প্রার্থী ঘোষণা তৃণমূলের

TMC Candidates: রাজ্যের চার বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ তৃণমূলের! দারুণ চমক শাসক দলের, কারা হলেন প্রার্থী?

কলকাতা: আগামী ১০ জুলাই রাজ্যের চার কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্য পেলেও ওই চার কেন্দ্রেই কঠিন পরীক্ষা অপেক্ষা করছে শাসক দল তৃণমূলের জন্য৷ কারণ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ীও, ওই চারটির মধ্যে তিনটি কেন্দ্রেই তৃণমূলের থেকে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে বিজেপি৷ এই পরিস্থিতিতে চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকায় বড় চমক দিল তৃণমূল।

শুক্রবার সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল X হ্যান্ডলে প্রার্থীদের নাম জানানো হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী, মানিকতলা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক সাধন পান্ডের স্ত্রী সুপ্তি পান্ডেকে। সাধনবাবুর মৃত্যুর কারণেই ওই কেন্দ্রে ফের উপনির্বাচন হচ্ছে। অপরদিকে, বাগদা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর। সূত্রের খবর, দলকে বিশ্বজিৎ দাস জানান, তিনি এই ভোটে লড়তে চান না। তাই তাঁর বদলে মধুপর্ণাকে বেছে নিল তৃণমূল শিবির। এদিকে, রায়গঞ্জ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন কৃষ্ণ কল্যাণী। লোকসভা ভোটেও রায়গঞ্জ থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। কিন্তু ওই কেন্দ্রে জয়লাভ করে বিজেপি। এবার বিধানসভা উপনির্বাচনেও তাঁকেই প্রার্থী করল ঘাসফুল শিবির। আর রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকেও প্রার্থী হচ্ছেন মুকুট মণি অধিকারী। লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্র থেকে এই মুকুট মণিকেই প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিনিও বিজেপির জগন্নাথ সরকারের কাছে হেরে যান। বিধানসভা উপনির্বাচনে সেই তাঁর উপরই ভরসা রাখল তৃণমূল। প্রসঙ্গত, কৃষ্ণ কল্যাণী ও মুকুট মণি – দুজনেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন।

আরও পড়ুন: ‘রেকর্ড’ গড়েছে তাঁর ম্যাজিক, এবার নিজের ‘মডেল’ নিয়ে বড় পরিকল্পনা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকাতেও মহিলা প্রার্থী বাছাইয়ে জোর দিল তৃণমূল কংগ্রেস। চার কেন্দ্রের মধ্যে দু’জন মহিলাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিল তৃণমূল।

যে চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে মানিকতলা, রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদা এবং রায়গঞ্জ৷ ২০২১ সালে একমাত্র মানিকতলা কেন্দ্রটিই দখল করেছিল তৃণমূল৷ রায়গঞ্জ, বাগদা এবং রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে জিতেছিল বিজেপি৷ যদিও পরবর্তী সময়ে ওই তিন কেন্দ্রের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, বিশ্বজিৎ দাস এবং মুকুটমণি অধিকারী দল বদল করে তৃণমূলে যোগ দেন৷ এবারের লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণ কল্যাণী, বিশ্বজিৎ দাস এবং মুকুটমণি অধিকারীকে যথাক্রমে রায়গঞ্জ, বনগাঁ এবং রানাঘাট কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করে তৃণমূল৷ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন তাঁরা৷ যদিও শাসক দলের টিকিটে লড়েও তিন কেন্দ্রেই পরাজিত হন তিন জন৷

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী, রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার ৮০০ ভোটে৷ রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে শাসক দলের তুলনায় বিজেপি প্রায় ৩৯ হাজার ৯০০ ভোটে এগিয়ে রয়েছে৷ অন্যদিকে বাগদা কেন্দ্রে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৬০০ ভোটে৷ মানিকতলা কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও ব্যবধান সাড়ে তিন হাজারের সামান্য বেশি৷ স্বভাবতই এই চার কেন্দ্রেই বিধানসভা নির্বাচনে বড় পরীক্ষা হতে চলেছে তৃণমূলের৷ বিজেপির সেখানে লক্ষ্য তিন আসনই ধরে রাখা৷ কারণ ইতিমধ্যেই দলবদলের ফলে বিধানসভায় তাদের শক্তি কমেছে৷ লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর উপনির্বাচনে অন্তত এই তিন কেন্দ্র ধরে রাখা বিজেপির কাছেও কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ বিজেপির দখলে থাকা তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল কাদের প্রার্থী করে, তা নিয়ে শাসক দলের অন্দরেও কৌতূহল তৈরি হয়েছিল৷ এবার সেই কৌতূহলের অবসান হল।