রাখি খাতুন ও তাঁর মা মঞ্জিলা বিবি

Madhyamik Result 2024: শরীরের ক্যানসারের বাস! মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করে মাধ্যমিক পাশ রাখির

দিনহাটা: কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার মাতালহাট এলাকার ছাত্রী রাখি খাতুন। চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছিল সে। তবে এখানেই শেষ নয়। দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে বাসা বেধে ছিল মারণ রোগ ক্যানসার। কিন্তু তাতেও কিন্তু দমানো যায়নি জ্ঞানদাদেবী গার্লস হাইস্কুলের এই ছাত্রীকে। সেই মারণ রোগকে জয় করে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় উওীর্ণ হয়েছে সে। তার বাবা জহিরুল হক দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক, মা মঞ্জিলা বিবি গৃহবধূ। তার পরিবার ক্যানসারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছরের একটানা লড়াই চালিয়েছে। তারপরে এই সাফল্য যেন তার পরিবারের কাছে এক প্রকার আশীর্বাদ।

রাখি জানায়, তাঁকে মোট ন’টি কেমো দেওয়া হয়েছে। বর্তমান কেমো না চললেও তার চেকআপ চলছে। আর এর মধ্যে থেকেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছিল সে। প্রথম প্রথম যখন কেমো দেওয়া শুরু হয়। তখন প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সে। স্কুল যাওয়া রীতিমতো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় নতুন করে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বা তাঁর। শিক্ষিকারা সবসময় তার পাশে থেকে মনোবল বাড়িয়েছেন। আর তাই চিকিৎসার ফাঁকেই চলতো তার পড়াশোনা। অসুবিধে হলে শিক্ষকরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করতেন।

রাখির মা মঞ্জিলা বিবি জানান, ২০২১ সালে মেয়ের নাকে সমস্যা হলে কোচবিহারে ডাক্তার দেখান। এরপর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানতে পারেন মেয়ের নাকে ক্যানসার হয়েছে। যা শোনার পর তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিন্তু রাখি সব শোনার পরেও ভেঙে পড়েনি। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে রাখিকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্গালোরে। সেখানেই চলে তাঁর কেমো থেরাপি। মেয়ে এতবড় রোগকে জয় করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উওীর্ণ হওয়ায় পরিবারের সকলেই খুশি।

আরও পড়ুন: আইসিএসই-তে দেশের মধ্যে চতুর্থ! ডাক্তার হয়ে গ্রামের মানুষের পাশে থাকতে চান পূর্বাশা

আরও পড়ুন: পরীক্ষার তিন দিন আগে রক্ত নিতে হয়েছিল, তারপরও দুর্দান্ত রেজাল্ট! শুনলে চমকে যাবেন 

জ্ঞানদাদেবী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সমর্পিতা চক্রবর্তী জানান, “মারণ রোগকে জয় করে যেভাবে এগিয়ে চলেছে, এই বিষয়টি অন্যদের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।”

ভবিষ্যতে রাখি একজন সফল চিকিৎসক হয়ে উঠতে চায়। এবং সমাজের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়। তবে তাঁর পরবর্তী সময়ের শিক্ষায় এবং চিকিৎসায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পারিবারিক আর্থিক অনটন।

সার্থক পণ্ডিত