দিল্লি: বয়স তার মাত্র দশ বছর৷ সামনের বিশাল লোহার চাটুটার সামনে তাকে যেন আরও ছোট লাগে৷ কিন্তু একরত্তি ওই ছেলেটার বুকের ছাতিটা অনেক চওড়া৷ তাই বাবার মৃত্যুর পর তাঁর রোলের দোকান চালাতে শুরু করেছে দশ বছরের ওই বালক৷
নেট মাধ্যমের সৌজন্যে জসপ্রীত নামে দশ বছরের ওই বালকের গল্প বহু মানুষের নজর কাড়ে৷ তাঁদের মধ্যে অন্যতম শিল্পপতি আনন্দ মহিন্দ্রা৷ জসপ্রীতের সাহস এবং মনের জোর দেখে তিনিও মুগ্ধ৷ আনন্দ মহিন্দ্রার আশ্বাস, জসপ্রীতের পাশে থাকবে মহিন্দ্রা গোষ্ঠী, যাতে বাবার দোকান চালাতে গিয়ে জসপ্রীতের পড়াশোনা না থমকে যায়৷
আরও পড়ুন: প্রকাশিত হল ISC-র ফলাফল, দ্বাদশের ফলে পাশের হারে এগিয়ে মেয়েরা, রাজ্যের ফল কেমন হল?
জসপ্রীতের গল্প প্রথম সামনে আনেন সর্বজিৎ সিং নামে একজন ফুড ব্লগার৷ ইনস্টাগ্রামে তাঁর পোস্ট থেকেই জানা যায়, দিল্লির তিলক নগর এলাকায় রাস্তার ধারে বাবার খাবারের দোকান চালাচ্ছে দশ বছরের জসপ্রীত৷ মস্তিষ্কে টিবি-তে আক্রান্ত হয়ে বাবার মৃত্যুর পর অথৈ জলে পড়ে জসপ্রীত এবং তার দিদি৷
ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, ওই ফুড ব্লগারের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই তাকে চিকেন এগ রোল বানিয়ে দিচ্ছে জসপ্রীত৷ রীতিমতো দক্ষ হাতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোল তৈরি করে ফেলে ছোট্ট বালক৷ কথায় কথায় সে জানায়, কিছুদিন আগেই ব্রেন টিবি-তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার বাবার৷ বাবার কাছ থেকেই রোল বানানো শিখেছে সে৷ বাড়িতে জসপ্রীত ছাড়াও তার ১৪ বছরের দিদি রয়েছে৷ তবে জসপ্রীত এবং তার দিদি দিল্লিতে থাকলেও তাদের মা পঞ্জাবেই থাকেন৷ মা কেন তাদের কাছে থাকে না, তা জিজ্ঞেস করলে জসপ্রীত জানায়, ‘মায়ের এখানে থাকতে ভাল লাগে না৷’ দিল্লিতে তাদের কাকা জসপ্রীত এবং তার দিদির খেয়াল রাখেন৷ তবে জসপ্রীত জানিয়েছে, এত কিছুর মধ্যেও নিজের পড়াশোনা চালু রেখেছে সে৷
View this post on Instagram
জসপ্রীতকে নিয়ে এই ভাইরাল ভিডিও দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় আনন্দ মহিন্দ্রা লেখেন, ‘সাহসের আর এক নাম জসপ্রীত৷ কিন্তু ওর পড়াশোনায় অসুবিধা যেন না হয়৷ যতদূর জানতে পেরেছি, জসপ্রীত দিল্লির তিলক নগরে থাকে৷ যদি কারও কাছে ওর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর থাকে, দয়া করে জানান৷ মহিন্দ্রা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে যাতে ওর পড়াশোনা থমকে না যায়, তা নিশ্চিত করার৷’
জসপ্রীতের ওই ভিডিও যিনি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিলেন, সর্বজিৎ সিং নামে ওই ফুড ব্লগারও ভিডিও শ্যুট করতে করতেই বলেন, ‘মাঝেমধ্যে এমন ভিডিও করতে হয়, শব্দ হারিয়ে যায়৷ যসপ্রীত, তুমি চিন্তা করো না, এই ভিডিও দেখে মানুষ তোমাকে প্রচুর ভালবাসা দেবে৷’