Health Tips: অস্টিওপোরোসিসে প্রাণ নাজেহাল! কেন হয় এই রোগ? কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন, জেনে নিন

বর্তমানে হাড়ের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই অস্টিওপোরোসিসে ভুগছেন। এতে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ছিদ্র দেখা দেয়। শেষ পর্যায়ে শক্তি কমতে কমতে স্পঞ্জের মতো হয়ে যায় হাড়। কী কী লক্ষণ দেখলে রোগী বুঝবেন অস্টিওপোরোসিসে দেখা দিয়েছে? সমস্যার সমাধানে কী কী করতে হবে? সে সবই বিস্তারিত জানালেন হাওড়ার আইএলএস হাসপাতালের কনসালট্যান্ট অর্থোপেডিকস এবং জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট বিশেষজ্ঞ ডাঃ সিদ্ধার্থ গুপ্ত।

Dr Siddharth GuptaConsultant Orthopaedics & Joint Replacement 
ILS Hospitals Howrah
Dr Siddharth Gupta Consultant Orthopaedics & Joint Replacement ILS Hospitals Howrah

অস্টিওপোরোসিস: অস্টিওপরোসিসের কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে – ক) হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া, খ) ভঙ্গুর হাড়, গ) ভাঙার ঝুঁকি বেশি।

স্কোলিওসিস: মেরুদণ্ড ডান বা বাম দিকে বেঁকে যায়। এটা যে কোনও বয়সেই ঘটতে পারে। তবে শৈশব বা কৈশোরে হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

এছাড়াও, যে যে কারণে অস্টিওপোরোসিস হতে পারে: ক) মেরুদণ্ডে কম্প্রেশন ফ্র্যাকচার, খ) ভঙ্গুর কশেরুকা, গ) কাইফোসিস (মেরুদণ্ডের সামনের দিকে বেঁকে যাওয়া)।

স্কোলিওসিসের মতো মেরুদণ্ডের বিকৃতি অনেক সময় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, বিশেষ করে যাঁরা ক) খুব গুরুতর অস্টিওপোরোসিস, খ) একাধিক মেরুদণ্ডের ফ্র্যাকচার, গ) ডিজেনারেটিং ডিস্কের অসুস্থতায় ভুগছেন।

এ থেকে বোঝা যায়, এই ধরণের অস্টিওপোরোসিসের কারণে মেরুদণ্ড দুর্বল হয়ে যায়। ধীরে ধীরে স্কোলিওসিসের মতো আকারে বিকৃতি ঘটতে থাকে। অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে জীবনযাত্রার ধরন বদলাতে হবে। সঙ্গে মেনে চলতে হবে নির্দিষ্ট ডায়েট। নিয়মিত যোগব্যায়ামের অনুশীলনও জরুরী।

জীবনযাত্রায় বদল: ক) ধূমপান ছাড়তে হবে। কমাতে হবে অ্যালকোহল সেবন খ) নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলন এবং শারীরিক কার্যকলাপ জরুরী গ) স্বাভাবিক বডি মাস ইনডেক্স ধরে রাখতে হবে। ঘ) অধিক সময় বসে থাকলে চলবে না।

ডায়েট: ক) ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন খ) ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। যেমন দুগ্ধজাত দ্রব্য, শাক-সবজি ইত্যাদি গ) সূর্যালোক, সাপ্লিমেন্ট বা খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন: ক্যালসিয়ামের খনি দুধ! হাড় রাখে লোহার মতো মজবুত! আসল কাজটা হয় ঠিক কোন সময়ে খেলে

আরও পড়ুন: শরীর ভাল রাখতে স্প্রাউটস খাচ্ছেন? কীভাবে খেলে মিলবে আসল উপকার, জেনে নিন সহজ টিপস

ব্যায়াম: হাঁটা, দৌড়, লাফানোর মতো শারীরিক ক্রিয়াকলাপ জরুরী খ) ইনকর্পোরেট রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং, যেমন ভারত্তোলন বা ফিজিক্যাল গেম গ) ভারসাম্য এবং নমনীয়তার অনুশীলন। যেমন যোগব্যায়াম বা তাই চি।

এছাড়াও মাথায় রাখতে হবে: ক) পর্যাপ্ত ঘুম এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে খ) পরিমিত ক্যাফেইন গ্রহণ গ) বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি হলে হাড়ের ঘনত্ব পরীক্ষা করতে হবে।

অস্টিওপোরোসিসে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে হাড় ভাঙার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ইস্ট্রোজেন হ্রাসের কারণে পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। অল্পবয়সী মহিলাদেরও ঝুঁকি থাকে। প্রিমেনোপজাল অস্টিওপোরোসিসের কারণগুলি হল –

জিনগত প্রবণতা: অস্টিওপোরোসিসের পারিবারিক রেকর্ড থাকলে অল্প বয়সে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: হাইপারথাইরয়েডিজম, হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম বা অ্যামেনোরিয়া (ঋতুস্রাবের অনুপস্থিতি) সহ হরমোন রেঞ্জকে প্রভাবিত করে এমন অবস্থাগুলি হাড়ের ঘনত্বকে প্রভাবিত করতে পারে।

ইটিং ডিসঅর্ডার: অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা এবং অন্যান্য ইটিং ডিসঅর্ডারের কারণে কম ওজন এবং অপুষ্টিও হাড়ের সুস্থতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

দীর্ঘস্থায়ী রোগ: রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সিলিয়াক ডিজিজের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার কারণে হাড়ের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

ওষুধ: কর্টিকোস্টেরয়েড, অ্যান্টিকনভালসেন্ট এবং অন্যান্য ওষুধের দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার হাড়কে দুর্বল করতে পারে।

জীবনযাত্রার ধরন: অতিরিক্ত ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অপর্যাপ্ত শারীরিক ক্রিয়াকলাপের কারণে হাড়ের ঘনত্ব কমতে পারে।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব: অনিয়মিত ঋতুস্রাব সহ যে সব মহিলাদের কমবয়সে মেনোপজ আসে তাঁদের ইস্ট্রোজেনের অভাবের কারণে অস্টিওপোরোসিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বডি মাস ইনডেক্স: বডি মাস ইনডেক্স কম হলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।