এবং আমার ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। আর এভাবেই আমার গ্ল্যামারের দুনিয়ায় প্রবেশ। এর কিছু সময় পরেই প্রথম ছবির অফার আসে। তারপর অবশ্য ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে কেরিয়ারে উত্থান-পতন চলতে থাকে। আসলে অর্থপূর্ণ বিষয়গুলি তো আর সহজে আসে না।” অভিনেত্রীর কথায়, “আমার যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন এসেছিলাম এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তখনও দুনিয়াটাকে জানা হয়নি আর জীবনটও বুঝতাম না।” এরপর তাঁকে হিন্দি বলার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে শিল্পার বক্তব্য, “আমি হিন্দি বলতে জানতাম না। তাই ক্যামেরার সামনে আসতে বেশ নার্ভাস লাগত। কয়েকটি ছবি করার পর এমনটা একটা জায়গায় পৌঁছই যে, মনে হতে থাকে আমার কেরিয়ার শেষ। আমি বহুবার চেষ্টা করতাম ঠিকই, কিন্তু কোথাও না কোথাও ঘাটতি থেকে যেত। আমার মনে আছে, কিছু প্রযোজক ছিলেন, যাঁরা কোনও কারণ ছাড়াই আমায় নিজেদের ছবি থেকে রীতিমতো তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।” এরপর স্মৃতির সরণি বেয়ে অভিনেত্রী তাঁর বিগ ব্রাদার শোয়ের সফরের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, “আমার মনে আছে, বিগ ব্রাদার শো-এ অন্য প্রতিযোগীরা আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন। আমার জন্মভূমি ও দেশের কারণে আমায় সকলের সামনেই হেনস্থা করা হত। ফলে লড়াইটা একেবারেই সহজ ছিল না। আমি ওই হাউজে একাই ছিলাম। কিন্তু আমি টিকেছিলাম। অনেক দূর আসার পর আমি এক পা-ও পিছিয়ে যেতে চাইনি। সব শেষে জয়ী হওয়ার পরে বহু মানুষ আমার প্রশংসা করেছেন। আসলে সেখানে যে সঙ্কল্প এবং উদ্যম প্রদর্শন করেছিলাম, সেটাই আমায় সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি শুধু আমার নিজের জন্য রুখে দাঁড়াইনি, যাঁরা বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন, তাঁদের হয়েও রুখে দাঁড়িয়েছি। আমার জীবনটা ওঠা-পড়ায় ভরা। খুব খারাপ সময় পার করেছি, কিন্তু আবার কখনও কখনও দারুণ জয়ের স্বাদও পেয়েছি। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই উপভোগ করেছি। আর এটাই আমায় আজ বলিষ্ঠ স্বাধীনচেতা মহিলা, গর্বিত অভিনেত্রী, স্ত্রী এবং মা হিসেবে গড়ে তুলেছে।” প্রসঙ্গত ব্যক্তিগত জীবনের দিক থেকেও সফল শিল্পা। ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এই দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে – ভিয়ান ও শামিশা। বর্তমানে শিল্পা শেঠি বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম। এছাড়া সাগর তীরে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বাংলো-সহ বিলাসবহুল সম্পত্তির মালিক তিনি। এমনকী শিল্পার একটি প্রাইভেট জেটও রয়েছে।