ডাবলিনঃ মা আর সন্তানের মধ্যে নাড়ির টান। তাঁদের আলাদা করা অসম্ভব। কিন্তু বাবা যদি স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে প্রতারণা করে তাহলে? এই পরিস্থিতিতে মায়ের কী করা উচিত? এমনই অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন এক আইরিশ মহিলা।
ঘটনা শুনলে মনে হবে যেন সিনেমা। ২ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বিদেশে ঘুরতে যান বাবা। তারপর বেপাত্তা। আর ফেরেননি। না মেয়ে ফিরেছে না স্বামী। এদিকে দুজনের জন্যই এক বুক অপেক্ষা নিয়ে বসে রয়েছেন মা। কিন্তু দিন যায়। মেয়ে আর ফেরে না। অবশেষে ১৭ বছর পর মেয়ের দেখা পেলেন তিনি।
ডেইলি স্টার নিউজ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আয়ারল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ও’লেরি বিয়ে করেন সৌদি আরবের এক যুবককে। সংসার পাতেন কর্কে। তাঁদের এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান হয়। মেয়ের বয়স তখন ২ বছর। ভিক্টোরিয়ার স্বামী বলেন, মেয়েকে নিজের দেশ দেখাতে নিয়ে যাবেন। এরপর মেয়েকে নিয়ে যান সৌদি আরব। বলে যান, কয়েকদিনের মধ্যেই ফিরবেন। কিন্তু সেই কয়েকদিন আর আসেনি। শেষ পর্যন্ত আইনের দ্বারস্থ হন ভিক্টোরিয়া। শুরু হয় আইনি লড়াই। তারপর কেটে গিয়েছে ১৭ বছর। কয়েক সপ্তাহ আগে মেয়েকে কাছে পেয়েছেন ভিক্টোরিয়া।
মেয়েকে ‘অপহরণ’ করে বাবা: ভিক্টোরিয়ার মেয়ের বয়স এখন ১৯ বছর। ২ বছর বয়সে তাঁকে সৌদি আরবে নিয়ে গিয়ে নিজের পরিবারের কাছে রেখেছিলেন তাঁর বাবা। পরিবার জানিয়ে দিয়েছিল, মেয়ে তাঁদের বংশের। তাই মেয়েকে তাঁরা ফেরাবেন না। ভিক্টোরিয়ার স্বামীও আর আয়ারল্যান্ড ফেরেননি। গত ১৭ বছরে বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে গিয়েছেন ভিক্টোরিয়া। এই নিয়ে সৌদি এবং আয়ারল্যান্ড সরকারের মধ্যেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তার কোনও ফল মেলেনি। তবে আশা ছাড়েননি ভিক্টোরিয়া।
১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন মেয়ে: মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ভিক্টোরিয়ার। হোয়াটসঅ্যাপে কথা হত। দরকারে টাকাপয়সাও পাঠাতেন। ২০২৩ সালে ফতিমা ১৮ বছরে পা দেন। এরপরই আইনের দ্বারস্থ হন তিনি। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে আটকে রাখার অধিকার আর নেই তাঁর বাবার। মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া। এখন ফতিমাকে নিয়ে ফিরে এসেছেন আয়ারল্যান্ডে। মা এবং দাদু-দিদার সঙ্গে আনন্দে দিন কাটাচ্ছে সে।