Tag Archives: ratha yatra

পুরীর রথযাত্রা

শ্রীক্ষেত্র বলে পরিচিত ওড়িশার পুরীতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। ব্রহ্ম পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, পদ্ম পুরাণ এবং কপিল সংহিতায় এই রথযাত্রার উল্লেখ আছে। আষাঢ় মাসে শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়াতে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বলা হয় যে এই সময় জগ্ননাথদেব তাঁর মাসির বাড়ি যান। তাঁর বিশাল রথ মাসিমা মন্দির হয়ে গুণ্ডিচা মন্দির পৌঁছয়।

বর্ণনা

ওড়িশার পুরী শহরের বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দির থেকে বছরে একবার তাঁদের নিজ নিজ রথে চড়ে বেরোন জগন্নাথ দেব, বলভদ্র বা বলরাম এবং তাঁদের বোন সুভদ্রা দেবী। ওড়িশি ক্যালেন্ডার মেনে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়াতে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। তিন দেবতার সুসজ্জিত বিশাল রথের রশি টানতে কোটি কোটি ভক্তের সমাগম হয় পুরীতে। পুরীর মন্দির থেকে দুই মাইল উত্তরে গুণ্ডিচা মন্দিরের দিকে যাত্রা করে রথ। গুণ্ডিচা ছিলেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের রানী। জগন্নাথ দেবের রথের নাম হল নন্দীঘোষ। পথে জগন্নাথ দেবের রথ একবার দাঁড়ায় তাঁর মুসলমান ভক্ত সালাবেগার সমাধিস্থানে।

এর পর তিন ভাই বোনের রথ দাঁড়ায় মাসিমা মন্দিরে। সেখানে তাঁদের খেতে দেওয়া হয় পোড়া পিঠে। এটি আসলে এক ধরনের প্যানকেক। বলা হয় জগন্নাথ দেব এই পিঠে খেতে খুব ভালোবাসেন। সাত দিন এখানে থাকার পর রথ আবার মন্দিরে ফিরে আসে।

রথের বিবরণ

একটি বিশেষ গাছের কাঠ দিয়ে প্রতি বছর নতুন করে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার রথ তৈরি হয়। এই রথ বংশ পরম্পরায় যে ছুতাররা বানিয়ে আসছেন তাঁরাই এই গাছ নিয়ে আসেন। গাছের গুঁড়ি নিয়ম মেনে মহানদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় যা পুরীর কাছে সংগ্রহ করে তারপর নিয়ে আসা হয়। রথ তৈরির পর তা সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে মন্দিরের পূর্ব দ্বার বা সিংহদ্বারের কাছে। প্রত্যেক রথে থাকেন নয় জন করে পার্শ্ব দেবতা , একজন করে সারথি এবং চারটে করে ঘোড়া। জগন্নাথ দেবের রথের নাম নন্দীঘোষ, বলভদ্রের রথের নাম তালধ্বজ ও সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন।

চন্দন যাত্রা

বৈশাখ মাসের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ অক্ষয় তৃতীয়াতে রথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পুরীর রাজার প্রাসাদের সামনে এবং পুরী মন্দিরের মূল অফিসের বিপরীতে এই কাজ চলে। বলা হয় এই সময় দেবতাদের গ্রীষ্মকালীন উৎসবও শুরু হয়, তাই একে চন্দন যাত্রাও বলা হয়। চন্দন যাত্রা তিন সপ্তাহ ধরে চলে। জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্নান যাত্রার মাধ্যমে শেষ হয় চন্দন যাত্রা।

সুনা বেশ

গুন্ডিচা মন্দির থেকে দেবতাদের রথগুলি মূল মন্দিরে ফিরে আসার পর, দেবতাদের সোনার অলঙ্কারে সজ্জিত করা হয় এবং রথে পূজা করা হয়। এই উদযাপন সুনা বেশা নামে পরিচিত। পুরীর প্রথম রাজা কপিলেন্দ্র দেব ১৪৬০ সালে যুদ্ধ থেকে বিজয়ী হয়ে ফিরে এসে তিনি জগন্নাথকে সোনা দান করেছিলেন। প্রায় ২০৮ কেজি ওজনের সোনার গয়না দিয়ে দেবতারা সজ্জিত হন।

আন্তর্জাতিক রথযাত্রা

শুধু পুরী নয়, ইস্কনের হরে কৃষ্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৬৮ সাল থেকে ভারতের বাইরে ১০৮টিরও বেশি শহরে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

Head Nodding Doll: মাথা দোলানো পুতুল! রথের বাজারে দেদার বিক্রি

বাঁকুড়া: টুক টুক করে নড়ছে মাথা। রথের এই পুতুল তৈরি হয় কাগজ দিয়ে। দেখতে খুবই মিষ্টি এবং রঙিন। বাচ্চারা মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকে এই পুতুলের দিকে। বাঁকুড়ায় তৈরি হচ্ছে এই পুতুল।

রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়ায় তৈরি হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ পুতুল। হাতি এবং সিংহ। এই দুই পুতুলের চাহিদা বাড়ছে হু হু করে। পুতুলগুলির মৌলিকত্ব রয়েছে। পুতুলগুলি দেখতে যেমন রঙিন ঠিক তেমনই আকর্ষণীয়। এই সময় এই বিশেষ ধরনের পুতুলের চাহিদা তুঙ্গে থাকে।

আরও পড়ুন: রেলের পরপর নোটিশে আতঙ্ক বাড়ছে, বামনগাছির হকারদের মাথায় হাত

উল্টো রথ এবং সোজা রথকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর বাঁকুড়ার চন্দ পরিবার এই বিশেষ ধরনের পুতুল তৈরি করে। কাগজ ও পিচবোর্ড দিয়ে তৈরি হয় দেহ। এরপর হাতি এবং সিংহের মুণ্ডুটি বানানো হয় কাগজ দিয়েই। তারপর বাঁশের ছোট্ট টুকরো দিয়ে মাটি লাগিয়ে দেহের সঙ্গে মাথার সংযোগ স্থাপন করা হয়। রথকে কেন্দ্র করে বাচ্চাদের বিশেষ উৎসাহ থাকে এই পুতুলগুলির প্রতি। পুতুল প্রস্তুত কারক তাপস চন্দ বলেন, মূলত মাটি ভরে বাঁশের পিছনটি ভারি করা হয়, যার জন্য পুতুলগুলির মাথা নড়ে। একমাত্র রথের সময় এই পুতুলগুলি তৈরি করা হয়। সোজা রথের সময় প্রায় ১৫০ পিস বানিয়েছিলাম। উল্টো রথের আগে বানালাম ১০০ পিসের মত।

এই পুতুলগুলিকে অনেক সময় রাখা হয় রথে। তাতে বাড়ে রথের সৌন্দর্য। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন টুকটুক করে মাথা নড়ছে। একটু হাওয়া দিলে কিংবা ধাক্কা দিলেই মাথা নাড়ে পুতুলগুলি। বাঁকুড়া শহরের মৌলাডাঙার চন্দ পরিবার এই বিশেষ ধরনের পুতুল তৈরি করে‌। পরিবারের সকলে মিলে এই পুতুল তৈরির কাজ করেন। এক একটি পুতুল ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Ratha Yatra 2024: পুরীর পর দেশের দ্বিতীয় প্রাচীনতম, ৬২৮ বছরে মাহেশের রথযাত্রা

হুগলি: রবিবার ধুমধাম করে বাংলাজুড়ে পালিত হয়েছে রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে রথযাত্রা গোটা বিশ্বজুড়েই বিখ্যাত। তবে পিছিয়ে নেই বাংলা। এখানকার মাহেশের রথযাত্রার ঐতিহ্য‌ও কম নয়। এবার ৬২৮ বছর পূর্ণ করেছে এখানকার রথযাত্রা। সেই উপলক্ষে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়েছিল।

স্নান যাত্রার পর অবসর কাল কাটিয়ে রবিবার নবযৌবন লাভ করেন প্রভু জগন্নাথ। ধর্মীয় ঐতিহ্য ও প্রথা মেনে গতকাল বন্ধ গর্ভগৃহের দরজা খুলে মন্দির দালানে ভক্তদের দর্শন দেন জগন্নাথ। মাহেশের রথযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকেই এই সমস্ত ধর্মীয় আচার-আচরণ দেখার জন্য ভিড় বাড়তে শুরু করে। যা রথের রশিতে টান পড়ার সময় রেকর্ড জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়।

আরও পড়ুন: দোকান থেকে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন কর্মচারী, ছুটে এসে উড়িয়ে দিল বাইক!

বিকেল পাঁচটা নাগাদ জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে রথে তোলার পর প্রথম রথের রশিতে টান পড়ে। লক্ষাধিক ভক্ত সমাগমের মধ্য দিয়ে ৬২৮ বছরের মাহেশের রথযাত্রা এগিয়ে যায় মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে।

স্বপ্নাদেশে পাওয়া নিমকাঠ দিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি ছয় শতকের বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছে মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে। খিচুড়ি, অন্ন, পায়েস এই তিন নিয়ে মাহেশ। পুরীর পর দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন রথযাত্রা হল হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশ রথযাত্রা। মার্টিন বার্ন কোম্পানির তৈরি লোহার রথের বয়স ১৩৮ বছর। এটাই বর্তমানে ব্যবহৃত হয়। আগে ছিল কাঠের রথ। বর্তমানে এই রথের দেখভাল করেন কলকাতার শ্যামবাজারের বসু পরিবার। ৯ চুড়া বিশিষ্ট এই রথ ৫০ ফুট উচ্চতার। লোহার ১২ টি চাকা রয়েছে।

লক্ষাধিক ভক্ত সমাগমকে সামাল দেওয়ার জন্য রবিবার পুলিশ ও প্রশাসনের তরফ থেকে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। দুপুর থেকেই বন্ধ ছিল জিটি রোডের যান চলাচল। জিটি রোড ধরে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে নিয়ে সুসজ্জিত রথ মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়।

রাহী হালদার

Hooghly News: শ্রী রামকৃষ্ণদেবের পিতা শুরু করেছিলেন! সেই প্রথা আজও চলে আসছে কামারপুকুরে

হুগলি: প্রথা মেনে রথযাত্রার দিন গোঘাট কামারপুকুরের শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ সংলগ্ন মাঠে, ধানের বীজ রোপন করলেন রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ ও সাধু সন্ন্যাসীরা। চিরাচরিত প্রথা মেনেই রামকৃষ্ণ দেবের পিতার জমি যার নাম লক্ষ্মী-জলা তাতেই এই দিন সকালে ধানের বীজ রোপন করেন সন্ন্যাসীরা।

তবে কেন রথের দিন ধানের বীজ বনা হয় ইতিহাস জানিয়েছেন কামারপুকুর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী লোকোত্তরনন্দ জি মহারাজ। তার কথায়, ” শ্রীরামকৃষ্ণের পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় যখন তাঁর দেশের বাড়ি ছেড়ে কামারপুকুরে এসেছিলেন, তখন তার বন্ধু স্থানীয় সুখলাল গোস্বামী লক্ষ্মীজলায় প্রায় দু’বিঘা জমি তাঁকে দান করেছিলেন। ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় প্রতি বছর তার আরাধ্যা দেবতা রঘুবীরকে স্মরণ করে নিজে হাতে লক্ষ্মীজলায় ধান রোপণ শুরু করতেন। তারপর কৃষকরা বাকি ধান রোপন করতেন।

আরও পড়ুন: বাঙালি অভিনেত্রীর কন‍্যা! বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে প্রেম করে পালিয়ে যান, মায়ের কারণেই কেরিয়ার শেষ…চিনতে পারছেন ‘পরদেশী’ নায়িকাকে?

লক্ষ্মীজলায় ধান চাষ করেই সারা বছর সংসার চালাতেন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়। তার তিরোধানের পর থেকে কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠের মহারাজরা সেই প্রথা চালিয়ে আসছে। রবিবার রথের দিন সেই স্মৃতিতেই এই নিয়ম পালন করেন সন্ন্যাসীরা। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁরা প্রতিবছর রথের দিন সকালে আসেন এখানে নতুন ধানের বীজ বপন উৎসব দেখতে।

আরও পড়ুন: শেষই হতে চায় না…এত লম্বা! ২৫৬ টি কোচ, ৬ টি ইঞ্জিন, দেশের দীর্ঘতম ট্রেনের নাম জানেন কি? রাজধানী বা শতাব্দী নয় কিন্তু

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বাবা যা শুরু করেছিলেন তা এখনওপর্যন্ত চলে আসছে কামারপুকুর মাঠে। বিকেলে হবে রথযাত্রা উৎসব। সেখানে রথের দড়িতে টান দেবেন সাধু সন্ন্যাসীদের পাশাপাশি এলাকার সকল মানুষেও। প্রতিবছর এই দিনটি বিশেষ দিন কামারপুকুর গোঘাট এলাকার মানুষের জন্য। শুধু এলাকার নয় জেলার বাইরে থেকেও বহু মানুষ আসেন এই দিন কামারপুকুরে।
রাহী হালদার

ISKCON Ratha Yatra: ইসকন মন্দিরে রথযাত্রার উদ্বোধনে মমতা! মুখ‍্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেলেবরাও, মেলায় কী কী আকর্ষণ থাকছে?

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩ সি, অ্যালবার্ট রোডের ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন। সঙ্গে রয়েছেন সেলিব্রেটিরা। বিধায়ক সংসদ থেকে অভিনেতা অভিনেত্রীরা।

উদ্বোধনের পর রথযাত্রা কোন পথে যাবে? কলকাতার কোন কোন রাস্তায় অপেক্ষা করলে আপনি জগন্নাথ দেব থেকে শুরু করে বলরাম ও সুভদ্রা দর্শন করতে পারবেন? ইস্কন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রথযাত্রার পথটি এরকম:

আজ রথযাত্রা রবিবার ৩ সি, আলবার্ট রোডের ইসকন মন্দির থেকে দুপুর ২ টায় শুরু।

আরও পড়ুন: শেষই হতে চায় না…এত লম্বা! ২৫৬ টি কোচ, ৬ টি ইঞ্জিন, দেশের দীর্ঘতম ট্রেনের নাম জানেন কি? রাজধানী বা শতাব্দী নয় কিন্তু

অ্যালবার্ট রোড থেকে এরপর রথচলা শুরু করবে…

হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট -> এ.জে.সি বোস রোড -> শরৎ বোস রোড -> হাজরা রোড -> এস.পি. মুখার্জি রোড -> আশুতোষ মুখার্জি রোড -> চৌরঙ্গী রোড -> এক্সাইড ক্রসিং -> জে.এল. নেহেরু রোড -> আউটট্রাম রোড -> সোজা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড।

উল্টো রথযাত্রা সোমবার, ১৫ জুলাই পার্ক স্ট্রিট মেট্রোর কাছে আউটট্রাম রোড থেকে দুপুর ১২ টায় শুরু হবে।

উল্টো রথের যাত্রা পথ অনেকটা এরকম হবে।

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড -> আউটট্রাম রোড -> বাম দিকে  মোড় -> জে.এল. নেহেরু রোড -> ডোরিনা ক্রসিং -> এস.এন. ব্যানার্জি রোড -> মৌলালী ক্রসিং -> সি. আই.টি. রোড -> সোহরাওয়ার্দী এভিনিউ -> পার্ক সার্কাস ৭-পয়েন্ট ক্রসিং -> শেক্সপিয়ার সরণি -> হাঙ্গারফোর্ড স্ট্রিট -> ৩ সি, আলবার্ট রোড ;ইসকন মন্দির।

রথের যাত্রাপথের দুই ধারে যারা থাকবেন তারা জগন্নাথ প্রভুর রথ টানতে পারবেন। তাঁরা ভগবানকে ফুল এবং ফল নিবেদন করতে পারেন।  রথের সাথে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড পর্যন্ত যেতেও পারেন। ব্রিগেডে রথ পৌঁছলে বিনামূল্যে খিঁচুড়ি প্রসাদ পরিবেশন করা হবে।

আরও পড়ুন: গুজরাতে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ৬ তলা বাড়ি! ৭ জনের দেহ উদ্ধার, ধ্বংসস্তূপে আটকে অসংখ‍্য, কী কারণে বিপর্যয়?

রথযাত্রা এবং উল্টো রথযাত্রার দিনে, প্রভু জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা মহারাণীর তিনটি রথ ছাড়াও, তিনটি ট্রলি এবং দশটি মিনি-ভ্যান থাকবে যেখানে শিশুরা ভগবান এবং তাঁর ভক্তদের বিভিন্ন লীলা অভিনয় করবে। দক্ষিণ ভারতের একদল শিল্পীরা তিনটি রথের আগে এগিয়ে যাবে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রাকৃতিক জৈব আবির দিয়ে রাস্তার শিল্প আল্পনা তৈরি করবে। প্রতিটি রথের সামনে কয়েক ডজন মৃদঙ্গ ও করতাল সহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কীর্তনীয়ারা কীর্তন পরিবেশন করবেন। এক কিলোমিটার দীর্ঘ শোভাযাত্রার মাঝখানে একটি প্রসাদ বাস থাকবে যা সবাইকে জগন্নাথ প্রসাদ বিতরণ করবে।

ইস্কনের রথগুলির অনেকগুলি অনান্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো।

ভগবান বলদেবের রথ সবচেয়ে লম্বা, ৩৮ ফিট উঁচু, ১৮ ফিট চওড়া এবং প্রায় ৩৬ ফিট লম্বা। হাজার হাজার ওভারহেড তার এবং ট্রাম বৈদ্যুতিক তারের সাথে কলকাতার রাস্তা সংশ্লিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও, রথ তার সংকোচনযোগ্য চাঁদোয়ার কারণে সহজেই এগিয়ে চলে, যা মিনিটের মধ্যেই আবার তার সম্পূর্ণ আকারে প্রসারিত হতে পারে। ভগবান বলদেবের রথের চাকা লোহার এবং এটি ৯০ শতাংশ লোহা দিয়ে তৈরি। ইসকন গত ৪০ বছর ধরে একই রথ ব্যবহার করে আসছে।

সুভদ্রা মহারাণীর রথটি সবচেয়ে ছোট, লোহার চাকা দ্বারা নির্মিত।  এটির উপরেও সংকোচনযোগ্য চাঁদোয়া রয়েছে।

ভগবান জগন্নাথের রথ বলদেবের চেয়ে সামান্য ছোট কিন্তু সুভদ্রার চেয়ে বড়, ভারী কাঠামোকে বহন করার জন্য বোয়িং ৭৭৭-এর চাকা সহ ৩৬ ফুট উঁচু, ১৭ ফুট চওড়া এবং প্রায় ৩০ ফুট লম্বা।

জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার এই তিন রথ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে (পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের বিপরীতে) ৮ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত থাকবে। যেখানে একটি বর্ণাঢ্য মেলার আয়োজন করা হবে। প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত খিঁচুড়ি প্রসাদ পরিবেশন করা হবে। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের নৃত্যদল, পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্যশিল্পী-সহ ভারত ও বিদেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা প্রতিদিন ভগবানের সামনে নৃত্য পরিবেশন করবেন। এছাড়াও মঞ্চে পরিবেশিত নৃত্য, নাটক, কীর্তন, ছায়ানৃত্য, প্রবচন-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের মোহিত করবে।

আরও পড়ুন: ১ মিনিটের পারিশ্রমিক ১০ কোটি! রজনীকান্তও ফেল? টাকার অঙ্কে সব সুপারস্টারদের ছাপিয়ে গেলেন কোন অভিনেতা? নাম শুনলে বিশ্বাসই হবে না

যেকোন দিন, পার্ক স্ট্রিটের বিপরীতে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিকাল ৪:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত ভগবান জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা -র দর্শন পেতে পারবেন।

৫৩তম কলকাতা রথযাত্রা: ইসকনের রথ কোন পথে?

ইসকনের প্রথম রথযাত্রা সান্ ফ্রান্সিসকোতে ৯ জুলাই, ১৯৬৭-তে শ্রীল প্রভুপাদ কর্তৃক আয়োজিত হয়েছিল। আজ, ইসকন ১৫০ টিরও বেশি দেশে ৭০০টিরও বেশী শহরে রথযাত্রার আয়োজন করে। ১৯৭২ সালে ভারতে এবং কলকাতায় প্রথম রথযাত্রা শুরু করেছিলেন৷ তারপর থেকে, কলকাতা রথযাত্রা পুরীর পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা হয়ে উঠেছে, যা ২০ লক্ষেরও বেশী লোকের সমাগম হয়৷

Puri Live: রথযাত্রা দেখুন পুরী থেকে সরাসরি, সাজো সাজো রব জগন্নাথধামে

রবিবার রথযাত্রা। আষাঢ় মাসের শুক্লাপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয় জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার রথযাত্রা পার্বণ।আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে পুরীর বিশ্ব বিখ্যাত রথযাত্রা শুরু হয়। রথযাত্রার জন্য, বলরাম, শ্রী কৃষ্ণ এবং দেবী সুভদ্রার জন্য নিম কাঠ থেকে তিনটি ভিন্ন রথ প্রস্তুত করা হয়। রথযাত্রায় বলরামের রথ সামনের দিকে, দেবী সুভদ্রা মাঝখানে এবং জগন্নাথ শ্রী কৃষ্ণের রথ পিছনে থাকে। বলরাম এর রথকে বলা হয় তালধ্বজ যার রং লাল এবং সবুজ, দেবী সুভদ্রার রথকে দর্পদলান বা পদ্মরথ বলা হয় যা কালো বা নীল রঙের। যেখানে জগন্নাথ দেবের রথকে বলা হয় নন্দীঘোষ বা গরুধ্বজ যা লাল ও হলুদ রঙের।

Ratha Yatra 2024: প্রভু জগন্নাথের রথের চালক প্রাক্তন সরকারি কর্মী! কী বলছেন সেই ‘ড্রাইভার’?

বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরে পিতলের দুটি উল্লেখযোগ্য সুবিশাল রথ রয়েছে। তার মধ্যে একটি রথ হল বাঁকুড়া শহরের পোদ্দার পাড়ার ছোট রথ। মজার বিষয় হল, এই রথটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট। অর্থাৎ সবচেয়ে লম্বা রথগুলির অন্যতম। তবুও কেন এই রথের নাম ছোট রথ? প্রশ্ন উঠতেই পারে। এই প্রশ্নের দুটি উত্তর রয়েছে।

শ্রী শ্রী শ্যামসুন্দর রথ কমিটির কোষাধক্ষ্য জানান, ১৪৬৩ বঙ্গাব্দের ২৫ আষাঢ় রথটি তৈরি হয়েছিল। এর আগে যে রথটি ব্যবহার করা হত সেটি বর্তমানে বাঁকুড়ার মেজিয়াতে রয়েছে। বাঁকুড়া শহরের ব্যাপারীহাটে রয়েছে আরও একটি রথ। যার উচ্চতা পোদ্দার পাড়ার ৩০ ফুটের ছোট রথের চেয়ে অনেকটাই কম, তবুও সেটির নাম বড় রথ। কারণ ব্যাপারীহাটের রথ প্রায় ১১৪ বছরের পুরানো। অর্থাৎ বয়সে ছোট বলেই পিতলের ৩০ ফুট উচ্চতার পোদ্দার পাড়ার রথকে বলা হয় ছোট রথ।

আরও পড়ুন: রানিগঞ্জের ডাকাতি থেকে বিরাট শিক্ষা, বদলে গেল একগুচ্ছ নিয়ম

বাঁকুড়া শহরে রথযাত্রা ঘিরে ইতিমধ্যেই উন্মাদনা দেখা দিতে শুরু করেছে। আসছে রবিবার রথযাত্রার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে সুবিশাল পিতলের রথটি। রবিবার এই রথ টানা দেখতে জমা হবেন হাজার হাজার দর্শনার্থী। তার মধ্যেই বাঁকুড়া শহরের দুটি প্রধান উল্লেখযোগ্য রথের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলক নামকরণ এবং তার ইতিহাস যথেষ্ট আকর্ষণ করে ভক্তদের। ছোট রথ প্রায় এক বছর পর পরিষ্কার করে, কল কব্জা নেড়ে এবং চাকায় তেল লাগিয়ে পরীক্ষা করে নিলেন রথের চালক বাসুদেব যোগী। এর আগে সরকারি অফিসে চাকরি করতেন তিনি, এখন চালাচ্ছেন রথ।

বাঁকুড়া পোদ্দার পাড়ার ছোট রথের আরও একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য আছে। এর রয়েছে স্টিয়ারিং, রয়েছে ব্রেক। তার সঙ্গে সুবিশাল উচ্চতা, যার কারণেই এই রথের চূড়া মানুষের ভিড় ঠেলে দেখা যায় বহু দূর থেকে।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Ratha Yatra 2024: খামখেয়ালি আবহাওয়ার ধাক্কা সামলে রথে ভাল ব্যবসার আশায় নার্সারি মালিকরা

পশ্চিম বর্ধমান: আর কয়েকদিন পরই রথযাত্রা। আসছে রবিবার প্রভু জগন্নাথদেব ভাই-বোনকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ি দেবেন মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রথা অনুযায়ী রথযাত্রার দিন বৃক্ষরোপণ করা হয়, যা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করেন বহু মানুষ। তাই রথ যাত্রার আগে এই সময়টায় নার্সারিগুলিতে দেখা যাচ্ছে প্রস্তুতির ছবি। মন্দা কাটিয়ে ব্যবসা বৃদ্ধির আশায় প্রবল ব্যস্ত নার্সারির কর্মচারীরা থেকে শুরু করে মালিকরা।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনার জন্য দক্ষিণবঙ্গের মানুষকে রীতিমত নাজেহাল হতে হয়েছে। তীব্র গরমের কারণে বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নার্সারির মালিকরা। তাঁরা বলছেন, গরমের জন্য গাছের পরিচর্যা করা রীতিমত কঠিন হয়ে পড়েছিল। কর্মচারীরা রোদে গরমে কাজ করতে পারছিলেন না। তার উপর প্রচন্ড তাপ গাছের ক্ষতি করেছে। সবমিলিয়ে প্রচুর পরিমাণে গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে রথযাত্রার হাত ধরে সেই মন্দা এবার কাটবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা কমাতে উঠে পড়ে লাগল এই জেলা, কী হল জানেন?

পশ্চিম বর্ধমানের বুদবুদের নার্সারির মালিক বিকাশ ঘোষ বলেন, যেখানে প্রত্যেক বছর উৎপাদন অনুযায়ী ১০ শতাংশ গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেখানে এবার ৪০ শতাংশ গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আবার গাছগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। টুকটাক গাছ বিক্রি শুরু হয়েছে। রথযাত্রার দিন যেহেতু বৃক্ষ রোপণের নিয়ম রয়েছে, তাই ওই দিন থেকে ব্যবসা বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন করছেন।

রথযাত্রার দিনটির কথা মাথায় রেখে তুমুল ব্যস্ততা নার্সারিগুলিতে দেখা যাচ্ছে। নার্সারি কর্মচারীরা সমস্ত গাছ তৈরি করে রাখছেন। কারণ এদিন একসঙ্গে বহু ক্রেতা ভিড় জমান। ফল, ফুল সবমিলিয়ে গাছের শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা চলছে। সেগুলিকে তৈরি করা হচ্ছে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। আম, লেবু, পেয়ারা ইত্যাদি ফলের গাছগুলি বেশি সংখ্যায় রাখা হচ্ছে। কারণ এগুলোর চাহিদা থাকে বেশি। পাশাপাশি বিভিন্ন মরশুমি ফুলের গাছও তাঁরা তৈরি রাখছেন।

নয়ন ঘোষ

Ratha Yatra 2024: রথে হাজার হাজার জগন্নাথ পাড়ি দেবে বর্ধমানের এই জায়গা থেকে

পূর্ব বর্ধমান: রথযাত্রা উপলক্ষ্যে বর্ধমানের নতুনগ্রামের শিল্পীদের ব্যস্ততা বর্তমানে তুঙ্গে উঠেছে। সম্পুর্ণ গ্রাম জুড়ে তৈরি হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার জগন্নাথ। নতুনগ্রামের তৈরি এইসকল জগন্নাথ পাড়ি দেবে কলকাতা সহ আরও বিভিন্ন জায়গায়। গ্রামের প্রত্যেক শিল্পী এখন ব্যস্ত জগন্নাথ তৈরিতে। গ্রামে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই শিল্পীরা জগন্নাথ মূর্তি তৈরি করছেন। তবে শুধু পুরুষরা নয়, এই কাজে হাত লাগিয়েছেন বাড়ির বধূরাও।

প্রত্যেক বছর‌ই রথযাত্রা উপলক্ষ্যে হাজার হাজার জগন্নাথ তৈরি হয় নতুনগ্রাম জুড়ে। কাঠের জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা নিয়ে শিল্পীরা রথযাত্রার আগের দিন পাড়ি দেন বিভিন্ন জায়গায়। লক্ষ্মীলাভের আশায় সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন গ্রামের শিল্পীরা। এই প্রসঙ্গে নতুনগ্রামের শিল্পী গৌরাঙ্গ ভাস্কর বলেন, এই সময় আমরা জগন্নাথ তৈরিতে ব্যস্ত থাকি। সব বাড়িতে বাড়িতে এখন জগন্নাথ তৈরি হচ্ছে। গ্রাম জুড়ে প্রায় ১২-১৩ হাজার জগন্নাথ মূর্তি তৈরি হচ্ছে। দমদম, নাগেরবাজার, শ্রীরামপুর, গুপ্তিপাড়া, কালীঘাট সহ যেখানে রথের মেলা হয় আমরা বিভিন্ন জায়গায় এই জগন্নাথ মূর্তি নিয়ে যাই।

আরও পড়ুন: লরির ধাক্কায় উড়ে গেল বাইক চালক! ভয়ঙ্কর কাণ্ড হাওড়ার রাস্তায়

সাধারণত বর্ধমানের নতুনগ্রামে শিল্পীরা কাঠের পেঁচা, গৌর নিতাই, ফার্নিচার সহ বিভিন্ন আধুনিক জিনিসও তৈরি করেন। বর্তমানে ভাল কদর বেড়েছে এই গ্রামের শিল্পীদের। এখনকার তৈরি জিনিস এখন বিদেশেও পাড়ি দেয়। আবার অনেকসময় বিদেশীরাও আসেন বর্ধমানের এই গ্রামে। তবে বছরের অন্যান্য সময় শিল্পীরা বিভিন্ন জিনিস তৈরি করলেও রথযাত্রার আগের এই সময়টায় ব্যস্ত থাকেন জগন্নাথ মূর্তি তৈরিতে। ছোট থেকে বড় নানান মাপের মূর্তি তৈরি করেন শিল্পীরা। এই বিষয়ে নতুনগ্রামের শিল্পী সুব্রত ভাস্কর বলেন, ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকার বেশি দামের জগন্নাথ আমরা বিক্রি করি। এবার আমি ২৫ হাজার টাকার জগন্নাথ মূর্তিও তৈরি করেছি। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা তিনটে মূর্তি আমরা একটা সেট হিসেবেও বিক্রি করি। এই সময় আমাদের বিক্রি ভাল হয়। রথযাত্রার বেশ কয়েক মাস আগে থেকে আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিই।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Rath Yatra 2024: রথযাত্রা উপলক্ষ‍্যে সুদূর পুরী থেকে কোচবিহার এলেন জগন্নাথ দেব!

ইতিমধ্যেই কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় রথের মেলার প্রস্তুতি চলছে। কোচবিহার সদর শহরের মদনমোহন বাড়িতে রথ সংস্কার থেকে শুরু করে চলছে মন্দির সংস্কার। তবে রাজ আমলে শুধুমাত্র সদর শহরের মদনমোহন বাড়িতেই নয়, মাথাভাঙা মহকুমার মদনমোহন বাড়িতেও রথের মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। দীর্ঘ সময় ধরে মদনমোহন বাড়িতে সমারোহের সঙ্গে এই রথের মেলার আয়োজন করা হয়। চলতি বছরেও এই রথের মেলার উপলক্ষে সংস্কার করা হচ্ছে রথকে।

Ratha Yatra: কাঠের রথে জিয়া নস্টাল! আষাড় মাস এলেই হাতছানি দেয় ছোটবেলা

বাঁকুড়া: তাল পাতার ভেঁপু, গ্রীষ্মের দুপুরে আমের আচার কিংবা ২ টাকার পেপসি। এই তিন জিনিসের নাম শুনে বা পড়ে আজ‌ও হয়ত অনেকে ‘নস্টালজিয়া’য় আক্রান্ত হন। নস্টালজিয়ার সঞ্চারের আরও একটি জায়গা তৈরি হচ্ছে বাঁকুড়াতে। ছোট ছোট কাঠের রথ। ৯০-এর দশকের বাচ্চাদের স্বপ্ন ছিল রথযাত্রা দিনে তাদের একটি করে ছোট কাঠের রথ থাকবে। যাতে ঘণ্টা লাগিয়ে মালা পরিয়ে টানতে টানতে ঘোরা হবে গোটা পাড়া।

ধীরে ধীরে যুগ বদলেছে, সময় পাল্টেছে। বাচ্চাদের হাতে এখন অতি বুদ্ধিমান মুঠোফোন। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের বেড়াজালে অনলাইন ক্লাসের চাপে এবং জীবনের রেসে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে সেসব ছেলেবেলা এখন প্রায় হারিয়ে গেছে বললে ভুল হবে না। তবুও রথ যাত্রার আগে যেন আবারও নব্বইয়ের দশকে ফিরে যান বাঁকুড়ার কিছু রথ প্রস্তুতকারকরা। কীসের একটা আশায় তাঁরা কাঠ দিয়ে তৈরি করেন ছোট ছোট রথ। সেরকমই ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়ার মাচানতলায়। কাঠ কেটে রথ তৈরি করতে দেখা গেল এক রথ প্রস্তুতকারককে।

আর‌ও পড়ুন: সেতু নির্মাণে গতি মন্থরতা, যানজটে নাকাল বারুইপুর

বিভিন্ন আকারের রথ রয়েছে। একেবারে ছোট থেকে শুরু করে তিন ফুট উচ্চতা পর্যন্ত। দামও ভিন্ন ভিন্ন। আড়াইশো টাকা থেকে শুরু করে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দামের রথ পাওয়া যাচ্ছে। অর্ডার দিয়েও তৈরি হচ্ছে রথ। প্রখর রোদের মাঝে রথের কাজ করতে দেখে মুখ তুলে তাকাচ্ছেন পথ চলতি মানুষজন। পাশে এসে উজ্জ্বল চোখে কাঠের রথ দেখছে ছোট ছোট বাচ্চারা। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা। এখন শুধুই অপেক্ষা রথ যাত্রার। রথ প্রস্তুতকারক রথীন শীল বলেন, প্রতিবছর এই সময়টাতে বিভিন্ন আকারের রথ বিক্রি হয়। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলেই রথ কিনে নিয়ে যান। এছাড়াও প্রত্যেকের বাড়িতে রয়েছেন গোপাল। সেই কারণেই রথের জনপ্রিয়তা পৌঁছেছে অন্য মাত্রায়।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী