ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস৷

Kanchanjunga Express Accident update: তদন্তের আগেই মৃত চালকের উপর দায়! কাঞ্চনজঙ্ঘা কাণ্ডে তিন প্রশ্নের মুখে রেল

কলকাতা: বার বার দুর্ঘটনা, আর প্রতিবারই সামনে আসে একগুচ্ছ প্রশ্ন৷ অবশ্য ভারতীয় রেলে এই প্রশ্নগুলি নতুন কিছু নয়৷ গত বছর এই জুন মাসেই ওড়িশায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস৷ সেই দুর্ঘটনার পরও রেলের ভূমিকা নিয়ে যা যা প্রশ্ন উঠেছিল, আজ উত্তরঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরও সেই প্রশ্নগুলি সামনে আসছে৷

একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কাঞ্চনজঙ্ঘা কাণ্ডের পর রেলের ভূমিকায় কী কী প্রশ্ন উঠছে-

১) তদন্তের আগেই কী করে জানিয়ে দেওয়া হল মালগাড়ির চালক সিগন্যাল দেখতে পাননি?

২) বারবার বলার পরেও এখনও বদল হল না কোচ? সেই আইসিএফ কোচ দিয়েই চলছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা৷ এখনও সব মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনে কেন নেই এলএইচবি কোচ?

৩) স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থায় কী ভাবে এক লাইনে চলে এল অত্যন্ত দ্রুত গতির আর একটি ট্রেন? রেলের একটি সূত্র বলছে, এ দিন সকাল থেকেই রেল পথের ওই অংশে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ হয়ে যায়৷ এক্ষেত্রে যে অংশে সিগন্যাল খারাপ থাকে, সেখানে ট্রেনের চালকদের লাল সিগন্যাল পেরিয়ে যাওয়ার জন্য হাতে লেখা একটি কাগজ দেন স্টেশন মাস্টাররা৷ রেলের ভাষায় যার নাম টিএ ৯১২৷ সূত্রের খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ওই অনুমতি দিয়েছিলেন রানিপাত্র স্টেশনের স্টেশন মাস্টার৷ প্রশ্ন উঠছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ওই অংশ পেরিয়ে না যাওয়ার আগে মালগাড়ির চালককেও একই লাইনে ট্রেন নিয়ে এগনোর অনুমতি কে দিল?

আরও পড়ুন: সেই জুন, করমণ্ডলের মতোই দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা! দুই বিপর্যয়ে অবাক করা মিল

কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? রেলের প্রাথমিক অনুমান, লাল সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির দুই চালক। সেই কারণেই একই লাইনে এসে যায় সেটি। সাধারণত যে লাইনে এক্সপ্রেস ট্রেন চলে, সেই লাইনে মালগাড়ি চালানো হয় না। মালগাড়িকে দাঁড় করিয়ে পাস করানো হয় এক্সপ্রেস। এ ক্ষেত্রে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনেই ছিল মালগাড়িটি। একই লাইনেই দু’টি ট্রেন পাস করানোর পরিকল্পনা ছিল রেলের। তবে আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা করিয়ে দিয়ে তার পর মালগাড়িকে পাস করানোর কথা।

সেই কারণেই মালগাড়িকে লাল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। রেলের অনুমান, মালগাড়ির চালক ওই সিগন্যাল দেখতে পাননি। ফলে একই লাইনে এসে পড়ে মালগাড়িটি। ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। এ ক্ষেত্রে আরও একটি প্রশ্ন প্রকাশ্যে আসছে। এখন যে কোনও রেল ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকে। ইঞ্জিনের সামনে নির্দিষ্ট কোনও দূরত্বে যদি কোনও ট্রেন বা অন্য কিছু থাকে, তবে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ওই ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়বে। এই প্রযুক্তিকে ‘কবচ’ বলা হয়। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর রেল বোর্ডই স্বীকার করে নিয়েছে, যে রেল পথের উপরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে কবচ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরুই হয়নি৷