কলকাতা হাই কোর্ট

Calcutta high court: বাংলাদেশি সন্দেহে দমকলে চাকরি পেয়েও বাদ! সব শুনে বড় নির্দেশ দিল হাইকোর্ট

কলকাতা: বাংলাদেশি নাগরিক, এই অভিযোগে রাজ্য সরকারি চাকরি পেয়েও হারাতে হয়েছিল যুবককে৷ চার সপ্তাহের মধ্যে সেই চাকরিই ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ ভারতীয় পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও কেন রানাঘাটের বাসিন্দা ওই যুবককে বাংলাদেশি বলে দাবি করছে পুলিশ, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়৷

রাজ্য সরকারের দমকল দফতরের ফায়ার অপারেটর পদে চাকরি পান নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা সুদীপ বিশ্বাস৷ লিখিত পরীক্ষার পর ইন্টারভিউয়েও পাস করেন সুদীপ৷ কিন্তু পুলিশ ভেরিফিকেশনে জানানো হয়, সুদীপ বাংলাদেশি নাগরিক৷ যে অভিযোগের এখনও তদন্ত চলছে৷ এর পরই সুদীপের চাকরি আটকে যায়৷

এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে স্যাটে মামলা করেন সুদীপ৷ কিন্তু স্যাট সেই আবেদনে খারিজ করে দেয়৷ এর পরই হাইকোর্টে মামলা করেন সুদীপ৷ এ দিনই মামলাটির শুনানি ছিল বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে৷ গোটা ঘটনা শুনে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, ভারতীয় পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও কীভাবে কাউকে বাংলাদেশি বলা যায়? শুধুমাত্র বাংলাদেশি সন্দেহে কারও চাকরি আটকানো যায় না৷ ভারতীয় প্রমাণে আর কী তথ্য লাগবে?

আরও পড়ুন: ১৯৮৭ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ধর্ষণ! মহিলার অভিযোগ কেন খারিজ করে দিল আদালত?

পাশাপাশি বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় আও প্রশ্ন করেন, সুদীপ বিশ্বাস নামে ওই চাকরিপ্রার্থীর মা এ রাজ্য থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন৷ তার পরেও কীভাবে ওই চাকরিপ্রার্থীকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে৷ বিচারপতি বলেন, ‘বাংলাদেশি সন্দেহে কাউকে সরকারি চাকরি থেকে বিরত রাখা যায়না। বাংলাদেশি প্রমাণের তথ্য কই? চাকরিপ্রার্থী মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক,গ্র্যাজুয়েশন করেছে ভারতে। পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে। নিজের নামে জমি কিনেছে রাজ্যে। মা মাধ্যমিক দিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডে। এরপরেও চাকরিপ্রার্থী বাংলাদেশি কেন হবে? পাসপোর্ট সারা বিশ্বে নাগরিকত্বের পরিচয় বহন করে। তারপরেও একজন চাকরিপ্রার্থী সন্দেহের বশে কেন বাংলাদেশি হয়ে যাবে?’

রাজ্য সরকারের আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পরে ভারতে এসেছে সুদীপের পরিবার। ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী এই সময়ের পরে ভারতে এলে নাগরিকত্ব নিয়ে একাধিক দিক পুলিশকে খতিয়ে দেখতে হয়। রাজ্যের এই যুক্তি শুনে বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশী নাগরিক, তদন্তে পুলিশ প্রমাণ করতে পারলে সুদীপ বিশ্বাসের চাকরি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে