Bangla News: প্রাচীন বটে কয়েক হাজার প্রাণ! এই গাছই এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রস্থল

হুগলি: একটি গাছ কয়েক হাজার প্রাণের বাসস্থল। পান্ডুয়ার ইলছোবা দাসপুর পঞ্চায়েতের রামনাথপুর গ্রামের কবরস্থানের বটগাছ বাসস্থল কয়েক হাজার বাদুড়ের। তবে বসবাসের সম্পর্কটা পরিপূরক। কারণ যে হারে বৃক্ষ নিধন হচ্ছে তাতে বটের কোলে আশ্রয় নিয়ে বেঁচে থাকা হাজার বন্য প্রাণীর কারণেই আজও জীবিত এই বট বৃক্ষ। স্থানীয়দের কাছে পরিচিত এই বট গাছ বাদুড়ে বটগাছ নামে।

সন্ধের আজানে বেরিয়ে ভোরের আজানে গাছে ফেরে, গ্রামের মানুষের কাছে আদরের সম্পদ কয়েক হাজার নিশাচর প্রাণী। গাছের প্রতিটি ডালেই ঝুলে থাকতে দেখা যায় কয়েক হাজার বাদুড়কে। কিচিরমিচির শব্দে দিনরাত মুখরিত থাকে এলাকাটি। সন্ধ্যায় বাদুড়ের ছোটাছুটিতে এলাকাটিকে সৃষ্টি হয় সৌন্দর্যের অবর্ণনীয় এক পরিবেশ। আকাশের দিকে তাকালে এদিক সেদিক দেখা যায় উড়ন্ত বাদুড় দল। গোধূলির রক্তিম আকাশে শত শত বাদুড়ের ডানামেলার দৃশ্যে এলাকার প্রকৃতিক সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুনঃ গরমে একেবারে কম টাকায় পাহাড়ে পাড়ি, ঘুরে আসুন মেঘেদের দেশে! বেড়ানোর খুঁটিনাটি এক ক্লিকে

খাদ্যের সন্ধানে উড়ন্ত বিকেলে উড়ে চলা বাদুড়গুলো দেখে মনে হয় আকাশ যেন কালো মেঘে ডাকা। মনোরম এমন দৃশ্য দেখতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে প্রকৃতিপ্রেমীরা। আগে গ্রামের ১০০ মিটার দূরে তেঁতুল গাছে ছিল তাদের বাসস্থান। পরবর্তীতে গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে রামনাথপুর গ্রামের কবরস্থানে রয়েছে বটগাছ, সেখানেই বসবাস করে কয়েক হাজার নিশাচর প্রাণী। গ্রামের মানুষের কাছে ওরাই এখন গ্রামের সম্পদ।

এলাকার মানুষ ছাড়াও আশেপাশের বহু মানুষ আসে এই গাছ দেখতে। এলাকার মানুষও তাদের কোনও সময় বিরক্ত করে না। তবে কত বছর ধরে বাদুড়রা বসবাস করছে, তা গ্রামের মানুষের কাছে অজানা। একসময় ওই এলাকা পুকুরের পাড়ে ছিল ভাগাড়, তখন শকুনের আনাগোনা ছিল। এখন তা বিলুপ্তর পথে। ভাগাড় বন্ধ হয়ে তৈরি হয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। আর তারই পাশে রয়েছে কবরস্থান সেখানেই বটগাছে ঝুলছে অগণিত বাদুর।

গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার আলি বলেন, আগে গ্রামেরই পুরনো গাছে থাকত সেই গাছ ভেঙে যাওয়ার ফলে এখন এখানে এসে থাকে। সন্ধের আজান হলেই ডানা মেলে উড়ে যায় আবার ভোরের আজানে গাছে ফিরে যায়। কয়েক বছর ধরে আমরা এভাবেই তাদেরকে দেখে আসছি। যতদিন গাছ থাকবে ততদিন ওরা এখানেই থাকুক।

স্থানীয় বাসিন্দা আকবর আলি বলেন, কত বছর ধরে এই বাদুর এখানে বসবাস করছে তা গ্রামের অনেকেরই অজানা। তবে অনুমান প্রায় ১০০ বছর ধরে এরা এখানে রয়েছে। এটা গ্রামের একটা প্রাচীন ঐতিহ্য। কেউ স্বীকার করতে এলে গ্রামের মানুষ তাদের বাধা দেয়। এটা গ্রামের মানুষের কাছে একটা সম্পদ। আমাদের সঙ্গেই যুগ যুগ ধরে রয়েছে। ৩০-৩৫ বছর আগে যে সংখ্যায় বাদুড় ছিল তা এখন অনেকটাই কমেছে। আমরা চাই সরকারিভাবে কোনও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।

রাহী হালদার