পুরুলিয়া: লালমাটি ও সবুজ অরণ্যে ঘেরা পুরুলিয়া জেলা। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনের নিরিখে জেলা পুরুলিয়া অন্যতম। পুরুলিয়া বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অযোধ্যা পাহাড়, শিমুল পলাশে ঘেরা ছোট ছোট টিলা আর আদিবাসীদের গ্রাম। বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই জেলা। তার মধ্যে অন্যতম কাশিপুর রাজবাড়ি। বহু ইতিহাস বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পঞ্চকোট রাজত্বের কাশিপুর রাজবাড়ি। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তৃত অঞ্চল একসময় এই পঞ্চকোট রাজত্বের অন্তর্গত ছিল। একাধিক জনপদ গড়ে উঠেছিল পঞ্চকোট রাজার দানের জমি থেকে।
কাশিপুর রাজবাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯১৬ সালে। মহারাজ জ্যোতি প্রকাশ সিং দেও চিন থেকে রাজমিস্ত্রি এনে এই রাজবাড়ি তৈরি করেছিলেন। টানা ১২ বছর ধরে চলে এই রাজবাড়ি নির্মাণ কাজ। বেলজিয়াম থেকে আনা হয়েছিল বিশাল ঝাড়লণ্ঠন। একেবারেই অন্যরকম রূপে সেজে উঠেছিল গোটা প্যালেস। পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা নীলমণি সিংহ দেওর সুযোগ্য নাতি জ্যোতিপ্রসাদ সিংহ দেওর হাত ধরে বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল পঞ্চকোট রাজবাড়ির।
এ বিষয়ে রাজপরিবারের সদস্য সোমেশ্বর লাল সিংহ দেও বলেন, ”দুই হাজার বছর আগে এই রাজত্ব স্থাপন হয়েছিল। সেই সময় থেকে প্রায় ৭২ পুরুষ ধরে এই রাজত্ব চলছে। তবে বর্তমান রাজবাড়ি এখন রাজাশূন্য। রাজকুমারী এখন ওই রাজবাড়িতে বসবাস করছেন। যাঁরা পুরানো রাজবাড়ি দেখার জন্য উৎসুক থাকেন, তাঁরা পুরুলিয়া বেড়াতে গেলে একবার হলেও ঢুঁ মেরে যান কাশিপুর রাজবাড়ি।
কিন্তু সমস্যা হল এই কাশিপুর রাজবাড়িতে সর্বসাধারণের জন্য দরজা খোলা থাকে না সারাটা বছর। শুধুমাত্র দুর্গাপূজার সময়ই সকলের জন্য এই রাজবাড়ির দরজা খুলে দেওয়া হয়। এ বছরের অন্যান্য সময়ে কাশিপুর রাজবাড়ি শুধুমাত্র বাইরে থেকেই দেখতে পান পর্যটকেরা। তবুও জেলা পুরুলিয়ার অন্যতম ঐতিহ্য আজও বহন করে চলেছে কাশিপুর রাজবাড়ি।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি