কলকাতার বিরিয়ানিতে মিলেছে ক্ষতিকর উপাদান!

Kolkata Biriyani: কলকাতার বিরিয়ানি ভালবাসেন? সাবধান! ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন আপনিও

কলকাতা: কলকাতার বিরিয়ানি ভালবাসেন? এই বিরিয়ানি থেকেও আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে প্রাণঘাতী ক্যানসার! না, স্ট্রিটফুডের সস্তার বিরিয়ানি শুধু নয়, ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁর বিরিয়ানিতেও মিশছে মেটানিল ইয়েলো। এটি এক ধরনের হলুদ রঙ। যাকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্ষেত্রে অর্থাৎ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার করা হয়। মূলত জামাকাপড় রং করার কাজে লাগে এই উপাদান। তবে এটি মানব শরীরের পক্ষে বিষাক্ত! বিষাক্ত সেই রঙের যৌগ এবার মিলেছে কলকাতার বিরিয়ানিতে।

আরও পড়ুন- ফল না ফলের রস কোনটা বেশি উপকারী? জানলে আর ভুল করবেন না

সারা বছর ধরেই কলকাতা পুরসভা শহর জুড়ে খাবারের মান পরীক্ষা করতে সমীক্ষা চালায়। সম্প্রতি পার্ক সার্কাসের এক নামী রেস্তোরাঁতে অভিযান চালিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। সেখানকার বিরিয়ানির নমুনা এসেছিল কলকাতা পুরসভার ল্যাবরেটরিতে। সেই নমুনাতেই মিলেছে বিষাক্ত মেটানিল ইয়েলো।

শহর জুড়ে এরকম অনেক রেস্তোরাঁর বিরিয়ানির নমুনা নিয়ে এসেছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের অন্তর্গত ফুড সেফটি সেলের আধিকারিকেরা। খাবারে ভেজাল রুখতে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের ফুড সেফটি শাখার ল্যাবরেটরিতে সেই বিরিয়ানি পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট আসার পর চক্ষু চড়কগাছ পুরকর্তাদের।

সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, স্ট্রিট ফুডের দোকানের নয়; রেস্তোরাঁর বিরিয়ানিতেই মেটানিল ইয়েলো বেশি।

বিরিয়ানি রঙিন করতে বিষাক্ত সেই হলুদ রঙ ব্যবহার করেছে রেস্তোরাঁ। পুরকর্তাদের দাবি, এই বিষাক্ত রঙ শরীরে গেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একই সঙ্গে এই রঙের প্রভাবে আরও নানা ধরনের রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। নামী রেস্তোরাঁ এই বিষাক্ত রঙ ব্যবহার করছে দেখে বিস্মিত পুর আধিকারিকরা। পার্ক সার্কাসের বিরিয়ানির দোকানটি শুধু নয়, পার্ক স্ট্রিটের আরও নামী রেস্তোরাঁর খাবারেও মিলেছে ভেজাল। তাদের কাছ থেকেও মোটা টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, পার্ক স্ট্রিট এলাকার মাল্টিকুইজিন রেস্তোরাঁ থেকে পনির টিক্কা মশালা, পনির বাটার মশালা, চিকেন ভর্তা সহ একাধিক রান্না খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রান্নাতেও নিম্ন মানের মশলা ব্যবহার করা হয়েছে বলে সমীক্ষায় ধরা পড়ে। এই ধরনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই মোটা টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পুরসভা সূত্রে খবর, গত কয়েক মাস ধরে বিবাদীবাগ, পার্ক স্ট্রিট, এলগিন রোড, এসপ্ল্যানেড, পার্ক সার্কাস, বাইপাস সংলগ্ন একাধিক রেস্তোরাঁয় পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের খাদ্যসুরক্ষা দল(ফুড সেফটি টিম) অভিযান চালিয়েছে। খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রেস্তরাঁর খাবারে ভেজাল ধরা পড়েছে। বাসি মাংস ব্যবহার করা হয়েছে, এমন প্রমাণও মিলেছে। জানা গিয়েছে, রেস্তোরাঁগুলিতে দীর্ঘ দিন ধরে মাছ, মাংস ফ্রিজে রাখা হয়। যা স্বাস্থ্যের মানদণ্ড অনুযায়ী ঠিক নয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে,  এখনও পর্যন্ত রেস্তরাঁগুলি থেকে তিন লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি রেস্তোরাঁতে অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানেও সাধারণভাবে স্বাস্থ্যের মানদন্ড মেনে কাজ হয়নি বলে সূত্রের খবর। এলাকার রেস্তোরাঁ থেকে ও খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছে কলকাতা পৌরসভা।

খাদ্যে এই ধরনের ভেজাল বা গরমিল থাকলে খাদ্যসুরক্ষা আইন অনুযায়ী এই ধরনের কেসে তিন লক্ষ থেকে দশ লক্ষ টাকার মতো জরিমানা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পুরসভার খাদ্য সুরক্ষা টিম তৈরি হয়েছিল। তখন থেকে এখন পর্যন্ত কুড়ি লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।