অনুপ পাসওয়ান, কোরবা: ছত্তিশগড়ের কোরবা জেলায় বর্ষাকালে এক ধরণের সবজি বিক্রি হয়। এর চাষ করে না কেউ। বনেবাদাড়ে হয়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা দল বেঁধে জঙ্গলে যান, তারপর সেখান থেকে এনে বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু এর দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবে। বর্ষার মরশুমের প্রথম দিকে এই সবজি ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
স্থানীয় ভাষায় এই সবজির নাম ‘পুটু’। আদতে বিশেষ প্রজাতির মাশরুম। বর্ষাকালে কোরবা ও অন্যান্য জেলায় এই সবজি বিক্রি হয়। ছত্তিশগড় উপজাতীয় সংস্কৃতি এবং খাবারের জন্য বিখ্যাত। এই খাদ্য সম্ভারের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে পুটু। সমগ্র রাজ্যেই অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি বছর এই সময়ে পুটু বিক্রি করতে শহরে আসেন ঈশ্বর দাস। তিনি বলেন, “বর্ষার শুরুতে এই সবজি শালগাছের পাদদেশে জন্মায়। গ্রামবাসীরা শাল গাছের জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে পুটু সংগ্রহ করে।’’
মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন: বনাঞ্চলের মানুষরা প্রতি বছর বর্ষাকালে এই সবজির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। ইদানীং শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যেও পুটুর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ফলে চাহিদা প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। পুটু দেখতে গোলাকার, বাদামি রঙের হয়। উপরে পাতলা খোসা থাকে। ভিতরটা সাদা রঙের। বর্ষার মরশুমের প্রথম দিকে এই সবজি প্রতি কেজি প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। পরে যোগান বাড়লে দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা প্রতি কেজিতে নেমে আসে।
পুটু পুষ্টিগুণে ভরপুর, খেতে খাসির মাংসের মতো: পুটু প্রোটিন এবং ভিটামিনে সমৃদ্ধ। এতে খুব কম ক্যালোরি রয়েছে। এককথায় বললে পুষ্টিগুণে ভরপুর। ভিটামিন ডি, প্রোটিন ফাইবার, সেলেনিয়াম, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্টে ঠাসা। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। স্বাদেও চমৎকার। খেতে অনেকটা মাটনের মতো। তবে অনেকে বলেন, পুটু একবার খেলে মাছ-মাংস খেতে আর মন চাইবে না। তবে পুটু তাজা খেতে হয়। কয়েকদিন ফেলে রাখলে বিষাক্ত হয়ে যায়, সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অসাধারণ স্বাদ আর পুষ্টিগুণের কারণেই প্রতিদিন পুটুর চাহিদা বাড়ছে। অনেক দাম দিয়েও বাড়িতে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ছত্তীশগড়ের মানুষ।