Tag Archives: Madhyamik Result 2024

Missing School Student: ফল প্রকাশের আগের দিন থেকে নিখোঁজ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, ১৫ দিন পরেও সন্ধান নেই সায়নের

কোচবিহার: নিখোঁজ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে ১৫ দিন। এখনও খোঁজ মেলেনি খাগড়াবাড়ির মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সায়ন দাসের। ফোন করলে সুইচ অফ বলছে। ফলে প্রবল উদ্বেগে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।

পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই ওই নিখোঁজ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সন্ধানে নেমে পড়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই সায়নের সব বন্ধুদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ‌ও করেছে। কিন্তু বিশেষ একটা এগোনো সম্ভব হয়নি। সেভাবে কোন‌ও কিছু জানতে না পারায় পুলিশ অদ্ভুত এক ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। অন্যদিকে দু’সপ্তাহ পরেও ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নিখোঁজ থাকায় রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: নাতিরা দৌড়ে চলে এলেও পারল না দাদু, বজ্রপাতে ফের কৃষকের মৃত্যু

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিখোঁজ হওয়ার দিন সন্ধে নাগাদ সায়ন বন্ধুদের সঙ্গে সাগরদিঘি চত্বরে ঘুরতে গিয়েছিল। তারপর থেকেই সে নিখোঁজ। চলতি বছরের রামভোলা হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল সে। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়বে বলে পড়াশোনাও শুরু করে দিয়েছিল। তবে আচমকাই মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগের দিন রাতে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকে ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সন্ধান নেই।

সায়নের মামা উজ্জ্বল দাস জানান, সায়নের ছেলেবেলাতেই বাবা মারা গিয়েছিল। তারপর থেকে তার মা বেসরকারি সংস্থায় সেলসম্যানের কাজ করে ছেলেকে বড় করে তোলেন। নিখোঁজ হওয়ার দিন সায়ন দাসের পরনে ছিল ধূসর ও সাদা রঙের বিন্দু ওয়ালা একটি ফুল হাতা গেঞ্জি, নেভি ব্লু কালারের ট্রাকসুট, সাদা জুতো। এছাড়াও একটি কালো চামড়ার পিঠ ব্যাগ ছিল তার সঙ্গে। যদি কোনও ব্যক্তি সায়নের খোঁজ পান তবে অবশ্যই ৯৭৭৫০৮১৯১০ নম্বরে যোগাযোগ করবেন।

সার্থক পণ্ডিত

Madhyamik Result 2024: মারা গেছেন বাবা, চরম আর্থিক-অনটনেও মাধ্যমিকে বিরাট সাফল্য, দীপার পারিবারিক রোজগার শুনলে অবাক হবেন!

নিশিগঞ্জ: কোচবিহার জেলার নিশিগঞ্জ এলাকার এক অভাবী কিন্তু মেধাবী পড়ুয়ার নাম দীপা ভৌমিক। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬২২ নম্বর পেয়ে সকলকে অবাক করেছে দীপা। দীপার বাবা মারা গিয়েছেন তাঁর ক্লাস এইটে পড়ার সময়। তাঁর মা বর্তমান সময় গোটা সংসার পরিচালনা করেন। প্লাইবোর্ডের জন্য পাতি কাটার দিন মজুরির কাজ করেই সংসার চলে তাঁদের। দিনে পঞ্চাশ থেকে একশো টাকা উপার্জন হয়। তাই দিয়েই চলে মা-মেয়ের খাওয়া খরচ। তবে এত অভাবের মাঝেও দীপার এই সাফল্য একরাশ খুশি বয়ে নিয়ে এসেছে তাঁর বাড়িতে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় দীপা। ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে দীপার। তবে এই স্বপ্ন পূরণে প্রধান বাধাই হল আর্থিক যোগান।

দীপা জানায়, “তাঁদের পারিবারিক আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। মায়ের উপার্জনে কোনও রকমে সংসার চলে তাঁদের। খাওয়া খরচটুকু জোগাড় করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। সেই পরিস্থিতিতে পড়াশোনার খরচ যোগানো তাঁর মায়ের পক্ষে চাপের বিষয়। তবে তার ইচ্ছে রয়েছে সায়েন্স বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করে। ভবিষ্যত দিনে একজন ভাল মানের চিকিৎসক হয়ে পরিবারের এবং এলাকার মুখ উজ্জ্বল করা। তবে এই বিষয়ে তার সামনে একটাই বাধা। তা হল আর্থিক যোগান।”

আরও পড়ুন-     শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

দীপার মা শঙ্করী ভৌমিক জানান, “পাতি কেটে সামান্য আয় হয়। সঙ্গে ভাতার এক হাজার টাকা পাই। সেই দিয়ে সংসার চলে না। মেয়ের পড়াশোনার খরচ কোথা থেকে আসবে সেই দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে।” স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে সে। আর তখনই শিক্ষকদের নজরে আসে দীপার করুণ আর্থিক অবস্থার কথা।

আরও পড়ুন-  অসহ্য নরকযন্ত্রণা! বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারতেন না…! দিনে ৩০টি করে ওষুধ খেতেন এই নায়িকা, মনে হয়েছিল জীবনটাই শেষ, তারপর…

দীপার পরিবারের এই আর্থিক অবস্থার কথা জানতে পেরে নিশিময়ী হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এসেছে। দীপা যাতে বিনা খরচে স্কুলে পড়তে পারে সেই উদ্যোগ নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম পোদ্দার। দরিদ্র মেধাবী পড়ুয়ার একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে বইপত্র-সহ বাকি খরচের কিছু দায়িত্ব স্কুলের শিক্ষকরাই সামলাবেন বলে আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। এছাড়া দীপার কয়েকজন গৃহ শিক্ষকও দীপার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

Sarthak Pandit

Madhyamik Result 2024: রাইটার নিয়ে পরীক্ষায় বসে মাধ্যমিকে ৮০% নম্বর দৃষ্টিহীন আফরিদার

মালদহ: দু’চোখেই দেখতে পায় না। রাইটার নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল আফরিদা পারভীন।‌ চমকে দেওয়ার মত ফল করে সকলের মধ্যমণি এখন দৃষ্টিহীন এই মেয়ে। তার এই সাফল্যের সকলেই উচ্ছ্বসিত।

দৃষ্টিহীন হলেও কোন‌ও ব্লাইন্ড স্কুলে পড়েনি আফরিদা পারভীন। সাধারণ স্কুলে আর পাঁচটা পড়ুয়ার সঙ্গে বসেই ক্লাস করেছে সে। সেখান থেকেই মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে আফরিদা। যদিও এই নম্বরে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় আফরিদা। তার বক্তব্য, আরও ভাল পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে প্রত্যাশার থেকে কম নম্বর পেয়েছে। মোট দুজন রাইটারের সাহায্য নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল বলে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: জল উঠছে নদী বাঁধের কাছে, আতঙ্কে সুন্দরবন

মালদহের ইংরেজবাজারের শোভানগর পঞ্চায়েতের মাদিয়া বাধাগাছ এলাকায় বাড়ি আফরিদার। বাবার নাম মহম্মদ পিয়ার আলি। আফরিদা জন্ম থেকেই সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তিহীন। দু’চোখেই দেখতে পায় না। তার কাছে গোটা জগৎটাই অন্ধকারময়। তাই চোখের অন্ধকার দূর করতে শিক্ষার আলোকে আলোকিত হয়ে ওঠার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে সে অধ্যাপিকা হতে চায়। যার প্রথম ধাপ হিসেবে এবছর শোভানগর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস বলেন, আমাদের স্কুলের গর্ব আফরিদা। শুধুমাত্র দৃষ্টিহীন নয়, অন্যান্য বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদেরও অনুপ্রেরণা। পড়াশোনার পাশাপাশি ভাল আবৃত্তি করে। বাবা মা তাকে স্কুলে দিয়ে যেত নিয়মিত।

দুজন রাইটারের সাহায্য নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। আফরিদা নজরকাড়া ফল করে। তার ঝুলিতে আসে ৫৬৪ নম্বর। আফরিদা ছোট বেলায় মঙ্গলবাড়ি আর পি রায় মেমোরিয়াল ব্লাইন্ড স্কুল থেকে পড়াশোনা করে। তারপর শোভানগর হাই স্কুল ভর্তি হয়। সেখান থেকেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়।স্বভাবতই আফরিদার এই ফলাফলে বেজায় খুশি তার পরিবার‌ সহ স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

হরষিত সিংহ

Madhyamik Result 2024: শরীরের ক্যানসারের বাস! মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করে মাধ্যমিক পাশ রাখির

দিনহাটা: কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার মাতালহাট এলাকার ছাত্রী রাখি খাতুন। চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দিয়েছিল সে। তবে এখানেই শেষ নয়। দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে বাসা বেধে ছিল মারণ রোগ ক্যানসার। কিন্তু তাতেও কিন্তু দমানো যায়নি জ্ঞানদাদেবী গার্লস হাইস্কুলের এই ছাত্রীকে। সেই মারণ রোগকে জয় করে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় উওীর্ণ হয়েছে সে। তার বাবা জহিরুল হক দিল্লিতে পরিযায়ী শ্রমিক, মা মঞ্জিলা বিবি গৃহবধূ। তার পরিবার ক্যানসারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছরের একটানা লড়াই চালিয়েছে। তারপরে এই সাফল্য যেন তার পরিবারের কাছে এক প্রকার আশীর্বাদ।

রাখি জানায়, তাঁকে মোট ন’টি কেমো দেওয়া হয়েছে। বর্তমান কেমো না চললেও তার চেকআপ চলছে। আর এর মধ্যে থেকেই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছিল সে। প্রথম প্রথম যখন কেমো দেওয়া শুরু হয়। তখন প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সে। স্কুল যাওয়া রীতিমতো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় নতুন করে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বা তাঁর। শিক্ষিকারা সবসময় তার পাশে থেকে মনোবল বাড়িয়েছেন। আর তাই চিকিৎসার ফাঁকেই চলতো তার পড়াশোনা। অসুবিধে হলে শিক্ষকরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করতেন।

রাখির মা মঞ্জিলা বিবি জানান, ২০২১ সালে মেয়ের নাকে সমস্যা হলে কোচবিহারে ডাক্তার দেখান। এরপর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানতে পারেন মেয়ের নাকে ক্যানসার হয়েছে। যা শোনার পর তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিন্তু রাখি সব শোনার পরেও ভেঙে পড়েনি। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে রাখিকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্গালোরে। সেখানেই চলে তাঁর কেমো থেরাপি। মেয়ে এতবড় রোগকে জয় করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উওীর্ণ হওয়ায় পরিবারের সকলেই খুশি।

আরও পড়ুন: আইসিএসই-তে দেশের মধ্যে চতুর্থ! ডাক্তার হয়ে গ্রামের মানুষের পাশে থাকতে চান পূর্বাশা

আরও পড়ুন: পরীক্ষার তিন দিন আগে রক্ত নিতে হয়েছিল, তারপরও দুর্দান্ত রেজাল্ট! শুনলে চমকে যাবেন 

জ্ঞানদাদেবী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সমর্পিতা চক্রবর্তী জানান, “মারণ রোগকে জয় করে যেভাবে এগিয়ে চলেছে, এই বিষয়টি অন্যদের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।”

ভবিষ্যতে রাখি একজন সফল চিকিৎসক হয়ে উঠতে চায়। এবং সমাজের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে চায়। তবে তাঁর পরবর্তী সময়ের শিক্ষায় এবং চিকিৎসায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পারিবারিক আর্থিক অনটন।

সার্থক পণ্ডিত

Madhyamik Result 2024: মনের জোরই সব, ক্যানসারে বাদ পড়েছে ডানহাত! বাঁ-হাতে লিখেই মাধ্যমিকে বাজিমাত শুভজিতের

শান্তিপুর: আটটি জটিল অস্ত্রোপচারে ডানহাত বাদ গেলেও মনের জোরে মাধ্যমিক দিয়ে সফল ভাবে উত্তীর্ণ শান্তিপুরের শুভজিৎ। শান্তিপুর বাগাছরা স্কুল থেকে ১৮৩ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে অভিজিৎ। ১০ বছর বয়সে সাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় তার ডান হাত।

তারপর কালের নিয়মে দিনের পর দিন অসুস্থ থাকার পর, হঠাৎই হাতে ক্যানসার ধরা পড়ে। পরবর্তীতে চিকিৎসকরা জানান, তার হাত কেটে বাদ দিতে হবে। তারপরেই বেঙ্গালুরুতে গিয়ে সমস্ত চিকিৎসা করেও, আর্থিক ভাবে সচ্ছল না থাকার কারণে ফিরে আসতে হয় বাড়িতে। তারপর কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে বাদ যায় ডান হাত।

আরও পড়ুন: বিশ্বের সেরা স্কুলের তালিকায় রয়েছে ভারতের এই স্কুল, পড়লেই কেউ IPS-কেউ IAS অফিসার! কোন স্কুল এটি জানেন?

ঘটনায় রীতিমতো মনোবল ভেঙে পড়ে ২০২৪-এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভজিৎ বিশ্বাসের। শুভজিতের বাবা কলকাতায় দিনমজুরির কাজ করে। মা লোকের বাড়িতে কাজ করে। কোনও রকমে সংসার চালান তাই আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকার কারণে মাসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে শুভজিৎ।

আরও পড়ুন: গাড়িতে টানা কতক্ষণ AC চললে ১ লিটার তেল পোড়ে জানেন? উত্তর জানলে মাথা ঘুরে যাবে!

তবে দীর্ঘ প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে ২০২৪-এর মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় খুশি শুভজিৎ-সহ তার পরিবার। যদিও শুভজিৎ জানায়, যখন হাত কাটা যায় তারপর মনোবল ভেঙে পড়ে। কীভাবে পরীক্ষা দেবে। তারপর বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অদম্য জেদ চলে আসে শুভজিতের মাথায়। তারপর মনের জোরে বা হাত দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শুভজিৎ।

এরপর দেড় মাসের প্রবল অনুশীলনে বাঁ-হাতে লেখা প্র্যাকটিস করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে নদিয়ার শান্তিপুরের হরিপুর অঞ্চলের শুভজিৎ বিশ্বাস। তবে শুভজিৎ জানায়, সে ভেবেছিল পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে না। তার কারণ জটিল অস্ত্রোপচার তারপর হাত বাদ যাওয়া এবং হাতে সময় কম থাকার কারণে পড়াশোনা একদম হয়নি। পরীক্ষার প্রশ্ন হয়েছিল অনেকটা কঠিন তবুও যেটুকু পড়াশোনা করেছিল তাতে করে সে ভেবেছিল তার পাশ করা খুব কঠিন।

কিন্তু বাড়িতে পরিবারের সহযোগিতা এবং তার মনের অদম্য জেদ তাকে সফলতার পথে অগ্রসর করেছে বলেই দাবি করে শুভজিৎ। তবে রাজ্য সরকারের কাছে কাতর আবেদন শুভজিতের পরিবারের যদি রাজ্য সরকার তার পড়াশোনার জন্য এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে যদি আর্থিক কিংবা কোনও রকম সাহায্য করে তাহলে খুবই উপকৃত হয় শুভজিৎ এবং তার পরিবার।

Mainak Debnath

Madhyamik Result 2024: মাধ্যমিকে ভাল ফল করেও দুশ্চিন্তা! আর্থিক-অনটনই কি স্বপ্নে বাধা হয়ে দাঁড়াবে দিন মজুরের ছেলে তমালের?

জলপাইগুড়ি: দু-চোখে স্বপ্ন অনেক কিন্তু তা সত্ত্বেও পলকে তা ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়! চিন্তা একটাই, অর্থাভাব যেন বইয়ের পাতায় ধুলো জমার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। লক্ষ্য স্থির থাকলে কোনও প্রতিবন্ধকতাই বাধা নয়। নজরকাড়া রেজাল্ট করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ির দিন মজুরের ঘরের ছেলে তমাল দে।

সদ্য প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল। জলপাইগুড়ি জেলার কোনও পড়ুয়াই প্রথম দশের তালিকায় নিজের জায়গা ছিনিয়ে নিতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ জলপাইগুড়িবাসী। কিন্তু, এই মন খারাপের পরিস্থিতিতে এক মুঠো আনন্দ ছড়িয়ে দিয়েছে জলপাইগুড়ির সোনাউল্লা স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তমাল দে। বহু বাঁধা বিপত্তি পেরিয়েও এই বিশেষ সাফল্যে খুশির আমেজ জেলা জুড়ে। বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় তমাল। উচ্চমাধ্যমিকের পর ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে যায়। কিন্তু অর্থাভাব যাতে স্বপ্নপূরণের পথে বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায় এখন চিন্তা তারই। সংবাদমাদ্যমকে সামনে পেয়ে এই চিন্তার কথাই তুলে ধরলেন তমাল।

আরও পড়ুন-অসহ্য নরকযন্ত্রণা! বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারতেন না…! দিনে ৩০টি করে ওষুধ খেতেন এই নায়িকা, মনে হয়েছিল জীবনটাই শেষ, তারপর…

তমালের প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬। জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জালা পাড়া এলাকায় বাড়ি তমালের। ছোটো থেকেই জীবনটা বড্ড অভাবের। বাবা দিন মজুর, মা বাড়ি বাড়ি রান্নার কাজ করে যা আয় করেন তাতে কোনও ক্রমে চলে যায় সংসার। তবুও ছেলের শিক্ষায় কোনও খামতি রাখতে চায় নি তমালের পরিবার।

আরও পড়ুন-    শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

ছেলেও পরিশ্রম অক্ষুণ্ণ রেখে লড়াই চালিয়ে গিয়েছে। ফলত, প্রথম দশে নাম না এলেও জলপাইগুড়ি সোনাউল্লা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির এই তমালের হাত ধরেই এসেছে সাফল্য। মাধ্যমিকে ৬২৬ পেয়ে দিন মুজুরের পরিবারে এখন খুশির হাওয়া। তবুও আর্থিক অনটন উচ্চশিক্ষায় আরও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন তমালের মা।

সুরজিৎ দে

Arjun Singh: প্রচারের ফাঁকেই ফুল-মিষ্টি হাতে কোথায় গেলেন অর্জুন সিং? ছাত্রীরা দেখে অবাক!

উত্তর ২৪ পরগনা: প্রচারের ফাঁকে দুই কৃতি ছাত্রীকে সম্বর্ধনা দিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিং। নৈহাটিতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় হিন্দি মাধ্যমের কৃতি দুই ছাত্রীকে এদিন বাড়িতে গিয়ে সম্বর্ধনা দেন তিনি।

নৈহাটির গৌরীপুর হিন্দি হাই স্কুলের খুশি খটিক এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৫৫৪। এদিন খুশি খটিকের নৈহাটির খাঁ পাড়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে পুষ্পস্তবক ও মিষ্টি দিয়ে অভিনন্দন জানান অর্জুন।

আরও পড়ুন: গরমে শেষপাতে রোজ টক দই খাচ্ছেন? শরীরে এর ফলে কী হয় জানেন? চমকে যাবেন জানলে

একই বিদ্যালয়ের ছাত্রী গৌরীপুর লালদিঘীর বাসিন্দা মেঘা তাঁতির বাড়িতে গিয়েও তাকে অভিনন্দিত করেন বিজেপি প্রার্থী। এদিন অর্জুন সিং বলেন, ‘দু’টি ছাত্রী গরিব ঘরের মেয়ে। তাদেরকে আশীর্বাদ দিলাম। ওরা জীবনে সাফল্য পাক।’

আরও পড়ুন: বিশ্বের সেরা স্কুলের তালিকায় রয়েছে ভারতের এই স্কুল, পড়লেই কেউ IPS-কেউ IAS অফিসার! কোন স্কুল এটি জানেন?

গৌরীপুর হিন্দি হাই স্কুলের সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী খুশি পড়াশোনা করে আইএস হতে চায়। ছাত্রীদের পরিবার ঘরের মেয়ের সাফল্যে ভীষণ খুশি। এদিন এভাবেই জনসংযোগ সারলেন ব্যারাকপুরের এই হেভিওয়েট নেতা।

Rudra Narayan Roy

Madhyamik Result 2024: নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা, মাধ্যমিকে দারুণ সাফল্য, কীভাবে এল সফলতা? জানলে অবাক হবেন

পশ্চিম মেদিনীপুর: বাড়িতে মোট পাঁচজন। বাবা, মা, দিদি ঠাকুমা ও নিজে। রোজগার শুধুমাত্র বাবাই। রোজগারের উপায় বলতে সামান্য বিঘা দেড়েক চাষ জমি আর বাবার গোটা কতক টিউশুনি। এভাবে অভাবকে সঙ্গী করে তার দিদিকে স্নাতক পর্যন্ত পড়িয়েছেন বাবা মা। অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হলেও, নিজের জেদে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বেশ সফলতা এসেছে তার। কখনও তাকে যেতে হয়েছে বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করতে, বাড়িতে এসে অবসন্ন শরীরে সামান্য কয়েক ঘণ্টা পড়ে মাধ্যমিকে ৬২২ নম্বর পেয়ে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে নারায়ণগড় ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রামের এক ছেলে। তার এই সাফল্যে খুশি পরিবার থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারাও।

পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় ব্লকের হোসেনপুর এর কৃতি সন্তান প্রীতম দাস। বাখরাবাদ ভারতী বিদ্যাপীঠ থেকে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। প্রাপ্ত নম্বর ৬২২। সামান্য দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা তার। মাথার উপর বড় দিদি। স্নাতক পড়ে আর অর্থাভাবে পড়াশোনা করেনি। বাবার সামান্য ক’টাকা রোজগারে চলে সংসার। সেভাবে জোটেনি প্রাইভেট টিউশন। স্কুল এবং নিজের প্রচেষ্টায় মাধ্যমিকে বেশ ভাল নম্বর পেয়েছে প্রীতম।

আরও পড়ুন-       শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

প্রীতমের বাবা মদন দাস। সামান্য মাটির বাড়িতে থাকে পাঁচজন। মদন বাবুর সামান্য দেড় বিঘা জমিতে চাষবাস করে যা রোজগার হয় তাতেই চলে সংসার। বাড়িতে বৃদ্ধ মায়ের ওষুধ আনতে গিয়ে সংসার এবং ছেলের পড়াশোনায় তেমন একটা অর্থ সাহায্য করতে পারেন না তিনি। কখনও কখনও আবার বাবাকে মাঠের কাজের সাহায্য করে প্রীতম। শরীরে ক্লান্তি নিয়ে সামান্য কয়েক ঘণ্টা পরে মাধ্যমিকে ভাল রেজাল্ট তার।

আরও পড়ুন-    সদ্যোজাত শিশুর কি AC-তে ঘুমানো উচিত? ৯০% বাবা-মায়েরা এই ভুলটাই করে, এখনই সতর্ক না হলে ঘনঘন অসুস্থ হবে আপনার সন্তান

প্রতিদিন প্রতিকূল অবস্থার সঙ্গে লড়াই, অর্থ কষ্টের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে করতে ক্লান্ত হয়েও মাধ্যমিকে তারই সফলতার খবর আসতেই চোখে জল বাবা-মায়ের। ছোট থেকেই প্রীতম স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার। সম্প্রতি বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। তবে সামনে তার ভবিষ্যতে বাধা অর্থ।

আগামীতে ডাক্তার হয়ে গ্রামীণ এলাকায় সকলের জন্য চিকিৎসা করতে চায় প্রীতম। কিন্তু প্রীতমকে অদূর ভবিষ্যতে পৌঁছে দিতে চাই সকলের সাহায্য। আদৌ কি সফল হবে তার এই স্বপ্ন? গ্রামের মাটির বাড়ি থেকে লাল মোরামের রাস্তা ধরে এক এক করে পৌঁছতে পারবে স্বপ্নের চূড়ায়? সে প্রশ্ন এখন তাদের মনে।

রঞ্জন চন্দ

Madhyamik Result 2024: বাবার কোলে চড়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে যেত বিষ্ণু, মাধ্যমিকে তাক লাগানো সাফল্য, ফলাফল জানলে চমকে যাবেন

পূর্ব বর্ধমান: মনের জোরে পরীক্ষার ভয় আর শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করেছিল আগেই। আর এবার মাধ্যমিকে সফল পূর্ব বর্ধমানের বিশেষ ভাবে সক্ষম সেই পরীক্ষার্থী। ইতিমধ্যেই রাজ্যে প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিক ২০২৪-এর ফলাফল। নিজেদের মেধার জোরে, মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে অনেকেই। যে তালিকায় রয়েছে পূর্ব বর্ধমান একাধিক পরীক্ষার্থীও। তবে পূর্ব বর্ধমান থেকেই সামনে এল আরও এক সফলতার গল্প। বাবার কোলে চড়ে পৌঁছেছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্রে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে, মনের জোরে মাধ্যমিকে সফল বিষ্ণু বসাক।

পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাট শিমলা গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণু বসাক। এই বিষ্ণু বসাক বাবার কোলে চেপে মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেছিল। সে পরীক্ষাও দিয়েছিল নিজের হাতে লিখেই। তবে বিষ্ণু কী উত্তীর্ণ হবে ? এই প্রশ্ন ছিল অনেকের মনেই। তাই ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর বিষ্ণুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায় বিষ্ণু ভালভাবে পাস করেছে।

আরও পড়ুন-      শৈশবে চরম কষ্ট, বাবা দেননি মেয়ের মর্যাদা, পড়াশোনা ছেড়ে চলচ্চিত্রে এসেই বলিউডের এভারগ্রীন তিনি, বলুন তো মায়ের কোলে ‘এই’ শিশুটি কে?

বিষ্ণুর বাবা মা জানিয়েছেন, বিষ্ণু হাঁটতে কিংবা দাঁড়াতে পারে না। ছোট থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সঙ্গী তার। মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় তাকে কোলে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন তার বাবা। আর ফল প্রকাশের পর সেই ছেলের সাফল্যে স্বভাবতই খুশি বিষ্ণুর মা বাবা। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের ফলাফল। ৪২২ নম্বর পেয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে বিষ্ণু বসাক। বিষ্ণু নসরতপুর পারুল ডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। শারীরিক অবস্থার কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারত না সে। বাড়িতে বসেই পড়াশোনা করত বিষ্ণু। এই প্রসঙ্গে বিষ্ণুর বাবা বলেন, “কোলে করে টোটোতে বসিয়ে পরীক্ষা দিতে নিয়ে যেতাম , আবার আমিই নিয়ে আসতাম। ও সবসময় বাড়িতেই বসে থাকত আর বই নিয়েই থাকত। একটা ঘরের মধ্যে বন্দী জীবন কাটিয়ে ও যে এত ভাল রেজাল্ট করেছে আমি অনেক খুশি হয়েছি।”

আরও পড়ুন-   সদ্যোজাত শিশুর কি AC-তে ঘুমানো উচিত? ৯০% বাবা-মায়েরা এই ভুলটাই করে, এখনই সতর্ক না হলে ঘনঘন অসুস্থ হবে আপনার সন্তান

ঘরবন্দী অবস্থার মধ্যেও মনের জোরকে হাতিয়ার করে মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে বিষ্ণু। তার মায়ের কথায়, ছেলে সারাদিন ঘরেই থাকত। নিজের মত করেই পড়াশোনা করত। এই প্রসঙ্গে তার মা আরও জানান, “ও পাস করবে সেটা জানতাম তবে এত ভাল ফলাফল করবে সেটা আশা করিনি। আমাদের খুবই ভাল লাগছে ও যতটা পড়তে চায় আমরা পড়ানোর চেষ্টা করব।”

জানা গিয়েছে, মোট তিনজন গৃহশিক্ষক ছিল বিষ্ণুর। সারাদিন ঘরে বই নিয়েই থাকত সে। অবসরে টিভির পর্দায় চোখ রাখত কখনও কখনও। নিজের মনের জোরে ছেলে এত ভাল ফল করায় কার্যত আপ্লুত তার মা বাবা। বিষ্ণুর বাবা তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত।তার মাও বাড়ির কাজ সামলে হাত লাগান সেই কাজে। আগামী দিনেও বিষ্ণু তার পড়াশোনা চালিয়ে যাবে বলেই জানিয়েছে তার বাবা।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Madhyamik Result 2024: ওরাও পারে! মাধ্যমিকের নজরকাড়া সাফল্য বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের

পশ্চিম মেদিনীপুর: ওরা আর পাঁচজনের মতই স্বাভাবিক। ওরাও পারে। কেউ গান, কেউ নাচ, কেউ আবার বেশ সাবলীলভাবে আবৃত্তিও। এবছর মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য বেশ কয়েকজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রীর। ওদের মধ্যে কেউ ঠিকমত হাঁটতে পারে না, কেউ কথা বলতে পারে না ঠিকভাবে।তবুও নিজের জেদ এবং ইচ্ছেতে মাধ্যমিকে বেশ ভাল নম্বর পেয়ে পাস করেছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন তিন কৃতি ছাত্রী। বড় হয়ে ওদের ইচ্ছে কেউ নার্স হবে, কেউ আবার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলেমেয়েদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। আবার তাদের মধ্যে একজন চায় বড় হয়ে বাচিক শিল্পী এবং গানের প্রশিক্ষিকা হওয়ার।

পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের একটি বেসরকারি আবাসিক হোমে থেকে পড়াশুনা করে নজরকাড়া সাফল্য জুটেছে দাঁতন ব্লকের তিন বিশেষভাবে সক্ষম কৃতি ছাত্রীর। দাঁতন ব্লকের বাসিন্দা হাবিবা খাতুন এবারে মাধ্যমিকে পেয়েছে ৩১৭ নম্বর, কুহেলি দাস পেয়েছে ৩৯৩ এবং পাপিয়া প্রামাণিক পেয়েছে ২৯৪ নম্বর। তাদের এই সাফল্যে খুশি হোম কর্তৃপক্ষ থেকে পরিবারের সকলে। প্রসঙ্গত ছোট থেকেই শারীরিক বিশেষভাবে সক্ষম তারা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হলেও পড়াশোনা, নানান বৃত্তিমূলক কাজের পাশাপাশি নৃত্যেও অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে হাবিবা এবং পাপিয়ার। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের অসাধারণ দক্ষতা নজর কাড়ে সকলের। শুধু তাই নয়, কুহেলি দারুন গান ও আবৃত্তি করে। বড় হয়ে তারাও স্বপ্ন দেখে আর পাঁচজনের মতো। নিজের জেদে আজ সফল মাধ্যমিকে।

আর‌ও পড়ুন: চোখে না দেখেও মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর

সকলে ৮০-৯০ শতাংশ প্রতিবন্ধী। দাঁতনের একটি আবাসিক হোমে থেকে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিয়েছে তারা। হোমের আবাসিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের থেকে শিখেছে পড়াশুনা। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দাঁতন বীণাপাণি গার্লস হাইস্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়ে সফলতা জুটেছে তাদের। বড় হয়ে বিশেষ সক্ষম ছেলেমেয়েদের নিয়ে কাজ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখছে হাবিবা। নিজে একজন চাহিদাসম্পন্ন হয়েও অন্যদের এগিয়ে দিতে চায় সমাজের মূল স্রোতে।

অন্যদিকে পাপিয়া চায় বড় হয়ে নার্স হতে। পড়াশোনা করে মনে ভয় নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে সফলতা পেয়েছে সে। শুধু তাই নয়, কুহেলির গানের গলা শুনলে মুগ্ধ হবেন। আর পাঁচজনের মতো গান, কবিতা আবৃত্তি করতে পারে সে। তার ইচ্ছে গান, কবিতার প্রশিক্ষক হয়ে অন্যদের শিক্ষা দেওয়া। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হলেও যে তারা কোনও অংশে পিছিয়ে নেই, তা একবার প্রমাণ করল এই তিন মেয়ে। পড়াশুনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তাদের। তাদের এই সাফল্যে খুশি হোম কর্তৃপক্ষ। আরও সামনের দিকে এগিয়ে দিতে চায় তারাও।

রঞ্জন চন্দ