৫ জন মজুরের সমান ক্ষমতা আর বাঁচাবে সময়ও; জুগাড় পদ্ধতিতে চাষের অভিনব যন্ত্র বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন কৃষক

৫ জন মজুরের সমান ক্ষমতা আর বাঁচাবে সময়ও; ‘জুগাড়’ পদ্ধতিতে চাষের অভিনব যন্ত্র বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন কৃষক !

ওমপ্রকাশ নিরঞ্জন, ঝাড়খণ্ড: আজকাল কৃষকরা প্রথাগত চাষবাস ছেড়ে আধুনিক চাষবাসের পন্থা অবলম্বন করছেন। আর এর জন্য কৃষকদের নানা ধরনের দামি চাষবাসের সরঞ্জামের প্রয়োজন হবে। কিন্তু দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে সব সময় তা কেনার সামর্থ্য থাকে না দরিদ্র কৃষকদের। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের ছতরার পত্থলগড়া ব্লকের নওয়াডিহ দমৌল পঞ্চায়েতের চৌথার বাসিদ্ধা কৃষক দেবচাঁদ দাঙ্গি ওই জেলার অন্য কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু কীভাবে? আসলে জুগাড়ের মাধ্যমেই তিনি চাষবাস করার যন্ত্র বানিয়ে ফেলেছেন।

আরও পড়ুন– উত্তরবঙ্গে ভারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে, সপ্তাহের শেষে ফের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে !

ওই কৃষক Local 18-এর কাছে নিজেই জানালেন সেই কথা। নিজের যৎসামান্য আয় দিয়েই পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতেন তিনি। তবে হাতে সেরকম অর্থ না থাকায় তিনি কৃষিকাজের দামি যন্ত্রপাতি কিনতে পারেননি। এমতাবস্থায় তিনি জুগাড়ের শরণাপন্ন হন। চাষের জন্য একটি বহুমুখী যন্ত্র প্রস্তুত করে ফেলেছেন। তা-ও আবার পুরনো একটি বাইসাইকেলের ফ্রেম ব্যবহার করে। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, জুগাড়ের মাধ্যমে তৈরি এই চাষের যন্ত্র একাই পাঁচ জন মজুরের কাজ করতে সক্ষম। যা সময় তো বাঁচাবেই। আর তেমন কোনও খরচও হবে না।

আরও পড়ুন- রাশি রাশি কচ্ছপের ভিড়েই লুকিয়ে একটা সাপ, ১০ সেকেন্ডে খুঁজে পেলেই নজরের তারিফ করবে সবাই

দেবচাঁদ দাঙ্গি আরও জানালেন যে, সাইকেলের ফ্রেমের সামনের দিকে মাঝারি মাপের একটি চাকা লাগিয়ে নিতে হবে। এর পাশাপাশি ক্ষেতে চাষ করার জন্য সাইকেলের ফ্রেমের পিছনের দিকে একটি লাঙল বা কোদাল লাগিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজন অনুসারে এই যন্ত্রাংশগুলি আবার বদলেও নেওয়া যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে আগাছা সাফ করে দেওয়া যাবে। টম্যাটো, লঙ্কা, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য শাকসবজি চাষের জন্য এই যন্ত্র অনায়াসে ব্যবহার করা যাবে। আর এই যন্ত্রটা তৈরি হয়ে যাবে মাত্র ৩ হাজার টাকায়।

কৃষক দেবচাঁদ দাঙ্গির বক্তব্য, তিনি চাষবাসের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না। ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে শুধুমাত্র জৈবসারই ব্যবহার করেন তিনি। কীটনাশকটাও নিজের বাড়িতেই তৈরি করে নেন। এর জন্য নিম, ধুতুরা, আকন্দ এবং অন্যান্য গাছের পাতা মিশিয়ে একটা মিশ্রণ বানিয়ে তা ফসলে স্প্রে করা হয়। তাঁর আরও বক্তব্য, জৈব পদ্ধতিতে চাষবাস সম্পর্কে জানার জন্য আশপাশের জেলা থেকেও কৃষকরা তাঁর কাছে আসছেন।