পাথরপ্রতিমা: নদী ঘেরা দ্বীপের মানুষগুলোর জীবনটা আতঙ্কে কাটে তবে জলের আতঙ্কে নয়। জীবিকার তাগিদে কখনও সুন্দরবনের গহন জঙ্গলে, আবার কখনও ভয়ঙ্কর নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে নামেন। পাথর প্রতিমা গোসাবা, রায়দিঘি, গোবর্ধন পুর কোস্টাল থানা এলাকার মানুষগুলির জীবন বরাবর পদ্ম পাতার জলের মতো।
২৪ শে জুন সোমবার, বিকেল নাগাদ বাবার সঙ্গে গ্রামের পাশেই জগদ্দল নদীতে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল ১৩ বছরের মানিক ভক্তা। বাবা হুকুম ভক্তা জীবিকার তাগিদে নদীতে কাঁকড়া ধরতে যান। সেদিনও ধনচি জঙ্গলের পাশে যখন কাঁকড়া ধরতে ব্যস্ত ছিলেন,হঠাৎ করে হুকুম পেছনে তাকিয়ে দেখেন তার ছেলে, মানিক নেই। তারপরে লক্ষ্য করেন, মানিককে একটি কুমির টেনে নিয়ে নদীর জলের গভীরে চলে যাচ্ছে।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথর প্রতিমা জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবর্ধন পুর কোস্টাল থানা এলাকার ঘটনা। ঘটনার পরেই খবর যায় গোবর্ধন পুর কোস্টাল থানা এবং বন দফতরে। পুলিশ ও বন দফতর সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার দুপুর পর্যন্ত নদীতে লঞ্চ নিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজে পায়নি।অবশেষে বুধবার বিকেল নাগাদ ঘটনাস্থল থেকে চার কিলোমিটার দূরে,নদীর চরে মানিকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।পুলিশ সেই মৃত দেহ চিহ্নিত করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়।গত দুদিন ধরে সত্যদাস পুর এলাকায় মানিকের বাড়ি এবং পাড়ায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে আসে। তবে এক সময় সুন্দরবনের জঙ্গল বাঁচানোর জন্য নদীতে কুমির ছেড়ে ছিল বন-দফতর।সেই কুমীরের মুখগুলো এক সময় স্টেপল করা থাকত। তবুও কুমীর প্রায়ই কোনও না কোনও মানুষকে টেনে নিয়ে যায়,কেউ মারা যায়। কেউ বা আহত অবস্থায় ফিরে আসে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নদী মাতৃক এলাকার মানুষ গুলোর বরাবরই জীবনে সংকট।পুলিশও বন দফতরের নিষেধ সত্বেও জীবন জীবিকার জন্য তারা বরাবরই ঝুঁকি নিয়ে নদী ও জঙ্গলে যায়। আবার মানিকের মৃত্যু হল। এখানেই কি থেমে থাকবে অঘটন? প্রশ্ন গ্রামবাসীদের।