কলকাতা: একশো বছর পরে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কথা বলার প্রয়াস। যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা কবিতার হাত ধরে। এক শতাব্দী আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জানতে চেয়েছিলেন এক শতাব্দী পর কে তাঁর কবিতা পড়ছেন। সেই উত্তর তিনি পেলেন সৌরেন্দ্র এবং সৌম্যজিতের সৃষ্টির হাত ধরে। শৈল্পিক নির্মাণে এক সূত্রে বাধা পরলেন রবীন্দ্রনাথ এবং গুলজার। প্রায় এক শতাব্দী পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই কবিতার উত্তর দিলেন বিশিষ্ট কবি -গীতিকার গুলজার। ভিডিওটি প্রকাশিত হল সৌরেন্দ্র এবং সৌম্যজিতের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। উপরি পাওনা রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন: দিল্লির কাছে হারের পরে শাস্তি হল সঞ্জু স্যামসনের, বিপাকে রাজস্থানের অধিনায়ক
কী ভাবে এই ভাবনা তাঁদের মাথায় আসে জানালেন সৌরেন্দ্র এবং সৌম্যজিৎ। তাঁরা বললেন, “আমরা সব সময় আমাদের কল্পনার ক্যানভাস আরো সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করে থাকি। একসঙ্গে গত কুড়ি বছর ধরে আমরা সঙ্গীত নিয়ে নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে চলেছি। লকডাউনের সময়, অজানা মুম্বাইয়ের একটি নম্বর থেকে একটি ফোন আসে এবং ফোনের অপর প্রান্তে একটা ব্যারিটোন ভয়েস ছিল যিনি আমাদের কাজের খোঁজ রাখেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে, কণ্ঠস্বর বুঝতে ভুল হয়নি উনি ছিলেন গুলজার সাহেব। কিছু কমন বন্ধুদের কাছ থেকে আমাদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করেছিলেন। ভালো লাগে শুনে, আমরা একসঙ্গে কিছু তৈরি করতে পারি কিনা এমন একটা খোলা আমন্ত্রণ জানিয়ে যখন ফোন রাখেন।এর পর আসে বেশ কিছু সঙ্গীত, কবিতা আদান প্রদানের পালা, একে অপরকে কিছুটা চিনে নেওয়ার প্রয়াস। ঘটনাক্রমে রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা যা তিনি শতবর্ষ পরে কোনো এক কল্পলোকের কবিকে উদ্যেশ্য করে লিখে গেছেন, যে একশো বছর পরে কে তাঁর কবিতা পড়ছেন। নিজের প্রাসঙ্গিকতা বুঝে নেওয়ার এ এক শৈল্পিক কৌশল মাত্র! আর আমরা ঠিক করেছিলাম গুরুদেব তাঁর রেখে যাওয়া এই প্রশ্নের উত্তর যেন খুঁজে পান গুলজার সাহেবের লেখায়। সেই মোতাবেক গুলজার সাহেবেকে অনুরোধের ফলে জন্ম নেয় একটা নতুন কবিতা। যা তিনি নিজেই পাঠ করেছেন এই ভিডিওতে।যেন শতবর্ষ পরে অন্য এক শতাব্দীর কবি গুরুদেবের সাথে আলোচনা করছেন। উত্তর দিচ্ছেন তাঁর রেখে যাওয়া সব প্রশ্নের।”
আরও পড়ুন: গিনেস বুকে নাম তোলার শখ বলে বেছে নিলেন গাছকে, কী করলেন যুবক?
রবীন্দ্রনাথ নিজেও নিজের কণ্ঠেও কবিতাটি আবৃত্তি করেছিলেন। এর থেকে বোঝা যায় ওঁনার কাছেও কবিতাটার গুরত্ব কতটা ছিল! এই ভিডিওটিতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠের নমুনা ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিক যেন দুই কবির হঠাৎ দেখা কবিতার পথ ধরে। সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ বললেন, “আমরা খুশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে এই ভিডিওটি প্রকাশ করেছি আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে। আশা করি সকল রবীন্দ্রানুরাগী তথা সাহিত্য প্রেমীদের কাছে এই উদ্যোগ সাধুবাদ পাবে।”
অন্য দিকে গুলজার বললেন, “সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ দু’জনই খুব সৃজনশীল। ওদের ইচ্ছা ছিল যদি গুরুদেবের ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’, এই কবিতাটির একটা উত্তর আমি লিখি। কিন্তু আমার এত ক্ষমতা নেই যে গুরুদেবকে উত্তর দেব। তা-ও একটা লেখা লিখেছি যে আজও ওঁর কবিতা আমরা পড়ি, আজও তিনি ভীষণ ভাবে প্রাসঙ্গিক, তাই তো আজও ওঁনার গান, কবিতা আমরা চর্চা করি। হয়তো গুরুদেব এই হোম ওয়ার্কটা করতে দিয়েছিলেন আমায়!”