বাঁকুড়া: জয়পুর জঙ্গলে ঢুকলেই যেন একটা শীতল দমকা হাওয়া গায়ে লাগে। আর লাগাটাও স্বাভাবিক, দৈত্যাকার গাছের সারি। ঘন জঙ্গল। অনায়েসেই কাটানো যায় একদিন, দুইদিন। রয়েছে থাকার ব্যবস্থাও। জঙ্গল ছাড়াও রয়েছে ঘুরে দেখার আরও দু’টি স্পেশাল জায়গা। বাঁকুড়ায় পর্যটকদের আগমন হয় বর্ষার শুরুর থেকেই। এই ঢল অব্যাহত থাকে শীতের শেষ পর্যন্ত। বিষ্ণুপুর ঘুরতে এসে জয়পুর জঙ্গল ঘুরে দেখেন বহু পর্যটক। তবে সামান্য জঙ্গল ভাবলে ভুল করছেন।
কলকাতা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টার দূরত্বে রয়েছে এই জঙ্গল। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ব্লকে কিছুটা আবার কিছুটা জয়পুর ব্লকে বিস্তৃত জয়পুর জঙ্গল। হাওড়া থেকে রাত ১২:০৫-এর চক্রধরপুর এক্সপ্রেস ধরে সোজা চলে আসুন বিষ্ণুপুর। ঘন্টা তিনেকের মধ্যেই পৌঁছে যাবেন বিষ্ণুপুর। এবার বিষ্ণুপুর থেকে শেয়ার গাড়ি অথবা আরামবাগ, কোতুলপুরের বাস ধরে চলে আসুন জয়পুর জঙ্গল।
এখানে জয়পুর বিট অফিসের কাছেই রয়েছে একাধিক ইকো রিসোর্ট যেমন, বনলতা বনশ্রী এবং আরণ্যক। কাটাতে পারবেন রাত। রয়েছে নানা সুযোগ সুবিধা যেমন বার্বিকিউ। এছাড়াও, বেশ জঙ্গলের মাঝে রাস্তার ধারেই রয়েছে চা পান করতে করতে আড্ডা দেওয়ার জমজমাট আয়োজন, রয়েছে রেস্টুরেন্ট এবং ব্রেকফাস্ট করার দোকান। কোথাও সাইট সিন না করেই জঙ্গলের মাঝে কাটাতে পারবেন একদিন থেকে দু’দিন।
জঙ্গলে চলে এলেন, রুমও ব্যাবস্থা হয়ে গেল। তাহলে পিঠে ব্যাগ পত্র এবং জলের বোতল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন অ্যাডভেঞ্চার করতে। প্রথমেই চলে আসুন বাসুদেবপুর। জয়পুর জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে এই জায়গা। গুগল লোকেশন নীচে যোগ করে দেওয়া হল।
এই বাসুদেবপুর চাতালে রয়েছে একটি পরিত্যক্ত এয়ারডোম। রয়েছে সুবিশাল রানওয়ে। বিমানঘাঁটিটি অবস্থান করছে একেবারে জঙ্গলের মাঝে। জনমানবহীন একটি পরিত্যক্ত জায়গায়। দেখে মনে হবে অন্য কোথাও চলে এসেছেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে যাবেন এই এয়ার ফিল্ডে। এয়ার ফিল্ডটির নাম বিষ্ণুপুর বাসুদেবপুর এয়ারফিল্ড।
এটি বর্তমানে একটি পরিত্যক্ত এয়ারফিল্ড। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থেকে প্রায় (৬.৬ কিমি) দূরে বাসুদেবপুরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক সামরিক বিমানঘাঁটি। ১৯৪২ সালে তৈরিএবং ১৯৪২-১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ব্যাবহৃত হয় এই এয়ারপোর্টটি। বর্তমানে ভারতীয় বায়ুসেনার অধীনে রয়েছে বিষ্ণুপুর বাসুদেবপুর এয়ারফিল্ড এবং এয়ারফিল্ড সংলগ্ন বেশ কিছুটা জায়গা।
তবে সাবধান, হাতি প্রবণ এই এলাকা তাই চোখ কান খোলা রেখেই চলাচল করতে হবে। বাসুদেবপুর ঢোকার আগে দেখতে পাবেন এই ধরনের ওয়াচ টাওয়ার। ব্যবহার করে হাতিদের ওপর নজর রাখা হত। যদিওওয়াচ টাওয়ারে লাগানো রয়েছে তালা।
যদি আবহাওয়া ভাল থেকে তাহলে তো কথাই নেই। পুরো জায়গাটা এক্সপ্লোর করে পায়ে হেঁটেই অন্ধকার নামার আগে ফিরে যান নিজের রিসর্টে। আবার পরেরদিন বিষ্ণুপুর থেকে ট্রেন ধরে ফিরে যান নিজের ব্যস্ত জীবনে। তবে আপনার সঙ্গে সারাজীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে জয়পুর জঙ্গল, ওয়াচ টাওয়ার এবং এয়ার ফিল্ড।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী
Joypur forest British Aerodromehttps://maps.app.goo.gl/SMoht3TsBtLxq4hf7
বনলতা: https://maps.app.goo.gl/WodWs6hzm5PeSPWWA
Ph no: +91 97321 11701