জামুই, বিহার: অনেক সময় ভালবাসার মানুষের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে অনেকেই ভেঙে পড়েন। কিংবা অনেকে আবার ভালবাসার মানুষটির উপর চরম প্রতিশোধ চরিতার্থ করেন। এমন ঘটনা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু সম্প্রতি এক অন্য ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নিজের শাশুড়ি মায়ের প্রতি শ্বশুরমশাইয়ের বিশ্বাসঘাতকতা সহ্য করতে পারেননি এক জামাই। এর জন্য গোটা গ্রামকে ডেকে পঞ্চায়েত বসিয়েছেন তিনি। আর সেই পঞ্চায়েতে টেনে নিয়ে এসেছেন নিজের শ্বশুরমশাই এবং তাঁর প্রেমিকাকে। আর তাঁদের বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে, তা জানলে যে কেউ অবাক হয়ে যাবেন। বিহারের জামুই জেলার খৈরা থানা এলাকার ঘটনা। রবিবার রাতের দিকে পঞ্চায়েত বসানো হয়েছিল।
সূত্রের খবর, খৈরা থানা এলাকার উমানতারি গ্রামের বাসিন্দা হলেন প্রদীপ সাও। বিগত ১২ বছর ধরে প্রদীপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর শ্যালকের স্ত্রীর সঙ্গে। কেন্ডিহ-তে প্রায়শই নিজের শ্বশুরবাড়িতে যেতেন প্রদীপ। সেখানেই থেকে যেতেন দিনের পর দিন। বিষয়টা একেবারেই ভাল ভাবে নিতে পারতেন না তাঁর স্ত্রী এবং কন্যা। প্রদীপের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা। এরপরেই প্রদীপের জামাই গোটা গ্রামকে নিয়ে একটা পঞ্চায়েত ডাকেন। গোটা বিষয়টি সেখানে শোনা হয়।
পঞ্চায়েতে তলব করা হয় প্রদীপ সাও এবং তাঁর প্রেমিকা সুধা দেবীকেও। গ্রামবাসীরা বলেন যে, ১২ বছর আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রদীপ। এরপরেই নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে শ্যালকের স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন প্রদীপ। এদিকে সুধা দেবীর স্বামী আবার মানসিক ভাবে দুর্বল। গোটা ঘটনার সুযোগ নিয়েই একসঙ্গে থাকতে শুরু করেছিলেন প্রদীপ এবং সুধা।
রবিবার সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত বসিয়ে চার জনেরই কথা শোনা হয়। পঞ্চায়েতে ছিল ৬ জনের কমিটি। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতের তরফে রায় দিয়ে জানানো হয় যে, প্রদীপ সাওকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রদীপের উদ্দেশ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন আর কেন্ডিহ গ্রামে না ফেরেন। তাঁকে নিজের সমস্ত সম্পত্তি স্ত্রী এবং সন্তানদের নামে করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য তাঁকে নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এদিকে উমানতারি গ্রামে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে সুধা দেবীকেও। বর্তমানে এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা।