ইসকন মন্দিরে রথযাত্রার উদ্বোধনে মমতা! মুখ‍্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেলেবরাও, মেলায় কী কী আকর্ষণ থাকছে?

ISKCON Ratha Yatra: ইসকন মন্দিরে রথযাত্রার উদ্বোধনে মমতা! মুখ‍্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেলেবরাও, মেলায় কী কী আকর্ষণ থাকছে?

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ সি, অ্যালবার্ট রোডের ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। সঙ্গে রয়েছেন সেলিব্রেটিরা। বিধায়ক সংসদ থেকে অভিনেতা অভিনেত্রীরা।

উদ্বোধনের পর রথযাত্রা কোন পথে যাবে? কলকাতার কোন কোন রাস্তায় অপেক্ষা করলে আপনি জগন্নাথ দেব থেকে শুরু করে বলরাম ও সুভদ্রা দর্শন করতে পারবেন? ইস্কন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রথযাত্রার পথটি এরকম:

আজ রথযাত্রা রবিবার ৩ সি, আলবার্ট রোডের ইসকন মন্দির থেকে দুপুর ২ টায় শুরু।

আরও পড়ুন: শেষই হতে চায় না…এত লম্বা! ২৫৬ টি কোচ, ৬ টি ইঞ্জিন, দেশের দীর্ঘতম ট্রেনের নাম জানেন কি? রাজধানী বা শতাব্দী নয় কিন্তু

অ্যালবার্ট রোড থেকে এরপর রথচলা শুরু করবে…

হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট -> এ.জে.সি বোস রোড -> শরৎ বোস রোড -> হাজরা রোড -> এস.পি. মুখার্জি রোড -> আশুতোষ মুখার্জি রোড -> চৌরঙ্গী রোড -> এক্সাইড ক্রসিং -> জে.এল. নেহেরু রোড -> আউটট্রাম রোড -> সোজা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড।

উল্টো রথযাত্রা সোমবার, ১৫ জুলাই পার্ক স্ট্রিট মেট্রোর কাছে আউটট্রাম রোড থেকে দুপুর ১২ টায় শুরু হবে।

উল্টো রথের যাত্রা পথ অনেকটা এরকম হবে।

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড -> আউটট্রাম রোড -> বাম দিকে  মোড় -> জে.এল. নেহেরু রোড -> ডোরিনা ক্রসিং -> এস.এন. ব্যানার্জি রোড -> মৌলালী ক্রসিং -> সি. আই.টি. রোড -> সোহরাওয়ার্দী এভিনিউ -> পার্ক সার্কাস ৭-পয়েন্ট ক্রসিং -> শেক্সপিয়ার সরণি -> হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট -> ৩ সি, আলবার্ট রোড ;ইসকন মন্দির।

রথের যাত্রাপথের দুই ধারে যারা থাকবেন তারা জগন্নাথ প্রভুর রথ টানতে পারবেন। তাঁরা ভগবানকে ফুল এবং ফল নিবেদন করতে পারেন।  রথের সাথে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড পর্যন্ত যেতেও পারেন। ব্রিগেডে রথ পৌঁছলে বিনামূল্যে খিঁচুড়ি প্রসাদ পরিবেশন করা হবে।

আরও পড়ুন: গুজরাতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ৬ তলা বাড়ি! ৭ জনের দেহ উদ্ধার, ধ্বংসস্তূপে আটকে অসংখ‍্য, কী কারণে বিপর্যয়?

রথযাত্রা এবং উল্টো রথযাত্রার দিনে, প্রভু জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা মহারাণীর তিনটি রথ ছাড়াও, তিনটি ট্রলি এবং দশটি মিনি-ভ্যান থাকবে যেখানে শিশুরা ভগবান এবং তাঁর ভক্তদের বিভিন্ন লীলা অভিনয় করবে। দক্ষিণ ভারতের একদল শিল্পীরা তিনটি রথের আগে এগিয়ে যাবে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রাকৃতিক জৈব আবির দিয়ে রাস্তার শিল্প আল্পনা তৈরি করবে। প্রতিটি রথের সামনে কয়েক ডজন মৃদঙ্গ ও করতাল সহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কীর্তনীয়ারা কীর্তন পরিবেশন করবেন। এক কিলোমিটার দীর্ঘ শোভাযাত্রার মাঝখানে একটি প্রসাদ বাস থাকবে যা সবাইকে জগন্নাথ প্রসাদ বিতরণ করবে।

ইস্কনের রথগুলির অনেকগুলি অনান্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো।

ভগবান বলদেবের রথ সবচেয়ে লম্বা, ৩৮ ফিট উঁচু, ১৮ ফিট চওড়া এবং প্রায় ৩৬ ফিট লম্বা। হাজার হাজার ওভারহেড তার এবং ট্রাম বৈদ্যুতিক তারের সাথে কলকাতার রাস্তা সংশ্লিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও, রথ তার সংকোচনযোগ্য চাঁদোয়ার কারণে সহজেই এগিয়ে চলে, যা মিনিটের মধ্যেই আবার তার সম্পূর্ণ আকারে প্রসারিত হতে পারে। ভগবান বলদেবের রথের চাকা লোহার এবং এটি ৯০ শতাংশ লোহা দিয়ে তৈরি। ইসকন গত ৪০ বছর ধরে একই রথ ব্যবহার করে আসছে।

সুভদ্রা মহারাণীর রথটি সবচেয়ে ছোট, লোহার চাকা দ্বারা নির্মিত।  এটির উপরেও সংকোচনযোগ্য চাঁদোয়া রয়েছে।

ভগবান জগন্নাথের রথ বলদেবের চেয়ে সামান্য ছোট কিন্তু সুভদ্রার চেয়ে বড়, ভারী কাঠামোকে বহন করার জন্য বোয়িং ৭৭৭-এর চাকা সহ ৩৬ ফুট উঁচু, ১৭ ফুট চওড়া এবং প্রায় ৩০ ফুট লম্বা।

জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার এই তিন রথ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে (পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের বিপরীতে) ৮ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত থাকবে। যেখানে একটি বর্ণাঢ্য মেলার আয়োজন করা হবে। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খিঁচুড়ি প্রসাদ পরিবেশন করা হবে। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্যদল, পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী-সহ ভারত ও বিদেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা প্রতিদিন ভগবানের সামনে নৃত্য পরিবেশন করবেন। এছাড়াও মঞ্চে পরিবেশিত নৃত্য, নাটক, কীর্তন, ছায়ানৃত্য, প্রবচন-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের মোহিত করবে।

আরও পড়ুন: ১ মিনিটের পারিশ্রমিক ১০ কোটি! রজনীকান্তও ফেল? টাকার অঙ্কে সব সুপারস্টারদের ছাপিয়ে গেলেন কোন অভিনেতা? নাম শুনলে বিশ্বাসই হবে না

যেকোন দিন, পার্ক স্ট্রিটের বিপরীতে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিকাল ৪:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত ভগবান জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা -র দর্শন পেতে পারবেন।

৫৩তম কলকাতা রথযাত্রা: ইসকনের রথ কোন পথে?

ইসকনের প্রথম রথযাত্রা সান্ ফ্রান্সিসকোতে ৯ জুলাই, ১৯৬৭-তে শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক আয়োজিত হয়েছিল। আজ, ইসকন ১৫০ টিরও বেশি দেশে ৭০০টিরও বেশী শহরে রথযাত্রার আয়োজন করে। ১৯৭২ সালে ভারতে এবং কলকাতায় প্রথম রথযাত্রা শুরু করেছিলেন৷ তারপর থেকে, কলকাতা রথযাত্রা পুরীর পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা হয়ে উঠেছে, যা ২০ লক্ষেরও বেশী লোকের সমাগম হয়৷