ফ্যাস্ট্যাগ কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক: ২০২৪-এর ১ এপ্রিল থেকে ফ্যাস্ট্যাগ সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তন হচ্ছে। ৩১ মার্চের মধ্যে কেওয়াইসি আপডেট না করালে ১ এপ্রিল থেকে সমস্যায় পড়তে হবে। আসলে কেওয়াইসি ছাড়া ফ্যাস্ট্যাগ অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে দেবে ব্যাঙ্ক। ফলে ব্যালেন্স থাকলেও পেমেন্ট করা যাবে না।

বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও গাড়ির উইন্ডশিল্ডে FASTag লাগাতে চাইছেন না অনেকেই, রয়েছে কোনও ভুল ধারণা? জানুন আসল বিষয়

ভারতে সমস্ত চার চাকা গাড়ির ক্ষেত্রে FASTag বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রায় সাড়ে তিন বছর কেটে গিয়েছে। টোল বুথগুলির মাধ্যমে হাইওয়েগুলিতে ট্রাফিকের ব্যবস্থা সাধারণত নির্ঝঞ্ঝাট থাকে। তবে নয়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে ন্যাশনাল হাইওয়েজ অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এনএইচএআই)। যা তারা আশা করেনি। আসলে বহু চার চাকা ব্যবহারকারীই একাধিক কারণে নিজেদের গাড়ির উইন্ডশিল্ডে FASTag লাগাতে চাইছেন না। মূলত এর অন্যতম কারণ হল মিথ বা ভুল ধারণা এবং ভুল তথ্য।

গত বৃহস্পতিবার এনএইচএআই-এর তরফে একটি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে, যেসব ব্যবহারকারী নিজেদের গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনে FASTag লাগাচ্ছেন না, গাড়ি নিয়ে টোল লেনে প্রবেশ করলেই তাঁদের দ্বিগুণ ইউজার ফি দিতে হবে।

এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক News18-এর কাছে বলেন যে, “FASTag লাগালে টোল বুথে লেনে দাঁড়াতে হবে না। বিষয়টা একেবারেই মসৃণ হত। তবে অনেকেই তা লাগাচ্ছেন না। ফলে টোল বুথে সময় লেগে যাচ্ছে বেশি। যার প্রভাব পড়ছে অন্যদের উপরেও।” এদিকে সড়ক পরিবহণ এবং হাইওয়ে মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, টোল প্লাজাগুলিতে অপেক্ষার সময় ৭৩৪ সেকেন্ড থেকে কমে ৪৭ সেকেন্ড হয়ে গিয়েছে। তাহলে কেন মানুষ নিজেদের গাড়িতে FASTag লাগাতে চাইছেন না?

এই প্রসঙ্গে ৫৫ বছর বয়সী মোহন যাদব News18-কে বলেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, কীভাবে এক ব্যক্তি FASTag-এর জেরে প্রতারণার মুখে পড়েছেন! আসলে যে কেউ FASTag স্ক্যান করে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারে। ওই ব্যক্তির কথায়, “আমার গাড়ি রাস্তার পাশে পার্ক করা থাকে। কিন্তু FASTag থাকা অবস্থায় থাকলে তো যে কেউ আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারেন। তাহলে আমি শান্তিতে কীভাবেই বা ঘুমোব!”

তবে এটা জেলে রাখা ভাল যে, FASTag থাকলেই এহেন কোনও কেলেঙ্কারি কিংবা প্রতারণা সম্ভব নয়, এই বিষয়টা স্পষ্ট করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারণ FASTag-এর মাধ্যমে পার্সন-টু-পার্সন ট্রানজ্যাকশন হয় না, বরং তা হয় পার্সন-টু-মার্চেন্ট। এদিকে আবার ২৬ বছর বয়সী এক নব্য-নিযুক্ত সরকারি আধিকারিক নিজের পারিবারিক গাড়ি ব্যবহার করেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি FASTag লাগাবেন না। কারণ টোল ছাড় পাওয়ার জন্য তিনি নিজের অফিসিয়াল কার্ড ব্যবহার করবেন। এটা জেনে রাখা ভাল যে, সমস্ত সরকারি অফিসার এই ছাড় পান না। ছাড়ের তালিকায় থাকেন শুধুমাত্র ম্যাজিস্ট্রেট, ডিফেন্স, নিরাপত্তা এবং দমকল আধিকারিকেরা। নিচু তলার অফিসাররা ডিউটিতে থাকাকালীনই শুধুমাত্র টোল বিনামূল্যে পারাপার করতে পারবেন।

এদিকে আবার FASTag লাগাতে চান না ৪৫ বছর বয়সী পঙ্কজ সিং। তাঁর বক্তব্য, “যদি কেউ আমার গাড়ি চুরি করে, তাহলে আমার FASTag এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস থাকবে তার। সেই ভয়েই আর FASTag লাগাতে চাইনি।” এছাড়া উইন্ডশিল্ড খারাপ হওয়া এবং পথ দুর্ঘটনায় অর্থ খোওয়া যাওয়ার ভয়েই অনেকে FASTag লাগাতে চাইছেন না।
জেনে রাখা ভাল যে, এক সময়ে একটি গাড়িতে শুধুমাত্র একটি FASTag-ই থাকে। FASTag হারিয়ে গেলে, চুরি গেলে অথবা নষ্ট হলে ব্যবহারকারীরা স্টিকার বদলাতে পারবেন।