অভিষেকের প্রশংসায় সৌমিত্র৷

Saumitra Khan: অভিষেকের প্রশংসা, মুখ খুললেন সুজাতাকে নিয়েও! ভোটে জিতেই বেসুরো সৌমিত্র৷?

বিষ্ণুপুর: কোনওক্রমে মানরক্ষা হয়েছে৷ প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতার বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর কেন্দ্র থেকে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার ভোটে জিতেছেন সৌমিত্র খাঁ৷ যদিও ভোটে জিতলেও নিজের দলের রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন সৌমিত্র৷ বরং বিষ্ণুপুরের জয়ী প্রার্থীর মুখে শোনা গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রশংসা৷ এমন কি, দুর্দান্ত লড়াইয়ের জন্য প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতারও প্রশংসা শোনা গিয়েছে সৌমিত্রের মুখে৷

ভোটে জিতলেও সৌমিত্র খাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, বাংলায় বিজেপির বিপর্যয়ের জন্য দায়ী দলেরই রাজ্য নেতৃত্ব৷ বিজেপি জয়ী প্রার্থীর দাবি, দলের রাজ্য নেতাদের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়ার জেরেই বাংলায় বিজেপির আসন সংখ্যা ১২-তে নেমে এসেছে৷ ক্ষুব্ধ সৌমিত্র বলেন, অনভিজ্ঞ, অযোগ্যদের দায়িত্ব দিলে যা হওয়ার তাই হয়েছে৷ শুধু রাজ্য স্তরের নেতারা নন, জেলা স্তর, ব্লক স্তরের অনেক নেতাদের সঙ্গেই তৃণমূলের বোঝাপড়া হয়েছিল৷ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি সাহায্য না করত তাহলে আমরা এই কটা আসনও পেতাম না৷ আরএসএস না থাকলে আমাদের ভোট তিরিশ শতাংশের নীচে নেমে যেত৷

আরও পড়ুন: প্রচার পর্বে অন্তরালে, ভোট শেষে তিনিই নায়ক! শুধু কংগ্রেস নয়, পুনরুত্থান হল রাহুলেরও

তবে শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা নিয়ে কিছু বলতে চাননি সৌমিত্র৷ তাঁর মতে, ‘শুভেন্দুদা ভাল কাজ করেছেন, চেষ্টাও করেছেন৷ কিন্তু টিম তৈরি করতে পারেননি৷ সঙ্ঘ পরিবার ছিল বলে ভোটটা পেয়েছি৷’

এর পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করে সৌমিত্র বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিস্টেম তৈরি করেছিলেন, সেটা রাজ্যের অনেক বড় নেতাই ধরতে পারেননি৷ এই সিস্টেমের জন্যই ওরা জিতেছে৷ সেই জন্যই তৃণমূল এত ভাল ফল করেছে৷ ওরা যত পারছিল দেরি করছিল, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছিল৷ প্রতিটা লোকসভার দুটো করে বিধানসভা টার্গেট করেছিলেন অভিষেক৷ এটা আমি ধরতে পেরেছিলাম৷ আমাদের এখানে যেমন ওঁর মুখে কোতুলপুরের কথা শুনে আমি পাশের বিধানসভা ইন্দাসে জোর দিয়েছিলাম৷ দেখলাম ওখানে অনেক জায়গায় আমাদের নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছে৷ এটা সব লোকসভাতেই হয়েছে৷ তা না হলে আরামবাগে আমরা হারি না, আরও তিন, চারটি আসন অন্তত বিজেপি জিতত৷’ প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতাও তাঁর বিরুদ্ধে  দারুণ লড়াই করেছেন বলেও মন্তব্য করেন সৌমিত্র৷

শুধু তাই নয়, তৃণমূলের সাফল্যের পিছনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পেরও বিপুল অবদান রয়েছে বলে দাবি করেছেন সৌমিত্র৷ তাঁর দাবি, ‘আমার দলের কর্মীদের স্ত্রীরাও একসঙ্গে দলে দলে গিয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে৷ এটা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফল৷’

২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটেই বিষ্ণুপুর থেকে জিতেছিলেন সৌমিত্র৷ তার পর বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০১৯-এ ওই কেন্দ্র থেকেই জেতেন তিনি৷ তবে এবার ভোটে জিতেই সুকান্তর মুখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশস্তি শুনে আবার নতুন করে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও জল্পনা ছড়াতে বাধ্য৷ মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার ভোটে জেতায় ক্ষুব্ধ সৌমিত্র বলেন, ‘তৃণমূলের থাকলে এখান থেকেই আমি দেড় থেকে দু লক্ষ ভোটে জিততাম৷’ দিলীপ ঘোষের কেন্দ্র কেন বদল করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সৌমিত্র৷