লোকেশ কুমার দুবে, কনৌজ: মানুষ চিনতে যে এতটা ভুল হবে ভাবতেই পারেননি কনৌজের প্রৌঢ়া। কিন্নরকে মেয়ে সাজিয়ে তাঁর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কিচ্ছুটি। বিয়ের ৫ বছর পর পুরো ঘটনা সামনে এল। এখন মাথায় হাত।
নিজের পুত্রবধূ কিন্নর, এ কথা ভাবতেও পারছেন না ওই প্রৌঢ়া। বাড়িতে তুমুল অশান্তি। বউমা সেজে থাকা কিন্নর ব্যাগপত্তর গুছিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে যৌতুক চেয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মামলাও করেছেন তিনি। বিচার চেয়ে পাল্টা এসপি-র আদালতে আবেদন করেছেন নির্যাতিতা শাশুড়ি।
কনৌজের তিরওয়া কোতোয়ালি এলাকার রাজাইমাউ ঠাকুরাইন গ্রামের ঘটনা। এখানকার বাসিন্দা বানো তাঁর একমাত্র ছেলে শানকে ২০১৮ সালে কানপুর দেহাটের আতিয়ারাইপুর গ্রামের বাসিন্দা সহিদের মেয়ে রোশনির সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই অসুস্থতার অজুহাতে স্বামীর ধারেকাছে ঘেঁষতেন না রোশনি। এভাবেই ৫ বছর কেটে যায়। কিন্তু কয়েকদিন আগে শান জানতে পারেন, তিনি একজন কিন্নরকে বিয়ে করেছেন। গোটা ঘটনার কথা খুলে বলেন মাকে।
মা তো আকাশ থেকে পড়েন। এমন আবার হয় না কি! বাড়িতে নার্স ডেকে বউমাকে পরীক্ষা করান তিনি। তারপরই সামনে আসে আসল সত্য। নার্স জানান, তাঁর বউমা কোনও মেয়ে নন, আসলে কিন্নর। তুমুল অশান্তি শুরু হয় বাড়িতে। কয়েকদিন আগে কিন্নর পুত্রবধূ নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। সেখান থেকেই স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে পণের জন্য হয়রানি করা হচ্ছে বলে মামলা করেন।
স্বামী ও শাশুড়ি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। এরপরই এসপি আদালতে ন্যায়বিচারের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। সত্য উদঘাটনে পুত্রবধূর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আদালতে অনুরোধ করেছেন শাশুড়ি।
বানো বলেন, “আমার পুত্রবধূ কিন্নর। আমি নিজে চোখে দেখেছি। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করছে না বলে এসপি অফিসে যোগাযোগ করেছি। পুত্রবধূর নাম রোশনি। ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু মেয়ে কিন্নর জানতে পেরে আমরা তাঁর বাড়িতে খবর দিই। ওঁরা এসে আমাদের মারধর করে। মেয়েকেও নিয়ে যায়। এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছে। আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। কিন্নরকে মেয়ে সাজিয়ে বিয়ে দিয়েছে। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে”।